সোনার রেকর্ড দামের পর বড় দরপতন

- আপডেট সময় : ১১:২১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বড় উত্থানের পর বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে। হু হু করে দাম বেড়ে গত ২২ এপ্রিল বিশ্ববাজারে প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৪৯৪ ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে।
সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। এই বড় উত্থানের পর এখন সোনার বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে। গত ৯ দিনে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৩০০ ডলার কমে গেছে।
ট্রাম্প প্রতিটি দেশের জন্য পৃথক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন এমন আশঙ্কায় কয়েক দফায় বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়ে মার্চের শেষের দিকে প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ১৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে ট্রাম্প শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে সোনার দামে বড় পতন হয়।
এরপর চীন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর শুল্ক আরও বাড়ায়। দুই দেশের এই শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে আবারও হু হু করে বাড়ে সোনার দাম। ১১ এপ্রিল প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ২০০ ডলারের স্পর্শ করে। অবশ্য এখানেই থেমে থাকেনি সোনার দাম বাড়ার প্রবণতা। দফায় দফায় দাম বেড়ে ২২ এপ্রিল প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৪৯৪ ডলারে উঠে যায়। এটাই বিশ্ববাজারে এখনো পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম।
এই রেকর্ড দাম হওয়ার পরই পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। একদিনের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২০০ ডলার পর্যন্ত কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর কয়েক দফা সোনার দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত পতন প্রবণতায় দেখা যায়। ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সোনার দাম কমার প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০৭ ডলার। এতে আজই প্রতি আউন্স সোনার দাম ৬৫ ডলার কমে গেছে। আর ২২ এপ্রিলের রেকর্ড দামের সঙ্গে তুলনা করলে ৯ দিনের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ২৯০ ডলার।
এদিকে বিশ্ববাজারে সোনার দামে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি দেশের বাজারেও কয়েক দফায় সোনার দাম বাড়ানো এবং কমানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশের বাজারে সোনার সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের ১৬ ঘণ্টার পর ২৩ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়।
বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৩ এপ্রিল বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৫ হাজার ১০৯ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৭৩২ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা। বর্তমানে দেশের বাজারে এই দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে ২২ এপ্রিল ঘোষণা দিয়ে ২৩ এপ্রিল থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৫ হাজার ১০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৭৩২ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা। এটি এখনো পর্যন্ত দেশের বাজারে সোনার সর্বোচ্চ দাম। শুধু ২৩ এপ্রিল সকাল থেকে বিকাল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
এদিকে দেশের বাজার সর্বশেষ সোনার দাম নির্ধারণের পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১০০ ডলারের ওপরে কমে গেছে। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় আবারও সোনার দাম কমতে পারে।