ঢাকা ১১:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে আতঙ্কের নাম ‘ড্রাম ট্রাক’

নিজস্ব প্রতিবেদক//
  • আপডেট সময় : ১১:৪১:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ২২ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী -চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে এখন আতঙ্কের নাম বালু বোঝাই ড্রাম ট্রাক। ড্রাম ট্রাক ছাড়াও ট্রাক, ট্রাক্টার ওভার লোড, বেপরোয়া গতি ও খোলা অবস্থায় বালু নিয়ে যাওয়ায় হারহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী ট্রাকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিলেও রহস্য জনক কারনে নীরব থাকছে প্রশাসন। সড়ক বিভাগ বলছে, এক্সেল লোড মেশিন স্থাপনের কাজ শেষ হলেই নিয়ন্ত্রণে আসবে ট্টাকগুলো।
রাজশাহী –-চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের (ভিতর পাশ) রাত দিন বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বালু-মাটি বোঝাই শত শত ড্রাম ট্রাক। পদ্মা নদী থেকে বৈধ আর অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। নদী থেকে বুলু উত্তোলনেও মানা হচ্ছে না কোন নীতিমালা। পদ্মা নদীর তীর ঘেসে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। যার ফলে নদীর তীর রক্ষা বাধঁ রয়েছে হুমকীর মুখে। সেই বালুগুলো জেলার ভেতর সহ আশেপাশে জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোদাগাড়ী উপজেলার সেখেড়পাড়া, ভাটোপাড়া ফুলতলা সহ বিভিন্ন পয়েন্টে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নেওয়া হচ্ছে ড্রাম ট্রাক, ট্রাক, ট্রাক্টারে করে। বেপরোয়া গতি ও বালু নামমাত্র পর্দা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়ায় ড্রাম ট্রাক থেকে বালু উড়ে এসে পথচারী, স্কুল কলেজ এর ছাত্র ছাত্রী, মোটরসাইকেল চালক ও সব ধরনের যানবাহনের চালকদের চোখে মুখে পড়ায় বাড়ছে দুর্ঘটনা, ঝরছে প্রাণ।
সড়কের পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার থাকায় ট্রাকের কারণে সড়কে চলাচলকারীরাও থাকেন চরম আতঙ্কে। হর্ণ, ধুলা বালি আর কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সড়ক। শুধু তাই নয়, বালু ও ধুলোর কারনে শ্বাস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে।
সেখেড়পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা রফিক বলেন, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে শত শত ড্রাম ট্রাক চলাচল করে। কোন নিয়ম মানে না এরা। বেপরোয়া গতিতে চালায় গাড়ী। এতে অনেকেই দুর্ঘটনায় পড়ছেন প্রতিনিয়ত।
কামরুল জানাই সড়কের পাশেই আমার বাড়ী। ঘরের জানালা দরজা খুলে রাখা যায়না। দরজা জানালা খুললেই বালুর ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলের কারনে ধুলাবালীতে বাড়ী ঘর ভর্তি হয়ে যায়।
মোটরসাইকেল চালক বশির আহমেদ জানান, ট্রাকগুলো বালু নেওয়ার সময় নাম মাত্র পর্দা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যায়। এতে বাতাসে বালুগুলো উড়ে আমাদের চোখে মুখে এসে পড়ে। বালুর কারনে শুধু আমাদের বাইক চালকদের না, সব ধরনের যানবাহনের চালকদের সমস্যা হয়।
অটোরিকশা চালক সালেক বলেন, ড্রাম ট্রাকগুলো অনেক বড়। এই ড্রাম ট্রাক গুলো সিএনজি, অটোরিকশা, ব্যাটারীচালিত অটোরিকশাকে কোন পাত্তা দেয় না। এই ট্রাকগুলোর কারনে সড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হয়।
ভাটোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাকিব জানান, বালু উড়ে ঘরে ঢুকে। জানলা দরজা সব সময় বন্ধ রাখতে হয়। বাইরে ভেজা কাপড় শুকানো যায় না বালুর কারনে। আমরা অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারি না। কখন দুর্ঘটনা ঘটে সেই আতঙ্কে থাকি। এখন এই সড়কে ভয় কাজ করে চলাচল করতে।
এ বিষযে সওজ,সড়ক বিভাগ,রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হাকিমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগায়োগ করা হলে মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তিনার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে আতঙ্কের নাম ‘ড্রাম ট্রাক’

