সিলেটে টিলা ধস, হিসাব মিলাতে পারছেন না স্থানীয়রা

- আপডেট সময় : ১১:০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ ৬৫ বার পড়া হয়েছে
‘টিলার উপরের অংশ থেকে বাসার দূরত্ব প্রায় একশ গজের মতো। উপরের অংশ ধসে এতো দূরে গিয়ে পাদদেশে থাকা ঘরের ওপর পড়ার বিষয়টি অবিশ্বাস্য লাগছে। মনে হচ্ছে কেউ যেন টিলার অংশ তুলে ঘরের ওপর ফেলে দিয়েছে। আমরা হিসাব মিলাতে পারছি না।’
সিলেট নগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেজরটিলার চামেলীবাগ আবাসিক এলাকায় টিলা ধসে চাপা পড়ে স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যুর ঘটনার পর এমন বর্ণনা দেন প্রতিবেশী শফিকুল হাসান জীবন। শুধু জীবন নয়, একই এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মনজুর আহমদও একইভাবে টিলা ধসটি অবিশ্বাস্য বলে মন্তব্য করেন।
চামেলীবাগের ২ নম্বর রোডের ৮৯ নম্বর বাসায় বসবাস করে আসছিলেন সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা মরহুম আগা রফিক উদ্দিনের ছেলে আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রুজি (২৫) ও ছেলে নাফজি তানিম (২)। পাশের বাসায় তার ভাই আগা রহিম উদ্দিন ও চারা আগা বাবুল পরিবার নিয়ে বাস করছেন। টিনের পৃথক পাকা ঘরে দুই ভাই ও চাচার আলাদা সংসারে সোমবার সকালে নেমে আসে অন্ধকার। ভোররাত থেকেই তখন সিলেট বৃষ্টি হচ্ছিল। ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টি চলাকালে সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে হঠাৎ পাশের টিলার উপরের অংশ গিয়ে ধসে পড়ে তাদের বসতবাড়িতে। আটকা পড়েন তিনটি পরিবারের ৮ সদস্য।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা আগা রহিম, তার স্ত্রী, চাচাসহ ৫ জনকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর এরমধ্যে ২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু কোনোভাবেই আগা করিমের পরিবারকে উদ্ধার করা যাচ্ছিল না।
খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। কিন্তু রাস্তা ছোট হওয়ায় মাটিকাটা বা সরানোর কোনো যন্ত্র সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ১১টার দিকে সংবাদ দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সনাতন পদ্ধতিতে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সাড়ে ১২টার দিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আগা করিম, স্ত্রী শাম্মী ও শিশু সন্তান তানিমকে। এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।