ঢাকা ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৯ মাসেও রেজাল্ট না পাওয়ায় রাবি সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষার্থীদের তালা

নিজস্ব প্রতিবেদক//
  • আপডেট সময় : ০৫:৫০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১৩ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পরীক্ষা শেষ হওয়ার নয় মাস পার হয়ে গেছে। তবে এখনও ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি বিভাগটি। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ফল প্রকাশের দাবিতে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর আড়াইটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সাড়ে ৩টা) কর্মসূচি চলমান রয়েছে।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিভাগের সভাপতি ও অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে সব ব্যাচের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করে বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষা কমিটির সভাপতির গড়িমসি ও উদাসীনতার কারণে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯ মাস পরও ফলাফল প্রকাশ হয়নি। এর দরুন বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষায় আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। মাস্টার্স পরীক্ষা ৯ মাস আগে শেষ হলেও তাদের পরিচয় শুধু স্নাতক পাশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুসারে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা। বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি। সর্বশেষ ভাইভা শেষ হয় ২৯ জানুয়ারি। এই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ।

কর্মসূচির বিষয়ে বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের ফলাফলের জন্য এর আগে অনেকবার সভাপতি স্যারসহ দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। তারা আমাদের প্রত্যেকবার আশ্বাস দিয়েছেন মাত্র। স্যারদের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, ফল প্রকাশের জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ, যাকে ইতোমধ্যে বিভাগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি (মুসতাক) ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভাগকে সহযোগিতা করছেন না। এদিকে ৯ মাস হয়ে গেলেও আমাদের ফলাফল প্রকাশ হয়নি, তাই রেজাল্ট না পাওয়া পর্যন্ত আমরা সরছি না।

অপর এক শিক্ষার্থী আয়েশা মালিহা মাহফুজ বলেন, আমাদের পরীক্ষা গত বছরের (২০২৩) নভেম্বরে শুরু হয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে শেষ হয়েছে। নয় মাস ধরে আমাদের ফলাফল আটকে আছে। ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিভিন্ন চাকরি ও বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলাফল না পাওয়ার কারণে আমরা অনেক ক্ষেত্রে আবেদনও করতে পারছি না।

এবিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তার কাছে কিছু নম্বর ছিল, বেশ কয়েক দফায় নম্বর চাওয়ার পর সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) কিছু নম্বর সরবরাহ করেছেন। তার কাছে এখনও বেশকিছু নম্বর রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে রেজাল্ট প্রকাশের জন্য করণীয় সম্পর্কে জানতে আজকে আমরা ভিসি স্যারের সঙ্গে বসতে চেয়েছিলাম। এরমধ্যে শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। এখন আমরা প্রশাসন ভবনে আছি। বিষয়টি সমাধানে আলোচনা করব।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ বলেছেন, আমার কাছে কোনো নম্বর পত্র নেই, যা ছিল সব সরবরাহ করেছি। ফলাফল প্রকাশ করতে না পারা বর্তমান সভাপতির ব্যর্থতা। তিনি (বর্তমান সভাপতি) ব্যর্থতা ঢাকতে তালবাহানা করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৯ মাসেও রেজাল্ট না পাওয়ায় রাবি সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষার্থীদের তালা

আপডেট সময় : ০৫:৫০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পরীক্ষা শেষ হওয়ার নয় মাস পার হয়ে গেছে। তবে এখনও ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি বিভাগটি। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ফল প্রকাশের দাবিতে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর আড়াইটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সাড়ে ৩টা) কর্মসূচি চলমান রয়েছে।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিভাগের সভাপতি ও অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে সব ব্যাচের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করে বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষা কমিটির সভাপতির গড়িমসি ও উদাসীনতার কারণে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯ মাস পরও ফলাফল প্রকাশ হয়নি। এর দরুন বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষায় আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। মাস্টার্স পরীক্ষা ৯ মাস আগে শেষ হলেও তাদের পরিচয় শুধু স্নাতক পাশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুসারে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা। বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি। সর্বশেষ ভাইভা শেষ হয় ২৯ জানুয়ারি। এই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ।

কর্মসূচির বিষয়ে বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের ফলাফলের জন্য এর আগে অনেকবার সভাপতি স্যারসহ দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। তারা আমাদের প্রত্যেকবার আশ্বাস দিয়েছেন মাত্র। স্যারদের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, ফল প্রকাশের জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ, যাকে ইতোমধ্যে বিভাগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি (মুসতাক) ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভাগকে সহযোগিতা করছেন না। এদিকে ৯ মাস হয়ে গেলেও আমাদের ফলাফল প্রকাশ হয়নি, তাই রেজাল্ট না পাওয়া পর্যন্ত আমরা সরছি না।

অপর এক শিক্ষার্থী আয়েশা মালিহা মাহফুজ বলেন, আমাদের পরীক্ষা গত বছরের (২০২৩) নভেম্বরে শুরু হয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে শেষ হয়েছে। নয় মাস ধরে আমাদের ফলাফল আটকে আছে। ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিভিন্ন চাকরি ও বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলাফল না পাওয়ার কারণে আমরা অনেক ক্ষেত্রে আবেদনও করতে পারছি না।

এবিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তার কাছে কিছু নম্বর ছিল, বেশ কয়েক দফায় নম্বর চাওয়ার পর সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) কিছু নম্বর সরবরাহ করেছেন। তার কাছে এখনও বেশকিছু নম্বর রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে রেজাল্ট প্রকাশের জন্য করণীয় সম্পর্কে জানতে আজকে আমরা ভিসি স্যারের সঙ্গে বসতে চেয়েছিলাম। এরমধ্যে শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। এখন আমরা প্রশাসন ভবনে আছি। বিষয়টি সমাধানে আলোচনা করব।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ বলেছেন, আমার কাছে কোনো নম্বর পত্র নেই, যা ছিল সব সরবরাহ করেছি। ফলাফল প্রকাশ করতে না পারা বর্তমান সভাপতির ব্যর্থতা। তিনি (বর্তমান সভাপতি) ব্যর্থতা ঢাকতে তালবাহানা করছেন।