একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আবারও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই আহ্বান জানান। তবে হিনা রাব্বানি এই আহ্বানে কোনো সাড়া দেননি বলে জানিয়েছেন ড. মোমেন।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই কথা বলেন। এদিন শ্রীলঙ্কা সফর শেষে ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মন্ত্রী।
শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলম্বো সফর করেন ড. মোমেন। সেখানে তার বৈঠক হয় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তারা এখানে গণহত্যা চালায়। গত ৫২ বছরে তাদের এই গণহত্যার বিষয়টি দেশে-বিদেশে আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় পাকিস্তানকে এর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি পাকিস্তানের বিভিন্ন মহল থেকেও এই দাবি বিভিন্ন সময় ওঠেছে। এটাকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে মনে করা হয়। তবে পাকিস্তানের কোনো সরকারই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়নি।
শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (হিনা রাব্বানি) আমাকে বলেছেন, আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চান। আমরা বলেছি, আপনারা যে গণহত্যা করেছেন ১৯৭১ সালে, তার জন্য পাবলিকলি ক্ষমা চান। তবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। কোনো উত্তর দেননি।’
মোমেন বলেন, ‘তিনি (হিনা রাব্বানি) বলেছেন, তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। আমি বলেছি, আমাদের এখানেও সীমাবদ্ধতা আছে।’
পাকিস্তান ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়াতে চায় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান আমাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়াতে চায়। তারা এফওসি করতে চায়। আমি বলেছি, আপনারা অ্যান্টিড্যাম্পিং দিয়ে রাখছেন, তিনি বলেছেন, এটা একটা ভালো পয়েন্ট। আমার কাছে পজিটিভ মনে হয়েছে। শুধু বাংলাদেশের সঙ্গে নয়, সারা ভারতবর্ষের সঙ্গেই তারা (পাকিস্তান) সম্পর্ক বাড়াতে চায়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ঋণের অর্থ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফেরত দেওয়া শুরু করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শ্রীলঙ্কা ধীরে ধীরে ভালো করছে। তারা স্বাভাবিক হয়ে উঠছে।
শ্রীলঙ্কাকে ঋণ পরিশোধে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্দিনে সহায়তা করায় বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা।