সাতক্ষীরায় বিএনপির সাবেক এমপিসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন
- আপডেট সময় : ১১:৪৩:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ৮২ বার পড়া হয়েছে
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা দুটি মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনকে যাবজ্জীবন ও ৪৪ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করায় তিনজন বিএনপি সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা-১ তালা কালারোয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, উপজেলার যুবদলের সভাপতি আব্দুল কাদের বাচ্চু, আরিফুর রহমান রঞ্জু ও রিপন। বাকি আসামিদের ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বাকি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৪৪ জন আসামি হলেন, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আশরাফ হোসেন (৪৫), উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম (৪৬), বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক (৪৮), উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ তামিম আজাদ মেরিন (৪৫), উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল রকিব মোল্যা (৪৩), কলারোয়া পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম (৩৮), বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম (৪৪), পৌর ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মজিদ (৩০), বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ (৫২), বিএনপি নেতা হাসান আলী (৪৫), উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আলী (৫৫), বিএনপি নেতা ময়না (৩৮), বিএনপি নেতা শিক্ষক আব্দুস সাত্তার (৫০), সাবেক উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি খালেদ মঞ্জুর রোমেল (৪২), বিএনপি নেতা কলেজশিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু (৫০), যুবনেতা মাজাহারুল ইসলাম (৪৫), বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক (৩৮), বিএনপি নেতা আব্দুর রব (৪৬), উপজেলা কেরালকাতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম (৪৩), যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা বিএপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম (৫০), পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রসুল (৪৮), সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার (৫২), যুবদল নেতা রিংকু (৩২), যুবদল নেতা আব্দুস সামাদ (৪৮), বিএনপি নেতা আলাউদ্দীন (৩৪), যুবদল নেতা আলতাফ হোসেন (৩৮), উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তৌফিকুর রহমান সনজু (৩৩), ছাত্রদলের সহসভাপতি নাজমুল হোসেন (৩০), বিএনপি নেতা সাহাবুদ্দিন (৪৯), বিএনপি নেতা সাহেব আলী (৪৮), বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম (৫৫), যুবনেতা টাইগার খোকন (৩৮), যুবনেতা ট্রলি সহিদুল (৪২), বিএনপি নেতা কণক (৩৮), পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ কামরুল হোসেন (৫০), যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম (৩০), যুবদল নেতা ইয়াছিন আলী (৩৫), পৌর বিএনপির সহসভাপতি আখলাকুর রহমান শেলী (৩২), বিএনপি নেতা শাহিনুর রহমান (৫২), বিএনপি নেতা বিদার মোড়ল (৪০), যুবদল নেতা সোহাগ হোসেন (২৮), বিএনপি সমর্থক মাহাফুজার রহমান মোল্যা (৩৮), জামায়াতকর্মী গফ্ফার গাজী (৪০), সাবেক উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি মাহাফুজুর রহমান সাবু (৫০)। এদের মধ্যে মাহাফুজুর রহমান সাবু ও লাকি কারাগারে থাকাকালীন মারা গেছেন। এদের মধ্যে নাজমুল হোসেন, মো. আলাউদ্দিন, আব্দুল কাদের বাচ্চু, রিপন, মফিজুল ইসলাম, খালেদ মঞ্জুর, রোমেল, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল মালেক ও রবিউল ইসলাম পলাতক।
মামলার এজাহার ও তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহরে হামলা হয়। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করে ও বোমা বিস্ফোরণ করে। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এ সময় বহরে থাকা ১৫-২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম ও তার নেতাকর্মীরা এ হামলার পেছনে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৭৫ জনকে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ।
এ ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।