ঢাকা ০৪:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাকাশে নতুন সৌরজগতের সন্ধান!

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৬:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৬২ বার পড়া হয়েছে

মহাকাশ সম্পর্কে মানুষ যতটুকু জেনেছে তার চেয়েও বেশি অজানাই রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন অজানাকে জানতে। তাদের দীর্ঘদিনের প্রশ্ন এই সুবিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে আমরা কি একা ? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে নতুন একটি আবিষ্কার সেই কৌতূহলে বাড়িয়ে দিয়েছে।

মহাকাশে নজর রাখার কাজে কেপলার টেলিস্কোপের ব্যবহার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার। নাসার অবসরপ্রাপ্ত সেই টেলিস্কোপ সাতটি গ্রহ-সম্বলিত একটি যুগান্তকারী জগতের সন্ধান পেয়েছে। দেখা গেছে, প্রতিটি গ্রহ তাদের কেন্দ্রস্থানীয় নক্ষত্রের কাছ থেকে আমাদের সৌরজগতের যে কোনও গ্রহের চেয়ে বেশি দীপ্তিশীল তাপ গ্রহণ করছে।

কেপলার-৩৮৫ নামের এই অসাধারণ সিস্টেমটি এককথায় অনন্য। কারণ, নতুন আবিষ্কৃত এই সাতটি গ্রহই পৃথিবীর চেয়ে বড়, কিন্তু নেপচুনের চেয়ে ছোট। যা আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশিদের থেকে আলাদা করে রেখেছে।

কেপলার-৩৮৫ হল সেই অল্প পরিচিত প্ল্যানেট সিস্টেম বা গ্রহমণ্ডল, যার মধ্যে ছয়টিরও বেশি গ্রহকে ইতিমধ্যেই যাচাই করা হয়েছে বা গ্রহ-মর্যাদার (টেলিস্কোপে ধরা পড়া সম্ভাব্য গ্রহ, যার অস্তিত্ব এখনও প্রমাণিত হয়নি। অন্যান্য দুইটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের পর তবে গ্রহ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়) দাবিদার হয়ে রয়েছে।

এই অসাধারণ আবিষ্কারটি নতুন কেপলার ক্যাটালগের মধ্যে রয়েছে, যাতে ৭০০-র বেশি মাল্টি-প্ল্যানেট সিস্টেম সহ প্রায় ৪ হাজার ৪০০টি প্ল্যানেট ক্যান্ডিডেট বা গ্রহ-প্রার্থী রয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত নাসার এমেস রিসার্স সেন্টারের গবেষক তথা বিজ্ঞানী জ্যাক লিসুরের দাবি, কেপলার গ্রহমণ্ডলের সম্ভাব্য গ্রহ এবং এখনও পর্যন্ত তাতে মেলা সব উপাদানের নিখুঁত তালিকা তৈরি করেছেন তারা।

কেপলার-৩৮৫ সিস্টেমের কেন্দ্রস্থলে সূর্যের মতো একটি নক্ষত্র রয়েছে, যা আমাদের সূর্যের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বড় এবং ৫ শতাংশ বেশি গরম। দুইটি অভ্যন্তরীণ গ্রহ, পৃথিবীর থেকে যা সামান্য বড়, সম্ভবত পাথুরে এবং পাতলা বায়ুস্তর ধারণ করতে পারে। অন্য পাঁচটি গ্রহ যথেষ্ট বড়, প্রতিটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর আকারের প্রায় দ্বিগুণ এবং মোটা বায়ুমণ্ডলে আবৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রায় ৯ বছর ধরে গ্রহদের নিয়ে ফলপ্রসূ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৮ সালে শেষ হয় নাসার কেপলার মিশন। মহাকাশ-পর্যবেক্ষণের এই টেলিস্কোপ হাজার হাজার গ্রহের সন্ধান পেয়েছে। অনেকেরই নিজস্ব নাম আছে। এই কেপলার টেলিস্কোপের হাত ধরে জমা হয়েছে বহু তথ্য, যা নিয়ে এখনও চর্চা চলছে। সেই কাজ করতে গিয়েই, কেপলারের তথ্য-মহাসাগর থেকে খোঁজ মিলেছে সাত গ্রহের মণ্ডল। যার নক্ষত্রের নাম কেপলার-৩৮৫। ৪ হাজার ৬৭০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মহাকাশে নতুন সৌরজগতের সন্ধান!

