• বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

বাংলাদেশিসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করল সৌদি আরব

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ / ৫০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশ : সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩

ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের দূতাবাসের সাবেক দুই কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির তদারকি ও দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ নাজাহা। ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা দেওয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করল সৌদি সরকার। দূতাবাসের দুই কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন ঢাকার সৌদি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের সাবেক প্রধান ও উপরাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ ফালাহ মুদাহি আল-শামারি এবং কনস্যুলার বিভাগের উপপ্রধান খালেদ নাসের আয়েদ আল-কাহতানি।

সৌদি আরবের ইংরেজি দৈনিক আরব নিউজ বলছে, ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের সাবেক ওই দুই কর্মকর্তা বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে ৫ কোটি ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল ঘুষ নিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৫৪ কোটি টাকার সমান। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা চালু করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত ওই দুই কর্মকর্তা হলেন, ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের সাবেক প্রধান ও উপরাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ ফালাহ মুদাহি আল-শামারি এবং কনস্যুলার বিভাগের উপপ্রধান খালেদ নাসের আয়েদ আল-কাহতানি।

দেশটির তদারকি ও দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ নাজাহা বলেছে, সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা ৬০ হাজার রিয়ালের বিনিময়ে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারীর সাথে সৌদির এক নাগরিককে ২ কোটি ৩০ লাখ রিয়ালের আর্থিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিলেন।

নাজাহার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আদালতের নিরাপত্তাবিষয়ক সার্জেন্ট (রিয়াদ অঞ্চল পুলিশের) মেতাব সাদ আল-ঘনউম, রিয়াদে বিশেষ মিশন বাহিনীর কর্পোরাল হাতেম মাস্তুর সাদ বিন তাইয়েব এবং ফিলিস্তিনি বিনিয়োগকারী সালেহ মোহাম্মদ সালেহ আল-শালাউত।’

বিস্তারিত তদন্তের পর বাংলাদেশি নাগরিক আশরাফ উদ্দিন আকনাদ, আলমগীর হোসেন খান, শফিক আল ইসলাম শাহ জাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও অবৈধ ভিসা বাণিজ্য ও সৌদি আরবের বাইরে অর্থপাচারের দায়ে ঢাকার একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মোহাম্মদ নাসের উদ্দিন নূর, জায়েদ উওসিদ মাফি, আবুল কালাম মোহাম্মদ রফিক আল ইসলাম, আজিজ আলহাক মুসলিম উদ্দিন এবং আলামিন খান শহীদ আল্লাহ খানকেও গ্রেপ্তার করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

নাজাহা বলেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার রিয়াল পাওয়া গেছে। এছাড়াও সোনা এবং বিলাসবহুল যানবাহন উদ্ধার করা হয়েছে; যা অবৈধ ওয়ার্ক ভিসা বিক্রির অর্থে কেনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌদির এই দুর্নীতি তদারক সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের প্রধান এবং সাবেক উপ-রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ ফালাহ মুদি আল-শামারি ও দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের উপ-প্রধান খালেদ নাসের আয়েদ আল-কাহতানি বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে অবৈধভাবে ওয়ার্ক ভিসার ব্যবস্থা করে দিতেন। ওয়ার্ক ভিসা পাইয়ে দিতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে এই দুই কর্মকর্তা মোট ৫ কোটি ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল ঘুষ নিয়েছেন।

নাজাহার বিবৃতি অনুযায়ী, ‘গ্রেপ্তারকৃত এই দুই সাবেক দূতাবাস কর্মকর্তা সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে অবৈধ ঘুষ বাণিজ্যের কিছু অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ঘুষের অর্থ সৌদির বাইরে বিনিয়োগ করেছেন।’

সৌদি দূতাবাসের অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের ব্যাপারে দেশটির রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো নাজাহা কর্তৃপক্ষকে তথ্য দিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সরকারি পদের ব্যবহার করে কেউ ব্যক্তিগত লাভ বা জনস্বার্থের ক্ষতিসাধন করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এক্ষত্রে অবসরে যাওয়া দূতাবাসের কর্মকর্তারাও ছাড় পাবেন না। সূত্র: আরব নিউজ, আল-আরাবিয়া।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