ভারতে মুসলিম শিশুকে উল্টো করে ঝুলিয়ে ‘ইলেকট্রিক শক’!

- আপডেট সময় : ১১:৩২:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫ ২১ বার পড়া হয়েছে
পরনে জিন্সের হাফ প্যান্ট। গায়ে পুরনো টিশার্ট। ছেলেটিকে ঝোলানো রয়েছে উল্টো করে। বাঁধা দুই হাতে দৃশ্যমান বিদ্যুতের তার! খানিক দূরে এক যুবক ওই তারটি বিদ্যুতের প্লাগে গুঁজছেন কিছু ক্ষণ অন্তর।
কেঁপে কেঁপে উঠছে উল্টো করে ঝুলতে থাকা শিশুর শরীর। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কলকাতার অদূরে মহেশতলা পৌরসভা এলাকায় জিন্সের পোশাক রঙ করার একটি কারখানায়।
গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ বছরের ছেলেটিকে। অভিযুক্তেরা সব পালিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মোবাইল চোর সন্দেহে মুসলিম শিশু সামসাদ আলীকে ওই ভাবে নির্যাতন করছিলেন কারখানারই কয়েক জন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক।
শিশুটিকে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারধর এবং বিদ্যুতের ‘শক’ দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শোরগোল শুরু হয়। ‘নির্যাতন’-এর ওই ভিডিও দেখে শিশুটির পরিবার ইসলামপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। একইসঙ্গে মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানাতেও একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
পুলিশ জানায়, যেখানে ওই ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি মহেশতলা পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কানখুলি পূর্বপাড়া এলাকা। শাহেনশাহ নামে শিলিগুড়ির এক বাসিন্দা ওই এলাকায় একটি বাড়িভাড়া করে জিন্সের পোশাক রঙ করার কারখানা চালান।
সেখানে শ্রমিক হিসাবে যে কয়েকজন কাজ করে, তাদের মধ্যে এক জন ইসলামপুরের বাসিন্দা, ১৪ বছরের সামসাদ। ছেলেটির পরিবারের দাবি, মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়।
শুধু তা-ই নয়, ‘ইলেকট্রিক শক’ দেওয়া হয় ওই কিশোরকে। সোমবার থেকে তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ইসলামপুর ছঘরিয়া গ্রামে বসে ছেলের ওই রকম ভিডিও দেখে চমকে যায় পরিবার।
ওই পরিবারের লোকজন জানায়, দেড় মাস আগে সামসাদ এবং তার বড় ভাই আনসার আলীকে এক পরিচিতের মাধ্যমে কলকাতায় কাজ করতে পাঠান তারা।
সামসাদ কারখানার মালিককের মোবাইল চুরি করে বলে অভিযোগ আনা হয়। সামসাদের এক চাচা বলেন, খোঁজ নিয়ে আমরা জানতে পারি, ও মোবাইল চুরি করেনি। অপবাদ দিয়ে ওকে ওই ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।
জানা গেছে, ভিডিও দেখে ইসলামপুর থানার পাটাগোড়া ফাঁড়ির পুলিশের দারস্থ হন সামসাদের পরিবারের সদস্যেরা। তাদের দাবি, ছেলেকে সুস্থ ভাবে বাড়িতে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হোক পুলিশ।
অন্য দিকে, এই ঘটনায় মহেশতলার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। তারা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশু সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর অভিযুক্ত এবং তার সঙ্গীরা পলাতক। তবে শাহেনশাহের পরিবারের এক সদস্যের যুক্তি, ভিডিওটি মজা করার জন্য বানানো হয়েছিল।