আপডেট সময় : ০৪:৪৬:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩

মহাকাশ সম্পর্কে মানুষ যতটুকু জেনেছে তার চেয়েও বেশি অজানাই রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন অজানাকে জানতে। তাদের দীর্ঘদিনের প্রশ্ন এই সুবিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে আমরা কি একা ? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে নতুন একটি আবিষ্কার সেই কৌতূহলে বাড়িয়ে দিয়েছে।

মহাকাশে নজর রাখার কাজে কেপলার টেলিস্কোপের ব্যবহার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার। নাসার অবসরপ্রাপ্ত সেই টেলিস্কোপ সাতটি গ্রহ-সম্বলিত একটি যুগান্তকারী জগতের সন্ধান পেয়েছে। দেখা গেছে, প্রতিটি গ্রহ তাদের কেন্দ্রস্থানীয় নক্ষত্রের কাছ থেকে আমাদের সৌরজগতের যে কোনও গ্রহের চেয়ে বেশি দীপ্তিশীল তাপ গ্রহণ করছে।

কেপলার-৩৮৫ নামের এই অসাধারণ সিস্টেমটি এককথায় অনন্য। কারণ, নতুন আবিষ্কৃত এই সাতটি গ্রহই পৃথিবীর চেয়ে বড়, কিন্তু নেপচুনের চেয়ে ছোট। যা আমাদের নিকটবর্তী প্রতিবেশিদের থেকে আলাদা করে রেখেছে।

কেপলার-৩৮৫ হল সেই অল্প পরিচিত প্ল্যানেট সিস্টেম বা গ্রহমণ্ডল, যার মধ্যে ছয়টিরও বেশি গ্রহকে ইতিমধ্যেই যাচাই করা হয়েছে বা গ্রহ-মর্যাদার (টেলিস্কোপে ধরা পড়া সম্ভাব্য গ্রহ, যার অস্তিত্ব এখনও প্রমাণিত হয়নি। অন্যান্য দুইটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের পর তবে গ্রহ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়) দাবিদার হয়ে রয়েছে।

এই অসাধারণ আবিষ্কারটি নতুন কেপলার ক্যাটালগের মধ্যে রয়েছে, যাতে ৭০০-র বেশি মাল্টি-প্ল্যানেট সিস্টেম সহ প্রায় ৪ হাজার ৪০০টি প্ল্যানেট ক্যান্ডিডেট বা গ্রহ-প্রার্থী রয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত নাসার এমেস রিসার্স সেন্টারের গবেষক তথা বিজ্ঞানী জ্যাক লিসুরের দাবি, কেপলার গ্রহমণ্ডলের সম্ভাব্য গ্রহ এবং এখনও পর্যন্ত তাতে মেলা সব উপাদানের নিখুঁত তালিকা তৈরি করেছেন তারা।

কেপলার-৩৮৫ সিস্টেমের কেন্দ্রস্থলে সূর্যের মতো একটি নক্ষত্র রয়েছে, যা আমাদের সূর্যের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বড় এবং ৫ শতাংশ বেশি গরম। দুইটি অভ্যন্তরীণ গ্রহ, পৃথিবীর থেকে যা সামান্য বড়, সম্ভবত পাথুরে এবং পাতলা বায়ুস্তর ধারণ করতে পারে। অন্য পাঁচটি গ্রহ যথেষ্ট বড়, প্রতিটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর আকারের প্রায় দ্বিগুণ এবং মোটা বায়ুমণ্ডলে আবৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রায় ৯ বছর ধরে গ্রহদের নিয়ে ফলপ্রসূ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৮ সালে শেষ হয় নাসার কেপলার মিশন। মহাকাশ-পর্যবেক্ষণের এই টেলিস্কোপ হাজার হাজার গ্রহের সন্ধান পেয়েছে। অনেকেরই নিজস্ব নাম আছে। এই কেপলার টেলিস্কোপের হাত ধরে জমা হয়েছে বহু তথ্য, যা নিয়ে এখনও চর্চা চলছে। সেই কাজ করতে গিয়েই, কেপলারের তথ্য-মহাসাগর থেকে খোঁজ মিলেছে সাত গ্রহের মণ্ডল। যার নক্ষত্রের নাম কেপলার-৩৮৫। ৪ হাজার ৬৭০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এটি।