ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
- আপডেট সময় : ১১:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪ বার পড়া হয়েছে
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পদ্মা নদীর ভাঙনে ভারতের কাছে হারানো প্রায় ২০০ একর জমির মালিকানা ফিরে পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (পিএসসি) মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সৌজন্য বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিবদমান জমিগুলো ভারত সীমান্তের দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীঘেঁষা চল্লিশপাড়া এলাকায় অবস্থিত। চল্লিশপাড়া বর্ডার আউট পোস্টের (বিওপি) পিলার ১৫৭/এমপি থেকে ৮৫/১০-এস এলাকা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার পদ্মা নদীর ভাঙনে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সীমানা এলোমেলো হয়ে যায়।
বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (পিএসসি) মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, বিবদমান জমি পুনরায় জরিপ করে প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি উভয় দেশের সার্ভেয়ার, বিজিবি ও বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের আনুমানিক ২০০ একর জমি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের আনুমানিক ৪০ একর জমির গরমিল পাওয়া যায়।
গতকাল রোববার দুপুরে বিএসএফের আহ্বানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডির জামালপুর বিওপির সীমান্ত পিলার ১৫২/৭-এস থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিবদমান জমি নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া সীমান্তে হত্যা বন্ধ ও মাদক পাচার রোধে গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিজিবির পক্ষে কুষ্টিয়ার বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (পিএসসি) মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান এবং বিএসএফের পক্ষে রওশনবাগ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট বিক্রম দেব সিং নেতৃত্ব দেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সার্ভেতে বাংলাদেশের পাওনা প্রায় ২০০ একর জমি ও ভারতের পাওনা প্রায় ৪০ একর জমির গরমিল পাওয়া গেছে। যা আগামী অক্টোবরে সুবিধাজনক সময়ে উভয় দেশের সার্ভেয়ার, বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে পুনরায় জরিপ করে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করতে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডাররা একমত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মূলত সীমান্তের বিবদমান অংশটি নদী এলাকা হওয়ায় পদ্মার ভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দুই দেশের সঠিক সীমানা নির্ধারণে জটিলতা ছিল। দুই দেশের প্রচেষ্টায় তা সমাধানে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সঠিক সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তবে জমি বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত কেউ তা ব্যবহার করতে পারবে না।
সীমান্তে বিএসএফকে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান মাহবুব মুর্শেদ। তিনি বলেন, নিরীহ নাগরিকদের সীমান্তে আটক না করা, ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ও নিষিদ্ধ কোনো পণ্য যাতে বাংলাদেশে পাচার হতে না পারে এবং আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সীমান্তবর্তী জনসাধারণ যাতে অবৈধভাবে দুই দেশের সীমান্তের পূজামণ্ডপে যাওয়া-আসা করতে না পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।