আপডেট সময় : ১১:৪১:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

রাজশাহী -চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে এখন আতঙ্কের নাম বালু বোঝাই ড্রাম ট্রাক। ড্রাম ট্রাক ছাড়াও ট্রাক, ট্রাক্টার ওভার লোড, বেপরোয়া গতি ও খোলা অবস্থায় বালু নিয়ে যাওয়ায় হারহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী ট্রাকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিলেও রহস্য জনক কারনে নীরব থাকছে প্রশাসন। সড়ক বিভাগ বলছে, এক্সেল লোড মেশিন স্থাপনের কাজ শেষ হলেই নিয়ন্ত্রণে আসবে ট্টাকগুলো।
রাজশাহী –-চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের (ভিতর পাশ) রাত দিন বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বালু-মাটি বোঝাই শত শত ড্রাম ট্রাক। পদ্মা নদী থেকে বৈধ আর অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। নদী থেকে বুলু উত্তোলনেও মানা হচ্ছে না কোন নীতিমালা। পদ্মা নদীর তীর ঘেসে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। যার ফলে নদীর তীর রক্ষা বাধঁ রয়েছে হুমকীর মুখে। সেই বালুগুলো জেলার ভেতর সহ আশেপাশে জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোদাগাড়ী উপজেলার সেখেড়পাড়া, ভাটোপাড়া ফুলতলা সহ বিভিন্ন পয়েন্টে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নেওয়া হচ্ছে ড্রাম ট্রাক, ট্রাক, ট্রাক্টারে করে। বেপরোয়া গতি ও বালু নামমাত্র পর্দা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়ায় ড্রাম ট্রাক থেকে বালু উড়ে এসে পথচারী, স্কুল কলেজ এর ছাত্র ছাত্রী, মোটরসাইকেল চালক ও সব ধরনের যানবাহনের চালকদের চোখে মুখে পড়ায় বাড়ছে দুর্ঘটনা, ঝরছে প্রাণ।
সড়কের পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার থাকায় ট্রাকের কারণে সড়কে চলাচলকারীরাও থাকেন চরম আতঙ্কে। হর্ণ, ধুলা বালি আর কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সড়ক। শুধু তাই নয়, বালু ও ধুলোর কারনে শ্বাস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে।
সেখেড়পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা রফিক বলেন, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে শত শত ড্রাম ট্রাক চলাচল করে। কোন নিয়ম মানে না এরা। বেপরোয়া গতিতে চালায় গাড়ী। এতে অনেকেই দুর্ঘটনায় পড়ছেন প্রতিনিয়ত।
কামরুল জানাই সড়কের পাশেই আমার বাড়ী। ঘরের জানালা দরজা খুলে রাখা যায়না। দরজা জানালা খুললেই বালুর ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলের কারনে ধুলাবালীতে বাড়ী ঘর ভর্তি হয়ে যায়।
মোটরসাইকেল চালক বশির আহমেদ জানান, ট্রাকগুলো বালু নেওয়ার সময় নাম মাত্র পর্দা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যায়। এতে বাতাসে বালুগুলো উড়ে আমাদের চোখে মুখে এসে পড়ে। বালুর কারনে শুধু আমাদের বাইক চালকদের না, সব ধরনের যানবাহনের চালকদের সমস্যা হয়।
অটোরিকশা চালক সালেক বলেন, ড্রাম ট্রাকগুলো অনেক বড়। এই ড্রাম ট্রাক গুলো সিএনজি, অটোরিকশা, ব্যাটারীচালিত অটোরিকশাকে কোন পাত্তা দেয় না। এই ট্রাকগুলোর কারনে সড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হয়।
ভাটোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাকিব জানান, বালু উড়ে ঘরে ঢুকে। জানলা দরজা সব সময় বন্ধ রাখতে হয়। বাইরে ভেজা কাপড় শুকানো যায় না বালুর কারনে। আমরা অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারি না। কখন দুর্ঘটনা ঘটে সেই আতঙ্কে থাকি। এখন এই সড়কে ভয় কাজ করে চলাচল করতে।
এ বিষযে সওজ,সড়ক বিভাগ,রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হাকিমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগায়োগ করা হলে মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তিনার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।