• রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
  • Arabic AR Bengali BN English EN French FR German DE
শিরোনামঃ
মেয়র প্রার্থী লিটনকে বিজয়ী করতে ০২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা শেখ হাসিনার কারণেই দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম বাংলাদেশ -পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গৌরীপুরে নাপ্তের আলগীতে জনতার মাঝে আ’লীগের উন্নয়ন প্রচারও নৌকায় ভোট প্রার্থনায় অনু তানোরে আদিবাসী যুবকের লাশ উদ্ধার ইমরান খান এখন গৃহবন্দী! রওশন এরশাদের হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জাপা নেতা হারুনের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতা চাঁদের শাস্তির দাবীতে সুনামগঞ্জে জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের বিক্ষোভ মিছিল জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি, বিদেশিরা নয়: শামীম নয়াপল্টনে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ শর্তসাপেক্ষে রাষ্ট্রদূতরা পুলিশের এসকর্ট সুবিধা পাবেন

সীমান্তে আশ্রিত দেড় হাজার রোহিঙ্গা উধাও

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ / ২০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশ : শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

শূন্য রেখায় আটকেপড়া ৫শ ৫৮টি পরিবারের প্রায় সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় দেড় হাজারের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গার দেখভাল করতেন আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট কমিটি (আইআরসিআরসি)। এই সংস্থার দেওয়া রেশনেই চলত তাদের জীবন।

সম্প্রতি মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন ‘আরসা ও আরএসও’র সংঘাতের জেরে শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গা।

জরিপ ও অনুসন্ধান চালিয়ে এখন দেখা যাচ্ছে, এদের প্রায় দুই হাজারই আগে থেকেই বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে নিবন্ধিত ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তারা শরণার্থী শিবির ছেড়ে শূন্যরেখার ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

মিয়ানমার সীমান্তে ধারাবাহিক সংঘাতের এক পর্যায়ে গত ১৮ জানুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কোনারপাড়া শূন্যরেখা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত এবং এক শিশুসহ দুই রোহিঙ্গা আহত হন।

ওইদিন পুরো ক্যাম্পটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন শুধু জীবন হাতে নিয়ে ক্যাম্প ছাড়তে বাধ্য হন সেখানকার রোহিঙ্গারা। তাদের একটি অংশ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে এসে আশ্রয় নেয়। সেখানেই খোলা আকাশের নীচে অস্থায়ী শামিয়ানা টাঙ্গিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে তারাজীবন কাটাচ্ছে।

এসব রোহিঙ্গার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসন, আরআরআরসি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটি গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) ও সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুদিনে প্রথমে তাদের গণনার কাজ শেষ করে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (আরআরআরসি) জরিপের ফলাফল ঘোষণা করে জানায়, শূন্যরেখা থেকে পালিয়ে তুমব্রুতে আশ্রয় নিয়েছে ৫শ ৫৮টি রোহিঙ্গা পরিবারের ২ হাজার ৯শ ৭০ জন সদস্য। তাদের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাস্কফোর্স।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। এরই অংশ হিসেবে এসব রোহিঙ্গা আগে থেকে কোনো ক্যাম্পে নিবন্ধিত কি-না সেটাও যাচাই-বাছাই করা হয়।

যাচাই-বাছাই শেষে জানানো হয়, এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পের নিবন্ধিত। তারা সেখানে বাসিন্দা হিসেবে ছিলেন। পরে কোনো সময় তারা সেখান থেকে শূন্যরেখায় গিয়েছেন। বাকি এক-তৃতীয়াংশ অনিবন্ধিত। তারা আগে থেকেই শূন্যরেখার ক্যাম্পে বসবাস করছিলেন।

তাহলে প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গা কেন শিবির ছেড়ে সেখানে গিয়েছিলেন—এর জবাবে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। দুটি স্থানের ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ আলাদা। দুটি জায়গায় দুটি তরফ থেকে রেশন ও অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন রোহিঙ্গারা। তখন ডবল রেশনের লোভেও তারা সেখানে যেতে পারেন।

শূন্যরেখায় বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কারও কোনো প্রভাব নেই। অনেক সময় দেখা যায়, এখানে শিবিরে রোহিঙ্গারা অপরাধ করে। তাদের নামে মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা হয়। সেই মামলা থেকে বাঁচতে তারা সেখানে চলে যায়। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নাগাল পায় না। ফলে অপরাধ করে পার পেতে সেখানে চলে যেতে পারেন। সেটাও হতে পারে।

নিষেধাজ্ঞার পরেও তারা ক্যাম্প ছেড়ে বেরিয়ে শূন্যরেখায় কিভাবে গেল—এমন প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান আরও বলেন, এখানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে। তারা সবটুকুই করেন। বিরাট ক্যাম্প। এখানকার নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ অপরাধী হলে সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক সৈয়দ হারুন অর রশিদ বলেন, ক্যাম্পের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ জোরদার করা হয়েছে। তারপরও চোরাই পথে হয়তো কেউ কেউ বাইরে চলে যায়। তাদের ধরে আবার ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনা হয়।

তিনি আরও বলেন, এখন রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা মামলার আসামি; তারা ক্যাম্পে ফিরলে অবশ্যই আমরা তাদের গ্রেফতার করব, আইনের আশ্রয় নেব।

আরআরআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিবন্ধিতদের স্ব স্ব ক্যাম্পেই ফেরত পাঠানো হবে। তাদের যাদের বিরুদ্ধে মামলা ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে দেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিজেরাও এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে। নিবন্ধনের আওতায় থাকা রোহিঙ্গাদের আপাতত উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে।

শূন্যরেখায় থাকা সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে দুই হাজার ৯শ ৭০ জন রোহিঙ্গার তথ্য পাওয়া গেলেও বাকিরা কোথায়—তা বলতে পারছেন না কেউ।

তবে এ ব্যাপারে প্রশাসন খোঁজ-খবর নিচ্ছে জানিয়ে মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এসব রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলে গেছে বা বাংলাদেশের কোথাও আত্মগোপন করেছে অথবা বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