ঢাকা ১২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুড়িগঙ্গা দূষিত করছে ২৫১টি অপরিশোধিত পয়ঃনিষ্কাশন সংযোগ!

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:৫০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১৪ বার পড়া হয়েছে

দেশের অন্যতম দূষিত নদী বুড়িগঙ্গার মাত্র ছয় কিলোমিটারের মধ্যে ২৫১টি পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এই দূষণের ৩০-৪০ শতাংশই এই পাইপলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে। সম্প্রতি রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, কামরাঙ্গীরচরের শেখ রাসেল স্কুল থেকে ফরাশগঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত এসব পাইপলাইন থেকে বর্জ্য নির্গত হচ্ছে। গবেষণায় পুরান ঢাকা (বাম তীর) থেকে ১৩৭টি এবং কেরানীগঞ্জ (ডান তীর) থেকে ১১৪টি পয়োনিষ্কাশন লাইন চিহ্নিত করা হয়েছে।

আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্তের মাধ্যমে এসব সংযোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি প্রস্তাব করেন, পাগলা পয়োশোধনাগারে (এসটিপি) এসব পাইপলাইন স্থানান্তর করা হলে ২৫-৩০ কোটি টাকা খরচে এটি সম্পন্ন করা যাবে।

এজাজ আরও জানান, যদি ২৫১টি পয়োনিষ্কাশন সংযোগ বন্ধ করা যায়, তবে বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ কমানো সম্ভব হবে। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, বুড়িগঙ্গার দূষণের প্রধান উৎস হচ্ছে অপরিশোধিত পয়োবর্জ্য, শিল্প বর্জ্য এবং বিভিন্ন বর্জ্য ফেলার স্থান।

অধ্যাপক মজুমদার সতর্ক করেন— পয়োনিষ্কাশন নিয়ন্ত্রণ না করলে নদীর পানি কখনোই পরিষ্কার বা ব্যবহারযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, নদীর তীরে ২৫৭টি বর্জ্য ফেলার পয়েন্ট দূষণের অন্যতম কারণ, যেখানে ডান তীরে ১৪৮টি ও বাম তীরে ১০৯টি রয়েছে। এছাড়া, শিল্প কারখানা থেকে অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ৯৩টি স্থানে।

গবেষণায় তুরাগ ও বালু নদীতেও অতিরিক্ত দূষণের উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। তুরাগ নদী, যা বুড়িগঙ্গার ৯০ শতাংশ পানি সরবরাহ করে, সেখানে দূষণ ক্রমাগত বেড়ে চলছে।

এজাজ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যে, বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর তীরে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন বন্ধ করতে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) মতে, বুড়িগঙ্গা নদী বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে প্রতিদিন ৬০ হাজার ঘনমিটারেরও বেশি বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সূত্র: ইউএনবি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বুড়িগঙ্গা দূষিত করছে ২৫১টি অপরিশোধিত পয়ঃনিষ্কাশন সংযোগ!

আপডেট সময় : ০৪:৫০:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

দেশের অন্যতম দূষিত নদী বুড়িগঙ্গার মাত্র ছয় কিলোমিটারের মধ্যে ২৫১টি পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এই দূষণের ৩০-৪০ শতাংশই এই পাইপলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে। সম্প্রতি রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, কামরাঙ্গীরচরের শেখ রাসেল স্কুল থেকে ফরাশগঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত এসব পাইপলাইন থেকে বর্জ্য নির্গত হচ্ছে। গবেষণায় পুরান ঢাকা (বাম তীর) থেকে ১৩৭টি এবং কেরানীগঞ্জ (ডান তীর) থেকে ১১৪টি পয়োনিষ্কাশন লাইন চিহ্নিত করা হয়েছে।

আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্তের মাধ্যমে এসব সংযোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি প্রস্তাব করেন, পাগলা পয়োশোধনাগারে (এসটিপি) এসব পাইপলাইন স্থানান্তর করা হলে ২৫-৩০ কোটি টাকা খরচে এটি সম্পন্ন করা যাবে।

এজাজ আরও জানান, যদি ২৫১টি পয়োনিষ্কাশন সংযোগ বন্ধ করা যায়, তবে বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ কমানো সম্ভব হবে। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, বুড়িগঙ্গার দূষণের প্রধান উৎস হচ্ছে অপরিশোধিত পয়োবর্জ্য, শিল্প বর্জ্য এবং বিভিন্ন বর্জ্য ফেলার স্থান।

অধ্যাপক মজুমদার সতর্ক করেন— পয়োনিষ্কাশন নিয়ন্ত্রণ না করলে নদীর পানি কখনোই পরিষ্কার বা ব্যবহারযোগ্য হবে না। তিনি বলেন, নদীর তীরে ২৫৭টি বর্জ্য ফেলার পয়েন্ট দূষণের অন্যতম কারণ, যেখানে ডান তীরে ১৪৮টি ও বাম তীরে ১০৯টি রয়েছে। এছাড়া, শিল্প কারখানা থেকে অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ৯৩টি স্থানে।

গবেষণায় তুরাগ ও বালু নদীতেও অতিরিক্ত দূষণের উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। তুরাগ নদী, যা বুড়িগঙ্গার ৯০ শতাংশ পানি সরবরাহ করে, সেখানে দূষণ ক্রমাগত বেড়ে চলছে।

এজাজ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যে, বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর তীরে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন বন্ধ করতে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) মতে, বুড়িগঙ্গা নদী বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে প্রতিদিন ৬০ হাজার ঘনমিটারেরও বেশি বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সূত্র: ইউএনবি