ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬ নভেম্বর আটঘরিয়া‘বংশীপাড়া যুদ্ধদিবস’

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৯:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে

১৯৭১ সালের এই দিনে উপজেলার খিদিরপুর গ্রামে সে সময়ে প্রবাহিত চন্দ্রাবতী নদীর বংশীপাড়া ঘাট এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার ও এদেশীয় রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি যুদ্ধ হয়।

৩ ঘণ্টাব্যাপী ওই যুদ্ধে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শত্রুদের ছোড়া বুলেটে শহীদ হন।
আর পাকি বাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনসহ কমপক্ষে ৩০ জন সৈন্য নিহত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের একটি বাড়িতে অবস্থান নেন।

স্থানীয় মমিন রাজাকার পাকিস্তানি বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে দেয়।

এর পর রাজাকার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রামচন্দ্রপুর গ্রামের উদ্দেশে রওয়া্না হয়।

এ সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন রেনুর নেতৃত্বে রামচন্দ্রপুর, রাঘবপুর ও ফুলবাড় গ্রামে অবস্থানরত ৩টি দল একত্রিত হয়ে ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা চন্দ্রাবতী নদীর পশ্চিমপাড়ে বংশীপাড়া ঘাটে অবস্থান নেন। ওই সময় পাকিস্তানি সেনারা নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থান করছিল।

পাকিস্তানি সেনারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ শুরু করেন। এতে পাকি বাহিনীর ক্যাপ্টেন তাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। ৩ ঘণ্টা ধরে চলা ওই যুদ্ধে কমপক্ষে ৩০ জন পাকিসেনা নিহত হয়।

এছাড়া বংশীপাড়া ঘাটের ওই যুদ্ধে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তারা হলেন- আবুল কাশেম, আব্দুল খালেক, নায়েব আলী, আব্দুর রশীদ, আব্দুল মালেক, শহিদুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, মনসুর আলী, আব্দুর রাজ্জাক, ইউনুস আলী ও মহসিন আলী।

এ যুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে বংশীপাড়া ঘাটে নির্মাণ করা হয়েছে একটি স্মৃতিসৌধ। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে শহীদ আব্দুল খালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে।

এছাড়া যুদ্ধে কয়েকজন গ্রামবাসী নিহত হন। তাদের মধ্যে কালাম নামে একজন নিহত হওয়ায় তার নামানুসারে ‘বংশীপাড়া’র নাম রাখা হয়েছে ‘কালামনগর’।

আটঘরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক জানান, বংশীপাড়া যুদ্ধ দিবস পালন উপলক্ষে স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৬ নভেম্বর আটঘরিয়া‘বংশীপাড়া যুদ্ধদিবস’

আপডেট সময় : ০৩:৩৯:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

১৯৭১ সালের এই দিনে উপজেলার খিদিরপুর গ্রামে সে সময়ে প্রবাহিত চন্দ্রাবতী নদীর বংশীপাড়া ঘাট এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার ও এদেশীয় রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি যুদ্ধ হয়।

৩ ঘণ্টাব্যাপী ওই যুদ্ধে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শত্রুদের ছোড়া বুলেটে শহীদ হন।
আর পাকি বাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনসহ কমপক্ষে ৩০ জন সৈন্য নিহত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের একটি বাড়িতে অবস্থান নেন।

স্থানীয় মমিন রাজাকার পাকিস্তানি বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে দেয়।

এর পর রাজাকার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রামচন্দ্রপুর গ্রামের উদ্দেশে রওয়া্না হয়।

এ সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন রেনুর নেতৃত্বে রামচন্দ্রপুর, রাঘবপুর ও ফুলবাড় গ্রামে অবস্থানরত ৩টি দল একত্রিত হয়ে ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা চন্দ্রাবতী নদীর পশ্চিমপাড়ে বংশীপাড়া ঘাটে অবস্থান নেন। ওই সময় পাকিস্তানি সেনারা নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থান করছিল।

পাকিস্তানি সেনারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ শুরু করেন। এতে পাকি বাহিনীর ক্যাপ্টেন তাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। ৩ ঘণ্টা ধরে চলা ওই যুদ্ধে কমপক্ষে ৩০ জন পাকিসেনা নিহত হয়।

এছাড়া বংশীপাড়া ঘাটের ওই যুদ্ধে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তারা হলেন- আবুল কাশেম, আব্দুল খালেক, নায়েব আলী, আব্দুর রশীদ, আব্দুল মালেক, শহিদুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, মনসুর আলী, আব্দুর রাজ্জাক, ইউনুস আলী ও মহসিন আলী।

এ যুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে বংশীপাড়া ঘাটে নির্মাণ করা হয়েছে একটি স্মৃতিসৌধ। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে শহীদ আব্দুল খালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে।

এছাড়া যুদ্ধে কয়েকজন গ্রামবাসী নিহত হন। তাদের মধ্যে কালাম নামে একজন নিহত হওয়ায় তার নামানুসারে ‘বংশীপাড়া’র নাম রাখা হয়েছে ‘কালামনগর’।

আটঘরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক জানান, বংশীপাড়া যুদ্ধ দিবস পালন উপলক্ষে স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।