রাজধানীর মগবাজারের একটি বাসা থেকে শবনম শারমিনের (২৮) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বজনরা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছেন। এতে আসামি করা হয়েছে তার স্বামী সাইদুল ইসলামকে। মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, মরদেহ এতটাই পচে গিয়েছে যে, দেখে মনে হচ্ছে তিনি ছয় থেকে সাত দিন আগে মারা গেছেন।বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল কুদ্দুস এই তথ্য জানান। তিনি জানান, শবনম শারমিনের বড় বোন শবনম পারভীন নিজেই বাদী হয়ে বোনের স্বামীকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছেন।
লাশ উদ্ধারের সময় হাতিরঝিল থানা পুলিশ শবনম শারমিনের স্বামীর সঙ্গে একবার ফোনে কথা বলেছিল। তারপর আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এখন মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দুপুরের দিকে শারমিনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। ময়নাতদন্তের আগে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফয়সাল। তিনি সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, ওই নারীর মুখমণ্ডলসহ সারা শরীর পচে গিয়েছে। গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ আছে।
পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, আলোকচিত্রের ওপর শবনম শারমিন একটি কোর্স করেছেন। ২০০৮ সালে পারিবারিকভাবে তার একটি বিয়ে হয়েছিল। পরে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে বোনের বাসাসহ অন্যান্য জায়গায় থাকতেন এবং চাকরি করতেন।
তিনি জানান, লাশ পচে গিয়েছে যে, দেখে মনে হয় ছয় থেকে সাত দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। আলামত হিসেবে ওই কক্ষ থেকে দুটি সিগারেটের প্যাকেট ও একটি পানির বোতল জব্দ করা হয়েছে। একটি সিগারেটের প্যাকেটে তিনটি সিগারেট ছিল। অপরটিতে খাওয়ার পর কিছু অংশ বিশেষ ছিল। লাশ উদ্ধারের সময় তার পরনে ছিল একটি ম্যাক্সি। গলায় ওড়না ফাঁস দেওয়া ছিল।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে বড় মগবাজারের ৩০৮ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলা থেকে শবনম শারমিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে, শবনম তার স্বামী সাইদুল ইসলামকে নিয়ে গত মার্চ মাসে এই বাসাটি ভাড়া নেন। তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হারুনুর রশিদের সন্তান।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে দরজা ভেঙে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সিআইডি ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে। এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। ময়নাতদন্ত শেষে মর্গ থেকে পরিবারের লোকজন মরদেহ বুঝে নিয়েছে। সুত্রেঃ খোলা কাগজ