ঢাকা ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে বানের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি-মৎস্য খাত

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪ ২০ বার পড়া হয়েছে

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। ক্ষয়ক্ষতি মুখে পড়েছে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, গ্রামীণ সড়কসহ ফসলি জমি ও ছোট বড় পুকুরগুলো।

আর এবারের বানের পানিতে জেলার কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষিতে ৪৯ হাজার ৪ শত ৮২ হেক্টর জমির ধান ও ফসল নষ্ট হয়েছে এবং মৎস্য খাতে ১ হাজার ৬শত ৫০টি পুকুর ও দিঘীর ২শত ১০ মেট্রিক টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেখানকার প্রান্তিক মানুষরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের আব্দুর জালাল বলেন, আমি গরিব মানুষ, সিএনজি অটোরিকশা চালাই। কিছু টাকা জমিয়ে ও কিছু ঋণ করে আমার দুটি পুকুরে আশি হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে ছিলাম। পোনাগুলো বড় হয়েছিল। কিন্তু এবারের বানের পানি সব নিয়ে গেছে।

রাজনগরের মেদিনীমহল এলাকার আখলাক মিয়া বলেন, ২০ শতক ফসলি জমিতে পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এবারের বন্যায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ সিরাজী বলেন, জেলার ১ হাজার ৬শ ৫০টি পুকুর ও দিঘীর ২শ ১০ মেট্রিক টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, এমন তথ্য থাকলেও এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখনো অনেকে তথ্য দেয়নি। পুরো তথ্য পেলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, আশঙ্কা করা হচ্ছে এবারের বন্যায় ৪৯ হাজার ৪শত ৮২ হেক্টর জমির ধান ও ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে ফসলের প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হয়নি। বেশিরভাগ ঘর-বাড়ি থেকে পানি সরে গেলেও ফসলি জমিতে পানি রয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, আপাতত বন্যা ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আবাসন ঠিক করতে সহযোগিতা করার ব্যাপারে আমরা চিন্তা–ভাবনা করছি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৩ জন। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন ১০ হাজার ৯১৭ জন। বন্যার্তদের মধ্যে ৮২৬ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মৌলভীবাজারে বানের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি-মৎস্য খাত

আপডেট সময় : ১১:৪৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। ক্ষয়ক্ষতি মুখে পড়েছে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, গ্রামীণ সড়কসহ ফসলি জমি ও ছোট বড় পুকুরগুলো।

আর এবারের বানের পানিতে জেলার কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষিতে ৪৯ হাজার ৪ শত ৮২ হেক্টর জমির ধান ও ফসল নষ্ট হয়েছে এবং মৎস্য খাতে ১ হাজার ৬শত ৫০টি পুকুর ও দিঘীর ২শত ১০ মেট্রিক টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেখানকার প্রান্তিক মানুষরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের আব্দুর জালাল বলেন, আমি গরিব মানুষ, সিএনজি অটোরিকশা চালাই। কিছু টাকা জমিয়ে ও কিছু ঋণ করে আমার দুটি পুকুরে আশি হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে ছিলাম। পোনাগুলো বড় হয়েছিল। কিন্তু এবারের বানের পানি সব নিয়ে গেছে।

রাজনগরের মেদিনীমহল এলাকার আখলাক মিয়া বলেন, ২০ শতক ফসলি জমিতে পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এবারের বন্যায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ সিরাজী বলেন, জেলার ১ হাজার ৬শ ৫০টি পুকুর ও দিঘীর ২শ ১০ মেট্রিক টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, এমন তথ্য থাকলেও এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এখনো অনেকে তথ্য দেয়নি। পুরো তথ্য পেলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, আশঙ্কা করা হচ্ছে এবারের বন্যায় ৪৯ হাজার ৪শত ৮২ হেক্টর জমির ধান ও ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে ফসলের প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হয়নি। বেশিরভাগ ঘর-বাড়ি থেকে পানি সরে গেলেও ফসলি জমিতে পানি রয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, আপাতত বন্যা ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আবাসন ঠিক করতে সহযোগিতা করার ব্যাপারে আমরা চিন্তা–ভাবনা করছি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৩ জন। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন ১০ হাজার ৯১৭ জন। বন্যার্তদের মধ্যে ৮২৬ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।