ঢাকা ০৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫ লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগ

ভুল কীটনাশকে কপাল পুড়ল কৃষকের

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪ বার পড়া হয়েছে

শেরপুরে ভুল কীটনাশক দিয়ে এক বিঘা জমির বেগুনের ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন আবুল হোসেন নামের এক কৃষক।

সদর উপজেলার বলাইরচর কান্দাপাড়া গ্রামের ওই কৃষক গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার দোকান থেকে বেগুনের পোকা দমনের কীটনাশক চাইলে সে আগাছা দমনের কীটনাশক দেয়। পরবর্তীতে কীটনাশক প্রয়োগে মরে যায় সবগুলো বেগুনের গাছ। এতে অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগ করেন ওই কৃষক। এ ঘটনায় স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রাম্য শালিস বসলেও উল্টো নানা ধরনের হুমকির শিকার হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারটি।

গ্রামবাসীরা বলছেন, ওই কীটনাশক ব্যবসায়ী একজন মুদি দোকানদার অথচ কীটনাশকসহ নানা ধরণের বালাইনাশক বিক্রি করে এলাকার কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে।

জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার বলাইরচর কান্দাপাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আবুল হোসেন। তিনি প্রতি বছরের মতো এবারও এক বিঘা জমিতে উন্নত জাতের বেগুনের চাষ করেছেন। তার ক্ষেতের প্রায় সব গাছেই ঝুলছে বেগুন। ইতোমধ্যে বেগুন বিক্রিও শুরু করেছেন। তবে মাঝে মধ্যে দু’একটি বেগুন গাছে দেখা দেয় পোকার আক্রমণ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার কাছে বেগুন ক্ষেতের জন্য পোকা দমনের বালাইনাশক চাইলে সে তাকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মডেল নামে আগাছা দমনের কীটনাশক দেয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমি পড়াশোনা না জানা মানুষ। বেগুনে পোকা হয়েছে। তাই পোকা দমনের কীটনাশক চাইলে সে যে কিটনাশক দিয়েছে আমি সেটাই ক্ষেতে স্প্রে করেছি। সকালে দেখি সব গাছ মরা। ধারদেনা করে বেগুনের চাষ করেছিলাম। বেগুনের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় আমার অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, স্থানীয় লোকজন ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে উঠে আসে এই চিত্র।

আবুল হোসেনের মা অমেলা খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে ক্ষতিপূরণ দিবে বলে ডেকে নিয়ে উল্টা মারধর করেছে। আবার আমাদের বাড়িতে হামলা করার হুমকি দিচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক মালেক মিয়া বলেন, দিন রাত পরিশ্রম করে তৈরি করা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেল ব্যবসায়ীর খামখেয়ালিপনায়। ওই কৃষকের ক্ষেত থেকে প্রতিদিন এক হতে দুই মন করে বেগুন তুলে বিক্রি করা যেত। অন্তত আরও দুই মাস বিক্রি করতেন বেগুন। এই বেগুন বিক্রির টাকা দিয়ে সংসারের খরচ করেও ধার দেনা পরিশেধ করতেন তিনি। আমরাও বিচার চাই।

এদিকে কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়া বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই কীটনাশক দিইনি। তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে।

শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা কৃষকদের এই বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করি। যাতে কোনো কৃষক প্রতারিত না হয়। তাছাড়া বেগুনের ক্ষেতে আগাছা দমনের কীটনাশক দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে কীটনাশক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৫ লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগ

ভুল কীটনাশকে কপাল পুড়ল কৃষকের

আপডেট সময় : ১১:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শেরপুরে ভুল কীটনাশক দিয়ে এক বিঘা জমির বেগুনের ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন আবুল হোসেন নামের এক কৃষক।

সদর উপজেলার বলাইরচর কান্দাপাড়া গ্রামের ওই কৃষক গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার দোকান থেকে বেগুনের পোকা দমনের কীটনাশক চাইলে সে আগাছা দমনের কীটনাশক দেয়। পরবর্তীতে কীটনাশক প্রয়োগে মরে যায় সবগুলো বেগুনের গাছ। এতে অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগ করেন ওই কৃষক। এ ঘটনায় স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রাম্য শালিস বসলেও উল্টো নানা ধরনের হুমকির শিকার হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারটি।

গ্রামবাসীরা বলছেন, ওই কীটনাশক ব্যবসায়ী একজন মুদি দোকানদার অথচ কীটনাশকসহ নানা ধরণের বালাইনাশক বিক্রি করে এলাকার কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে।

জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার বলাইরচর কান্দাপাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আবুল হোসেন। তিনি প্রতি বছরের মতো এবারও এক বিঘা জমিতে উন্নত জাতের বেগুনের চাষ করেছেন। তার ক্ষেতের প্রায় সব গাছেই ঝুলছে বেগুন। ইতোমধ্যে বেগুন বিক্রিও শুরু করেছেন। তবে মাঝে মধ্যে দু’একটি বেগুন গাছে দেখা দেয় পোকার আক্রমণ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়ার কাছে বেগুন ক্ষেতের জন্য পোকা দমনের বালাইনাশক চাইলে সে তাকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মডেল নামে আগাছা দমনের কীটনাশক দেয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমি পড়াশোনা না জানা মানুষ। বেগুনে পোকা হয়েছে। তাই পোকা দমনের কীটনাশক চাইলে সে যে কিটনাশক দিয়েছে আমি সেটাই ক্ষেতে স্প্রে করেছি। সকালে দেখি সব গাছ মরা। ধারদেনা করে বেগুনের চাষ করেছিলাম। বেগুনের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় আমার অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, স্থানীয় লোকজন ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে উঠে আসে এই চিত্র।

আবুল হোসেনের মা অমেলা খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে ক্ষতিপূরণ দিবে বলে ডেকে নিয়ে উল্টা মারধর করেছে। আবার আমাদের বাড়িতে হামলা করার হুমকি দিচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক মালেক মিয়া বলেন, দিন রাত পরিশ্রম করে তৈরি করা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেল ব্যবসায়ীর খামখেয়ালিপনায়। ওই কৃষকের ক্ষেত থেকে প্রতিদিন এক হতে দুই মন করে বেগুন তুলে বিক্রি করা যেত। অন্তত আরও দুই মাস বিক্রি করতেন বেগুন। এই বেগুন বিক্রির টাকা দিয়ে সংসারের খরচ করেও ধার দেনা পরিশেধ করতেন তিনি। আমরাও বিচার চাই।

এদিকে কীটনাশক ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়া বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই কীটনাশক দিইনি। তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে।

শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা কৃষকদের এই বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করি। যাতে কোনো কৃষক প্রতারিত না হয়। তাছাড়া বেগুনের ক্ষেতে আগাছা দমনের কীটনাশক দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে কীটনাশক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।