ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে গোদাগাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন বিএনপি হলো জনগণের আস্থার দল, জণগণের পাশে ছিল আছে থাকবে : শরীফ উদ্দিন সাবেক ৩ সিইসি ও কমিশনারদের নামে মামলা করবে বিএনপি সরকারকে চাপে ফেলতে সীমান্তে পুশ ইন করছে ভারত: ফখরুল খালেদা জিয়ার সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সস্ত্রীক সাক্ষাৎ আ.লীগকে নিষিদ্ধ করিনি, ভোটে থাকবে কি না সিদ্ধান্ত ইসির: ড. ইউনূস ইসরাইলি হামলায় ইরানে নিহত ৪৩০ ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৩৫২ গোদাগাড়ীতে পচা-বাসি খাবার বিক্রি ও খাবারে ক্ষতিকর কেমিকেল, তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা সুষ্ঠু নির্বাচন সরকারের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয় : সিইসি

মিয়ানমারে ভিক্ষুসহ ২২ জনকে হত্যা, অভিযোগ সেনার বিরুদ্ধে

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

মিয়ানমারে গত সপ্তাহে তিন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ অন্তত ২২ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সামরিক বাহিনীকেই দায়ী করছেন সেনাশাসনের বিরোধীরা।

এক চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহের এই হত্যাকাণ্ডে সামরিক বাহিনীকে দায়ী করছেন জান্তা বিরোধীরা।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির দক্ষিণের শান রাজ্যের পিনলাউং অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই সংঘাতে বেসামরিক কোনো নাগরিক হতাহতের ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন মুখপাত্র জাও মিন টুন।

এক বিবৃতিতে টুন দাবি করেন, নান নিয়েন্ত গ্রামের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সেনাবাহিনী পৌঁছানোর পর সেখানে কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স- কেএনডিএফ এবং আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালায়।

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা যখন এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে, তখন কিছু গ্রামবাসী মারা যান, অনেকে আহত হন।’

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জাও মিন টুনকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। কেএনডিএফ এর মুখপাত্র দাবি করেছেন, তাদের যোদ্ধারা রোববার নান নিয়েন্ত গ্রামে ঢোকার পর একটি বৌদ্ধমন্দিরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবস্থায় মরদেহগুলো দেখতে পায়।

কেএনডিএফ এবং আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপ কারেন্নি রেভোল্যুশন ইউনিয়ন- কেআরইউ কিছু ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ করেছে। সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে, মরদেহগুলোতে শরীর এবং মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে, মন্দিরের দেয়ালেও গুলির দাগ রয়েছে। বিদ্রোহীদের দাবিও নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামে পরিচিত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরোধী ছায়া সরকারের সদস্য ড. ইয়ে জাও মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করেছেন। তার তথ্যমতে, খুব কাছ থেকে সেমি-অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মরদেহগুলোর আশেপাশে কোনো সামরিক পোশাক, অস্ত্র বা গুলি পাওয়া যায়নি। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে তারা বেসামরিক নাগরিক।’

নিহতদের মধ্যে তিন জনের গায়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের গেরুয়া রংয়ের পোশাক ছিল বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু সব মরদেহই নান নিয়েন মন্দির চত্বরের মধ্যে পাওয়া গেছে, ফলে ধরে নেয়া যায় যে এটি একটি বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড৷’

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিও মিন বলেছেন, গত দুই সপ্তাহে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার এমন অন্তত চারটি ঘটনা ঘটিয়েছে সামরিক জান্তা।

একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে বেসামরিক জনগণকে টার্গেটে পরিণত করেছে জান্তা সরকার৷ এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ।’

তবে বেসামরিক নাগরিকের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জান্তা সরকার তাদের এই অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন’ বলে দাবি করেছে।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস এর তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচিত সরকারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে অন্তত তিন হাজার ১৩৭ জন মানুষ মারা গেছেন সামরিক বাহিনীর হাতে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘও।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মিয়ানমারে ভিক্ষুসহ ২২ জনকে হত্যা, অভিযোগ সেনার বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

মিয়ানমারে গত সপ্তাহে তিন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ অন্তত ২২ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সামরিক বাহিনীকেই দায়ী করছেন সেনাশাসনের বিরোধীরা।

এক চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহের এই হত্যাকাণ্ডে সামরিক বাহিনীকে দায়ী করছেন জান্তা বিরোধীরা।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির দক্ষিণের শান রাজ্যের পিনলাউং অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই সংঘাতে বেসামরিক কোনো নাগরিক হতাহতের ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন মুখপাত্র জাও মিন টুন।

এক বিবৃতিতে টুন দাবি করেন, নান নিয়েন্ত গ্রামের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সেনাবাহিনী পৌঁছানোর পর সেখানে কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স- কেএনডিএফ এবং আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালায়।

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা যখন এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে, তখন কিছু গ্রামবাসী মারা যান, অনেকে আহত হন।’

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জাও মিন টুনকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। কেএনডিএফ এর মুখপাত্র দাবি করেছেন, তাদের যোদ্ধারা রোববার নান নিয়েন্ত গ্রামে ঢোকার পর একটি বৌদ্ধমন্দিরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবস্থায় মরদেহগুলো দেখতে পায়।

কেএনডিএফ এবং আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপ কারেন্নি রেভোল্যুশন ইউনিয়ন- কেআরইউ কিছু ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ করেছে। সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে, মরদেহগুলোতে শরীর এবং মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে, মন্দিরের দেয়ালেও গুলির দাগ রয়েছে। বিদ্রোহীদের দাবিও নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামে পরিচিত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরোধী ছায়া সরকারের সদস্য ড. ইয়ে জাও মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করেছেন। তার তথ্যমতে, খুব কাছ থেকে সেমি-অটোমেটিক অস্ত্র দিয়ে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মরদেহগুলোর আশেপাশে কোনো সামরিক পোশাক, অস্ত্র বা গুলি পাওয়া যায়নি। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে তারা বেসামরিক নাগরিক।’

নিহতদের মধ্যে তিন জনের গায়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের গেরুয়া রংয়ের পোশাক ছিল বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু সব মরদেহই নান নিয়েন মন্দির চত্বরের মধ্যে পাওয়া গেছে, ফলে ধরে নেয়া যায় যে এটি একটি বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড৷’

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিও মিন বলেছেন, গত দুই সপ্তাহে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার এমন অন্তত চারটি ঘটনা ঘটিয়েছে সামরিক জান্তা।

একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে বেসামরিক জনগণকে টার্গেটে পরিণত করেছে জান্তা সরকার৷ এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ।’

তবে বেসামরিক নাগরিকের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জান্তা সরকার তাদের এই অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন’ বলে দাবি করেছে।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস এর তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচিত সরকারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে অন্তত তিন হাজার ১৩৭ জন মানুষ মারা গেছেন সামরিক বাহিনীর হাতে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে জাতিসংঘও।