ঢাকা ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রানা প্লাজার সোহেলের জামিন আটকে গেল চেম্বারে

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১০:০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩ ৯৫ বার পড়া হয়েছে

ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্টে জামিন পাওয়া ভবনটির মালিক সোহেল রানার জামিন চেম্বার আদালত স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি শেষে রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী রানার জামিন আগামী ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করে বিষয়টি ওইদিন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন।

আদালতে রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।

এর আগে সকালে সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন আবেদনটি করেন।

গত ৬ এপ্রিল সোহেল রানাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে সে সময় জানান আইনজীবীরা। ওইদিন তার জামিন বিষয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন কামরুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন মুনমুন আক্তার।

২০১৩ সালে এই সোহেল রানার মালিকানাধীন ভবন রানা প্লাজা ধসে হাজারো পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু সারাবিশ্বে আলোড়ন তুলছিল। ভবন ধসের পাঁচ দিন পর রানা গ্রেফতার হয়েছিলেন। এত শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। আরও কয়েকটি মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল তাকে।

হত্যা মামলাটিতে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের বেঞ্চ প্রধান আসামি রানাকে জামিন দেয়।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, ওই ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে ২০২২ সালে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন সোহেল রানা। এর শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেন। রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেওয়া হয়।

জামিনের আদেশের পর বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘ওই মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। বাকি ৩৭ জনও জামিনে আছেন, সোহেল রানা ছাড়া। তিনি ১০ বছর ধরে কারাগারে আছেন। এসব দিক বিবেচনায় আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন। পুলিশের করা ওই মামলায় জামিন হওয়ায় তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।’

তবে হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে সেদিনই জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মহিউদ্দিন দেওয়ান।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরও ১ হাজার ১৬৯ জন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই বছরের ২৯ এপ্রিল বেনাপোল থেকে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রানা প্লাজার সোহেলের জামিন আটকে গেল চেম্বারে

আপডেট সময় : ১০:০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্টে জামিন পাওয়া ভবনটির মালিক সোহেল রানার জামিন চেম্বার আদালত স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি শেষে রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী রানার জামিন আগামী ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করে বিষয়টি ওইদিন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন।

আদালতে রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।

এর আগে সকালে সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন আবেদনটি করেন।

গত ৬ এপ্রিল সোহেল রানাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে সে সময় জানান আইনজীবীরা। ওইদিন তার জামিন বিষয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন কামরুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন মুনমুন আক্তার।

২০১৩ সালে এই সোহেল রানার মালিকানাধীন ভবন রানা প্লাজা ধসে হাজারো পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু সারাবিশ্বে আলোড়ন তুলছিল। ভবন ধসের পাঁচ দিন পর রানা গ্রেফতার হয়েছিলেন। এত শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। আরও কয়েকটি মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল তাকে।

হত্যা মামলাটিতে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের বেঞ্চ প্রধান আসামি রানাকে জামিন দেয়।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, ওই ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে ২০২২ সালে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন সোহেল রানা। এর শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেন। রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেওয়া হয়।

জামিনের আদেশের পর বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘ওই মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। বাকি ৩৭ জনও জামিনে আছেন, সোহেল রানা ছাড়া। তিনি ১০ বছর ধরে কারাগারে আছেন। এসব দিক বিবেচনায় আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন। পুলিশের করা ওই মামলায় জামিন হওয়ায় তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।’

তবে হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে সেদিনই জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মহিউদ্দিন দেওয়ান।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরও ১ হাজার ১৬৯ জন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই বছরের ২৯ এপ্রিল বেনাপোল থেকে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।