ঢাকা ১০:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে নির্বাচন : উপদেষ্টা রিজওয়ানা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১২:৩৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে

সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ও সংশোধনী আনার পরই সরকার নির্বাচনের কথা ভাববে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।

সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ছয়টি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ছয় কমিশনের আপাতত যিনি নেতৃত্ব দেবেন তার নামটা ঠিক করেছি। তিনি আমাদের সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবেন, অন্য কমিশন সদস্য কারা হবেন।

তিনি বলেন, সংস্কার প্রস্তাব যেগুলো আসছে তার মধ্যে কিছু কিছু জিনিস কিন্তু পত্র-পত্রিকায় জনগণের মতামত হিসেবেও আছে। কারও করও গবেষণা হিসেবেও আছে। এগুলো নিয়ে হয়তো তারা কাজ শুরু করবেন। এরমধ্যে কংক্রিট যে প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান করেছি, এগুলো চলে আসবে। সুতরাং তাদের টার্মস অব রেফারেন্স বা কর্মপরিধি ঠিক করতে আমাদের হয়তো আরও দু-তিন সপ্তাহ লাগবে।

এই উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা মনে করছি, এই দু-তিন সপ্তাহ বসে না থেকে আমাদের হাতে যা আছে তা নিয়ে ওনারা শুরু করুক। এবং ওনারা কোথায় বসবেন এবং এটা যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাচিবিক সহযোগিতা দেবে সেটা ঠিক হয়েছে। কোথায় বসবেন এটাও মোটামুটি একটা ধারণা আমরা করছি। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা কয়েকদিনের জন্য জাতিসংঘের অধিবেশনে যাচ্ছেন। উনি আসার পরপরই কর্মপরিধি এবং অন্য কারা থাকবেন কমিশনে সেগুলো ঠিক হবে।

কমিশনগুলো কতদিনে প্রতিবেদন দেবে- এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা বলেন, এরশাদ সরকারের সঙ্গে এই সরকারের একটা বড় পার্থক্য রয়েছে। এই সরকার একটা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিফলন। সেই গণঅভ্যুত্থানে দুটি মূল শব্দ ছিল; যার একটি ‘বৈষম্যবিরোধী’, অন্যটি হচ্ছে ‘সংস্কার’। এটির উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশকে প্রকৃত গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাওয়া। যেহেতু এরশাদ সরকারের সঙ্গে আমাদের ভিত্তিরই অনেক পার্থক্য আছে, তাই সেই সরকারের সঙ্গে আমাদের কর্মপরিকল্পনা, কর্মপরিধি এবং উদ্দেশ্যকে আমরা কোনোভাবে মিলিয়ে ফেলবো না।

তিনি বলেন, যে কমিশনগুলো হলো প্রাথমিকভাবে আমরা আশা করছি তারা তিনমাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে পারবেন। এগুলো আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে এগুলোর স্বপক্ষে আমরা রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে পারি কি না। এজন্য সংস্কার বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চাচ্ছি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিশ্চয়ই এতদিনে এই উপলব্ধি এসেছে যে, এরশাদ সরকার যা করে যেতে পারেনি তার ফল কী হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো দেখেছে। তারাও কোনো সংস্কার করেনি, এটার ফল কী হয়েছে সেটাও ৫ আগস্ট গোটা জাতি দেখেছে। কোনো রাজনৈতিক দল নিশ্চয়ই অজনপ্রিয় হয়ে আবার একই রকম ফলাফল দেখতে চাইবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেজন্য প্রথম থেকেই আমরা মতবিনিময়ে তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোকে) অন্তর্ভুক্ত করেছি। একপর্যায়ে আমরা সংলাপে যাবো। সেই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ও সুনির্দিষ্ট কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশোধনী এনে তারপরই আমরা নির্বাচনের কথা ভাবছি।

‘রাজনৈতিক দলগুলো এরই মধ্যে স্পষ্ট করেছে যে আগে সংস্কার পরে তারা নির্বাচনে যেতে চান। আমি মনে করি আজকের দিনে বাস্তবতাটাও ভিন্ন, প্রেক্ষিতটাও ভিন্ন’- যোগ করেন এ উপদেষ্টা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে নির্বাচন : উপদেষ্টা রিজওয়ানা

