ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহারণের অপেক্ষা, কার দখলে যাচ্ছে হোয়াইট হাউজ?

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:১৪:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে

মহারণের প্রস্তুতি শেষ। রাত পোহালেই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্ধারণ করা হবে আগামী চার বছরের জন্যে কে হতে যাচ্ছেন বিশ্বরাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে এই নির্বাচনের দিকে। কারণ এর ওপর অনেক হিসাব-নিকাশ নির্ভর করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় নভেম্বর মাসের প্রথম মঙ্গলবার। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেটা আগামীকাল ৫ নভেম্বর পড়ছে। সমীক্ষাগুলো বলছে, এবারের নির্বাচন কারও জন্যই সহজ হবে না। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বনাম রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। টান টান উত্তেজনার মধ্যে কাটছে শেষ মুহূর্তগুলো। নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না কারো ব্যাপারেই। দুজনেরই যে কেউ হাসতে পারেন শেষ হাসি।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত দুই প্রার্থী। এর মধ্যে রোববার (৩ নভেম্বর) মিশিগানে প্রচারণার সময় গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। আরব আমেরিকানদের ভোটারদের সমর্থন পেতেই এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

কমলা বলেন, গাজায় মৃত্যু ও ধ্বংসের মাত্রা এবং লেবাননে বেসামরিক হতাহত ও বাস্তুচ্যুত পরিস্থিতির কারণে এ বছরটি কঠিন ছিল। ক্ষমতায় এলে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইসরায়েলের নিরাপত্তার কথাও উঠে আসে কমলার বক্তব্যে।

একই দিন পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচারণায় অংশ নেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জো বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, ব্যর্থতার জন্য ডেমোক্র্যাটদের লজ্জিত হওয়া উচিত। রিপাবলিকান পার্টি জিতলে আগামী চার বছর স্বর্ণযুগে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

মুখ্য ভূমিকা ইলেক্টোরাল কলেজের

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, কমলা ও ট্রাম্পের মধ্যে কে জয়ী হবেন, তা ভোটারদের সরাসরি ভোটে নির্ধারিত হবে না। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে (ফেডারেল) নির্বাচনী লড়াইয়ের বদলে জয়ী-পরাজিত নির্ধারিত হবে একেকটি প্রদেশের নির্বাচনী লড়াইয়ের মাধ্যমে।

TT1

আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই প্রদেশের সব কটি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। যেমন, টেক্সাসে ৪০ জন ইলেক্টর রয়েছেন। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এই প্রদেশে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রদেশের ৪০ জন ইলেক্টরকে জিতে নেবেন। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮।

মাইনে এবং নেব্রাসকা এই দুটি প্রদেশ বাদে বাকি সব রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট যোগ করলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। সেই প্রার্থীর রানিং মেট হয়ে যাবেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট। আগামী ১৩ ডিসেম্বর ইলেক্টরেরা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক রাজধানীতে জড়ো হয়ে তাদের দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্ব শেষ করবেন।

ভোটদানের পদ্ধতি

আমেরিকায় প্রতিটি প্রদেশে ভোটের পদ্ধতির নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তা পরস্পরের থেকে আলাদা। মোটের ওপর ভোটারেরা তিনটি প্রাথমিক পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট দেন—

১. হ্যান্ডমার্ক করা কাগজের ব্যালট: প্রেসিডেন্ট ভোটে সবচেয়ে প্রচলিত এবং সহজ পদ্ধতি, প্রায় ৭০ শতাংশ কাগজের ব্যালট ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন।

২. ব্যালট মার্কিং ডিভাইস (বিএমডি): ২৫ শতাংশেরও বেশি ভোটার ব্যবহার করেন এই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ভোটদান পদ্ধতি। ভোটারদের একটি স্ক্রিনে বিকল্প নির্বাচন করতে দেয় এবং তারপর তাদের পছন্দ নিশ্চিত করতে একটি কাগজের ব্যালট প্রিন্ট করা হয় এই ব্যবস্থায়। ‘হেল্প আমেরিকা ভোট অ্যাক্ট’ (হাভা) মেনে চালু করা এই পদ্ধতিতে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ পদ্ধতিও রয়েছে।

৩. ডাইরেক্ট রেকর্ডিং ইলেক্ট্রনিক (ডিআরই): এই বৈদ্যুতিন যন্ত্রনির্ভর পদ্ধতি অনেকটা আমাদের ইভিএমের মতোই। কোনো কাগজ ছাড়া ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় জনতার রায় ‘মেমোরি’-বন্দি করা হয়। লুইজ়িয়ানা এবং নেভাদায় চালু এবং পদ্ধতিতে মোটের ওপর ৫ শতাংশ ভোটার আস্থাশীল। কিন্তু গত ভোটে নেভাদায়া এই পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধায় এবার ভোটদানের হার কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

TT3

ভোটগণনা হয় কীভাবে?

