বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এতে কয়েক শতাধিক মানুষের প্রাণহানী হয়েছে দাবী করছে একটি সংস্থা। দেশটির মানবাধিকার কর্মী ও ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গত রোববার প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে মোখা। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে গাছপালা ও ঘরবাড়ি বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পার্টনার্স রিলিফ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামের এ সাহায্যকারী সংস্থাটি রাখাইন রাজ্যে নিজেদের কার্যক্রম চালায়। তারা জানিয়েছে, রাজধানী সিত্তওয়ের কাছে যেসব রোহিঙ্গা বসবাস করেন সেসব রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে তাদের আশ্রয় ক্যাম্পগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ঘূর্ণিঝড়ের পরই কয়েকশ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী অং কো মো টুইটে বলেছেন, শুধুমাত্র রাজধানী সিত্তওয়েই ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী ছাড়াও তিনি ইউনিটি সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা দায়িত্বেও রয়েছেন।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে জান্তা সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম মিয়ানমার নাও জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে ২৯ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হওয়া বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাসের কারণে রাখাইনের অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাকারী সংস্থা কর্ডিনেশন অব হিউমেনিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ) জানিয়েছে, রাখাইনের রাজধানী সিত্তওয়ে এবং এর আশপাশের অঞ্চলগুলো ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার এ ব্যাপারে এক বিবৃতিতে ইউএসওসিএইচএ বলেছে, প্রাথমিক তথ্য দেখাচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। এছাড়া গৃহযুদ্ধের কারণে যেসব মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন তাদের আরও বেশি সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
ঘূর্ণিঝড়টি যে পথে গিয়েছে সে পথে প্রায় ২ লাখ মানুষ বসবাস করতেন বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। যার মধ্যে রয়েছেন রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীয়। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী দমন-পীড়ন শুরু করলে অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। আবার অনেকে রাখাইনেই থেকে যান। যারা রাখাইনে ছিলেন তাদেরও বেশিরভাগ এখন আশ্রয় কেন্দ্রে বসবাস করেন।