বানেশ্বরে জমে উঠেছে আমের হাট

- আপডেট সময় : ০৫:২৮:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে
মধু মাসের শ্রেষ্ঠ ফল আম। আর আমের রাজধানী বলে খ্যাত রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজার। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের উপড় আমের হাট হওয়ায় স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে আমের হাট বসছে বানেশ্বরÑচারঘাট সড়কে। যানজট এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরেও আমের বাজার জমে উঠেছে।
জানা গেছে, রাজশাহী জেলার প্রত্যন্ত এলাকার আম চাষীরা যেমন আম বিক্রয়ের জন্য এখানে আসে। তেমনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা এই বাজারে ভিড় জমায়। চলতি বছরে প্রশাসনের নজর দারীর কারণে ব্যবসায়ীরা ফরমালিন মুক্ত আম বিক্রিয় করছে বলে এলাকাবাসী জানায়। গোপালভোগ পরে রাজশাহীর বাজারে পাওয়া গেছে রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ। সুমিষ্ট আম কেনা-বেচায় জমেছে রাজশাহীর হাট বাজারগুলো। সোমবার (২জুন) রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাটে দিনভর আম কেনাবেচায় মুখর ছিল। আম বিক্রিতারা বলছেন- জমে উঠেছে রাজশাহীর আমের হাট বাজার। গত ৩০ মে থেকে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে হিমসাগর ও খিরসাপাত জাতের আম।
বানেশ্বর হাট সংশ্লিষ্টরা বলছেন- প্রতিদিন ভালো কেনাবেচা হচ্ছে আম। তবে হাটটি রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে হওয়ায় স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে আমের হাট বসবে বানেশ্বরের চারঘাট সড়কে। যানজট এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও আড়ৎ দারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে বিগত বছরের তুলনায় এবারে আমের দাম কিছুটা বেশি।
আম চাষী ও আম ব্যবসায়ীরা জানান, আঁটি আম ৭’শ থেকে ৮’শ টাকা, নেংড়া আম ১৪ ’শ থেকে ১৬’শ টাকা, লোকনা ৬ ’শ থেকে ৯ শত টাকা, রানী প্রসাদ ১ হাজার’ থেকে ১২’শ টাকা, খেড়সা আম ১৮’শ থেকে ২১’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুঠিয়া উপজেলার ধলাট এলাকার আম বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, লোকনা আম বিগত বছরে ৪শত থেকে ৭শত টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ বছরে ৭ শত থেকে ৯ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে আমাদের কিছুটা লাভ হচ্ছে। কিন্তু কয়েক দফার ঝড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আম ও আড়ৎ ব্যবসায়ী মো: আসাদ বলেন, এবার রোজার পরে ফুলদমে আম হওয়ায় দাম অনেকটা বেশি। তবে আরও কয়েকদিন পর আমের দাম কিছুটা বাড়বে বলে তিনি জানান। এবার আম কত কেজিতে মণ জানতে চাইলে তিনি বলেন এই এলাকার প্রচলিত নিয়ম মতে ৪৫/৪৬ কেজিতে এক মণ, এই নিয়মে আম ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।
হাট সংশ্লিষ্টরা বলছেন-বানেশ্বর হাটে আমের ক্রেতা সারাদেশের। ব্যবসায়ীরা এখানে আম কিনতে আসেন। এই হাটে ব্যবসায়ীরা সরাসরি বাগান থেকে পছন্দমত আম কিনতে পারেন। আম কিনে তারা নিজেদের স্থানীয় হাটে বিক্রি করে থাকেন। রাজশাহীর আমের সুনাম থাকায় সারাদেশে চাহিদাও ব্যাপক। আমের দাম কমে গেছে। ইদের পরে বাড়তে পারে আমের দাম।
ঢাকার আম ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন দাবি করেন-গত বছরের চেয়ে এবার আমের তুলনামূলক দাম কম। তার ধারণা আসন্ন ইদকে কেন্দ্র করে অনেকেই দেশের বাড়িতে ফিরে যাবেন। তাই অনেকেই বেশি করে আম কিনছেন না। মাত্র কয়েকদিন খাওয়ার জন্য কিনছে আম। তবে ইদের ছুটি শেষে মানুষ কর্মময় জীবনে ফিরবে। সেই সময় বাড়তে পারে আমের দাম। এবার আমের আকার ও রঙ ভালো।
এ বিষয়ে বানেশ্বর হাটের ইজারাদার জাকির হোসেন সরকার রাসেল বলেন, আমের বাজার জমেছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর হয়ে থাকছে বানেশ্বরের আমের হাট। আমদানি বেশি হওয়ায় আমের বাজার এখন একটু কম।
অপরদিকে, গত ২৯ মে উপজেলার মাসিক ও আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বানেশ্বর আমের হাট স্থানান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সড়কে যানজট নিরসনে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৩০ মে থেকে বানেশ্বর ট্রাফিক মোড় থেকে দক্ষিণে চারঘাট রোডে বসছে আমের হাট।
জানা গেছে- বানেশ্বর আমের হাট বসে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে। সড়কের উপরে সারি সারি আমের গাড়িতে পসরা সাজিয়ে আম বিক্রি করেন মালিকরা। এতে এক প্রকারের যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে যানবাহনের যাত্রীরা। এতে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সড়কে এমন বিড়ম্বনা এড়াতে আমের হাট হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়ে উপজেলা প্রশাসন।
আমের হাটের স্থান পরিবর্তনের বিষয়ে বানেশ্বর হাটের ইজারাদার জাকির হোসেন সরকার রাসেল বলেন, আমের হাটের কারণে হাইওয়ে রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে আমের হাটের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। গত ৩০ মে থেকে বানেশ্বরের চারঘাট সড়কে বসবে আমের হাট।
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম নুর হোসেন নির্ঝর বলেন, বানেশ্বরে আমের হাটের কারণে সড়কে যানজোট হচ্ছে। এই যানজটের কারণে দুর্ভোগে পড়ছে মানুষ। সেই কারণে আমের হাটটি রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক থেকে সরিয়ে বানেশ্বর-চারঘাট সড়কে নেওয়া সিদ্ধান্ত হয়। গত ৩০ মে থেকে আমের হাট বসচ্ছে চারঘাট সড়কে। ফলে হাইওয়ে সড়কে কমেছে যানজোট।