হাতে-চিহ্নিত কাগজের ব্যালট এবং বিএমডি-তে দেওয়া ভোটগুলো সাধারণত ‘অপটিক্যাল স্ক্যানার’ ব্যবহার করে স্ক্যান করা হয়। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফলাফল নথিভুক্ত করা যায়। এই প্রক্রিয়াটি একটি প্রাদেশিক-স্তরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করেন। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণনার পাশাপাশি প্রয়োজনে হাতে ভোটগণনারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আগাম ভোটের ক্ষেত্রে চালু ‘মেইল ইন ব্যালট’ ব্যবস্থায় দেওয়া ভোটের বৈধতা যাচাই এবং গণনার প্রক্রিয়াও রয়েছে কয়েকটি প্রদেশে। প্রাদেশিক নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ফেডেরাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করতে হয়।

জরিপে কে এগিয়ে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই চলছে নানা জরিপ। একেক জরিপের ফল একেক রকম আসছে। বিভিন্ন জরিপে দুজনের পাল্লাই ভারী দেখানো হচ্ছে। তবে সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের সব সুইং স্টেটে চালানো এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। অ্যাটলাস ইন্টেল পরিচালিত সর্বশেষ জরিপে এ তথ্য জানানো হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৪৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন। জরিপ বলছে, সুইং স্টেটগুলোতে ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিসের চেয়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প।

নভেম্বরের প্রথম দুই দিনে এই জরিপ করা হয়। এতে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই হাজার ৫০০ ভোটার। যাদের বেশিরভাগই নারী।

সুইং স্টেটে চালানো আরেকটি জরিপে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সব দোদুল্যমান রাজ্য যেমন অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিনে জয়ী হতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিন ধরনের রাজ্যের প্রভাব থাকে। রেড স্টেটস, ব্লু স্টেটস এবং সুইং স্টেটস। রেড স্টেটস যেখানে ১৯৮০ সাল থেকে রিপাবলিকানরা ধারাবাহিকভাবে জিতেছে, অন্যদিকে ব্লু স্টেটস যেখানে ১৯৯২ সাল থেকে ডেমোক্র্যাটরা আধিপত্য বিস্তার করে আসছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মহারণের অপেক্ষা, কার দখলে যাচ্ছে হোয়াইট হাউজ?

আপডেট সময় : ১১:১৪:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

মহারণের প্রস্তুতি শেষ। রাত পোহালেই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্ধারণ করা হবে আগামী চার বছরের জন্যে কে হতে যাচ্ছেন বিশ্বরাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে এই নির্বাচনের দিকে। কারণ এর ওপর অনেক হিসাব-নিকাশ নির্ভর করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় নভেম্বর মাসের প্রথম মঙ্গলবার। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেটা আগামীকাল ৫ নভেম্বর পড়ছে। সমীক্ষাগুলো বলছে, এবারের নির্বাচন কারও জন্যই সহজ হবে না। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বনাম রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। টান টান উত্তেজনার মধ্যে কাটছে শেষ মুহূর্তগুলো। নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না কারো ব্যাপারেই। দুজনেরই যে কেউ হাসতে পারেন শেষ হাসি।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত দুই প্রার্থী। এর মধ্যে রোববার (৩ নভেম্বর) মিশিগানে প্রচারণার সময় গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। আরব আমেরিকানদের ভোটারদের সমর্থন পেতেই এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

কমলা বলেন, গাজায় মৃত্যু ও ধ্বংসের মাত্রা এবং লেবাননে বেসামরিক হতাহত ও বাস্তুচ্যুত পরিস্থিতির কারণে এ বছরটি কঠিন ছিল। ক্ষমতায় এলে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইসরায়েলের নিরাপত্তার কথাও উঠে আসে কমলার বক্তব্যে।

একই দিন পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচারণায় অংশ নেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জো বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, ব্যর্থতার জন্য ডেমোক্র্যাটদের লজ্জিত হওয়া উচিত। রিপাবলিকান পার্টি জিতলে আগামী চার বছর স্বর্ণযুগে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

মুখ্য ভূমিকা ইলেক্টোরাল কলেজের

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, কমলা ও ট্রাম্পের মধ্যে কে জয়ী হবেন, তা ভোটারদের সরাসরি ভোটে নির্ধারিত হবে না। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে (ফেডারেল) নির্বাচনী লড়াইয়ের বদলে জয়ী-পরাজিত নির্ধারিত হবে একেকটি প্রদেশের নির্বাচনী লড়াইয়ের মাধ্যমে।

