ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এসময় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিনা ওয়ারেন্টে এবং মামলা নেই এমন লোকদেরকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযোগ করে এই ধরনের গ্রেফতার বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বিএনপি নেতারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিনা ওয়ারেন্টে এবং মামলা নেই এমন লোকদেরকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নামে কোনো মামলা ছিল না। মীর সরাফত আলী সপুর বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোলাম মাওলা শাহিনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনিভাবে অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৪ এবং ১৮ সালে নির্বাচনের পূর্বে ঠিক যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল, হয়রানি করা হয়েছিল, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল, গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছিল, ঠিক একইভাবে আজকেও নির্বাচনকে সামনে রেখে একই কৌশল নেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি এই গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। গ্রেফতার করা যাবে না। বলেছি- কারো বিরুদ্ধে যদি ওয়ারেন্ট থাকে ওয়ারেন্ট দেখাবেন, গ্রেফতার করবেন। আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। নেতাকর্মী যাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, রাত তিনটায় বাড়ি থেকে গিয়ে ধরে নিয়ে আসবেন এটা হতে পারে না। এসব বন্ধ করতে হবে।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, বনানীতে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে ৫৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের একজন নেতা হজে যাবেন, তিনি নেতাকর্মীদেরকে খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এই বিষয়টি তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, ২৬ মার্চে কর্মসূচি এবং ২৭ মার্চে গণ সমাবেশের বিষয়ে তাদেরকে অবহিত করেছি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, গত কিছুদিন যাবৎ ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্নভাবে আমাদের নেতা কর্মীদেরকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো জানানোর জন্যই আমরা ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে এসেছি। পাশাপাশি কি কারনে গ্রেফতার হচ্ছে এ বিষয়টিও জানতে চেয়েছি। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি নয় যে তারা কোথাও বসতে পারবে না। কোনো রেস্টুরেন্টে বসতে পারবে না, কোনো সভা করতে পারবে না। ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করেছি এভাবে যেন গ্রেফতার করা না হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার করার পরে বলা হয় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ছিল, কিন্তু ইতোমধ্যে যে সকল নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সকলেই জামিনে রয়েছেন। যে সকল মামলার কথা বলা হচ্ছে সকল মামলার জজকোর্ট, হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়া রয়েছে। তারপরও নেতাকর্মীদের আটক করে পুরনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। সে কারণে তাকে বলেছি ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো একশন না নেওয়া হয়।
সালাম বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে কাবু করার জন্য, ঘরে ঢুকানোর জন্য বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় থানায় ইফতারের আয়োজন করছি। সেখানে যাতে কোনো রকমের ডিস্টার্ব করা না হয় এ ব্যাপারেও অবহিত করা হয়েছে। নির্বিঘ্নে আমরা ইফতার মাহফিলগুলো করতে চাই। এ ব্যাপারে ওনাদের সহযোগিতা চেয়েছি।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।