আপডেট সময় : ১২:৩৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ও সংশোধনী আনার পরই সরকার নির্বাচনের কথা ভাববে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।

সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ছয়টি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ছয় কমিশনের আপাতত যিনি নেতৃত্ব দেবেন তার নামটা ঠিক করেছি। তিনি আমাদের সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবেন, অন্য কমিশন সদস্য কারা হবেন।

তিনি বলেন, সংস্কার প্রস্তাব যেগুলো আসছে তার মধ্যে কিছু কিছু জিনিস কিন্তু পত্র-পত্রিকায় জনগণের মতামত হিসেবেও আছে। কারও করও গবেষণা হিসেবেও আছে। এগুলো নিয়ে হয়তো তারা কাজ শুরু করবেন। এরমধ্যে কংক্রিট যে প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান করেছি, এগুলো চলে আসবে। সুতরাং তাদের টার্মস অব রেফারেন্স বা কর্মপরিধি ঠিক করতে আমাদের হয়তো আরও দু-তিন সপ্তাহ লাগবে।

এই উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা মনে করছি, এই দু-তিন সপ্তাহ বসে না থেকে আমাদের হাতে যা আছে তা নিয়ে ওনারা শুরু করুক। এবং ওনারা কোথায় বসবেন এবং এটা যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাচিবিক সহযোগিতা দেবে সেটা ঠিক হয়েছে। কোথায় বসবেন এটাও মোটামুটি একটা ধারণা আমরা করছি। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা কয়েকদিনের জন্য জাতিসংঘের অধিবেশনে যাচ্ছেন। উনি আসার পরপরই কর্মপরিধি এবং অন্য কারা থাকবেন কমিশনে সেগুলো ঠিক হবে।

কমিশনগুলো কতদিনে প্রতিবেদন দেবে- এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা বলেন, এরশাদ সরকারের সঙ্গে এই সরকারের একটা বড় পার্থক্য রয়েছে। এই সরকার একটা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিফলন। সেই গণঅভ্যুত্থানে দুটি মূল শব্দ ছিল; যার একটি ‘বৈষম্যবিরোধী’, অন্যটি হচ্ছে ‘সংস্কার’। এটির উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশকে প্রকৃত গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাওয়া। যেহেতু এরশাদ সরকারের সঙ্গে আমাদের ভিত্তিরই অনেক পার্থক্য আছে, তাই সেই সরকারের সঙ্গে আমাদের কর্মপরিকল্পনা, কর্মপরিধি এবং উদ্দেশ্যকে আমরা কোনোভাবে মিলিয়ে ফেলবো না।

তিনি বলেন, যে কমিশনগুলো হলো প্রাথমিকভাবে আমরা আশা করছি তারা তিনমাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে পারবেন। এগুলো আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে এগুলোর স্বপক্ষে আমরা রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে পারি কি না। এজন্য সংস্কার বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চাচ্ছি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিশ্চয়ই এতদিনে এই উপলব্ধি এসেছে যে, এরশাদ সরকার যা করে যেতে পারেনি তার ফল কী হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো দেখেছে। তারাও কোনো সংস্কার করেনি, এটার ফল কী হয়েছে সেটাও ৫ আগস্ট গোটা জাতি দেখেছে। কোনো রাজনৈতিক দল নিশ্চয়ই অজনপ্রিয় হয়ে আবার একই রকম ফলাফল দেখতে চাইবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেজন্য প্রথম থেকেই আমরা মতবিনিময়ে তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোকে) অন্তর্ভুক্ত করেছি। একপর্যায়ে আমরা সংলাপে যাবো। সেই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ও সুনির্দিষ্ট কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশোধনী এনে তারপরই আমরা নির্বাচনের কথা ভাবছি।

‘রাজনৈতিক দলগুলো এরই মধ্যে স্পষ্ট করেছে যে আগে সংস্কার পরে তারা নির্বাচনে যেতে চান। আমি মনে করি আজকের দিনে বাস্তবতাটাও ভিন্ন, প্রেক্ষিতটাও ভিন্ন’- যোগ করেন এ উপদেষ্টা।