TT1

আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই প্রদেশের সব কটি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। যেমন, টেক্সাসে ৪০ জন ইলেক্টর রয়েছেন। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এই প্রদেশে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রদেশের ৪০ জন ইলেক্টরকে জিতে নেবেন। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮।

মাইনে এবং নেব্রাসকা এই দুটি প্রদেশ বাদে বাকি সব রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট যোগ করলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। সেই প্রার্থীর রানিং মেট হয়ে যাবেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট। আগামী ১৩ ডিসেম্বর ইলেক্টরেরা সংশ্লিষ্ট প্রাদেশিক রাজধানীতে জড়ো হয়ে তাদের দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্ব শেষ করবেন।

ভোটদানের পদ্ধতি

আমেরিকায় প্রতিটি প্রদেশে ভোটের পদ্ধতির নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তা পরস্পরের থেকে আলাদা। মোটের ওপর ভোটারেরা তিনটি প্রাথমিক পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট দেন—

১. হ্যান্ডমার্ক করা কাগজের ব্যালট: প্রেসিডেন্ট ভোটে সবচেয়ে প্রচলিত এবং সহজ পদ্ধতি, প্রায় ৭০ শতাংশ কাগজের ব্যালট ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন।

২. ব্যালট মার্কিং ডিভাইস (বিএমডি): ২৫ শতাংশেরও বেশি ভোটার ব্যবহার করেন এই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ভোটদান পদ্ধতি। ভোটারদের একটি স্ক্রিনে বিকল্প নির্বাচন করতে দেয় এবং তারপর তাদের পছন্দ নিশ্চিত করতে একটি কাগজের ব্যালট প্রিন্ট করা হয় এই ব্যবস্থায়। ‘হেল্প আমেরিকা ভোট অ্যাক্ট’ (হাভা) মেনে চালু করা এই পদ্ধতিতে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ পদ্ধতিও রয়েছে।

৩. ডাইরেক্ট রেকর্ডিং ইলেক্ট্রনিক (ডিআরই): এই বৈদ্যুতিন যন্ত্রনির্ভর পদ্ধতি অনেকটা আমাদের ইভিএমের মতোই। কোনো কাগজ ছাড়া ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় জনতার রায় ‘মেমোরি’-বন্দি করা হয়। লুইজ়িয়ানা এবং নেভাদায় চালু এবং পদ্ধতিতে মোটের ওপর ৫ শতাংশ ভোটার আস্থাশীল। কিন্তু গত ভোটে নেভাদায়া এই পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধায় এবার ভোটদানের হার কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

TT3

ভোটগণনা হয় কীভাবে?

হাতে-চিহ্নিত কাগজের ব্যালট এবং বিএমডি-তে দেওয়া ভোটগুলো সাধারণত ‘অপটিক্যাল স্ক্যানার’ ব্যবহার করে স্ক্যান করা হয়। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফলাফল নথিভুক্ত করা যায়। এই প্রক্রিয়াটি একটি প্রাদেশিক-স্তরের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করেন। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণনার পাশাপাশি প্রয়োজনে হাতে ভোটগণনারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আগাম ভোটের ক্ষেত্রে চালু ‘মেইল ইন ব্যালট’ ব্যবস্থায় দেওয়া ভোটের বৈধতা যাচাই এবং গণনার প্রক্রিয়াও রয়েছে কয়েকটি প্রদেশে। প্রাদেশিক নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ফেডেরাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করতে হয়।

জরিপে কে এগিয়ে?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই চলছে নানা জরিপ। একেক জরিপের ফল একেক রকম আসছে। বিভিন্ন জরিপে দুজনের পাল্লাই ভারী দেখানো হচ্ছে। তবে সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের সব সুইং স্টেটে চালানো এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। অ্যাটলাস ইন্টেল পরিচালিত সর্বশেষ জরিপে এ তথ্য জানানো হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৪৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন। জরিপ বলছে, সুইং স্টেটগুলোতে ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিসের চেয়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প।

নভেম্বরের প্রথম দুই দিনে এই জরিপ করা হয়। এতে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই হাজার ৫০০ ভোটার। যাদের বেশিরভাগই নারী।

সুইং স্টেটে চালানো আরেকটি জরিপে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সব দোদুল্যমান রাজ্য যেমন অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিনে জয়ী হতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিন ধরনের রাজ্যের প্রভাব থাকে। রেড স্টেটস, ব্লু স্টেটস এবং সুইং স্টেটস। রেড স্টেটস যেখানে ১৯৮০ সাল থেকে রিপাবলিকানরা ধারাবাহিকভাবে জিতেছে, অন্যদিকে ব্লু স্টেটস যেখানে ১৯৯২ সাল থেকে ডেমোক্র্যাটরা আধিপত্য বিস্তার করে আসছে।