ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের অনন্য অবদান রয়েছে : শরীফ উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে হঠাৎ করেই চালের বাজার অস্থির, কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৮ টাকা দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ এনবিআর চেয়ারম্যানের পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা সন্দেহে ভারতে ৪৪৪ জনকে আটক সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ বাস্তবায়নে ডিএমপির সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ ফখরুলের

বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের ঘটনায় চার মামলায় ২১১ জন আসামি

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:০৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩ ৯৪ বার পড়া হয়েছে

বগুড়ায় বিএনপি পদযাত্রা কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পৃথক চার মামলায় ২১১ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দিনগত রাত ১২টার পর বগুড়া সদর থানায় তিনটি ও দুপচাঁচিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দিনগত রাত ৩টার পর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল এবং দুপচাচিয়া থানা পুলিশ ৩জনকে গ্রেফতার করে। এমনই বিষয়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

তবে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইনসহ অন্যান্য ধারায় চারটি মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানিয়েছে।

বগুড়া সদর থানা সূত্রে জানায়, মঙ্গলবার(১৮ জুলাই) পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী বগুড়ার বনানী থেকে জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে পদযাত্রা শহরের দিকে আসে। পদযাত্রাটি শহরের ইয়াকুবিয়ার মোড় থেকে জলেশ্বরিতলা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তারা ইয়াকুবিয়া মোড় থেকে সাতমাথার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, রবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে শহরের মাটিডালী মোড় থেকে বিএনপির আরেকটি পদযাত্রা নিয়ে শহরের থানামোড় হয়ে নবাববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয় আসে। সেখান থেকে কিছু নেতাকর্মী বিএনপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে আবারও ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ শুরু করে। সেখানে কয়েকটি টিয়ার সেল নিক্ষেপ ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

এখানে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ১০ রাউন্ড টিআরশেল ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় নারুলি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক তরিকুল ইসলামসহ আট পুলিশ সদস্য আহত হন।

এ ঘটনায় বগুড়া বনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছেন। এতে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজহর তালুকদার হেনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়।

সদর থানা পুলিশ সূত্র আরও জানায়, বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ও ভাংচুর করেন। এ ঘটনাতেও পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপি নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনাকে প্রধান আসামি করে ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

শহরের নবাববাড়ি সড়কে পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগে সদর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল মালেক বাদী হয়ে পৃথক মামলা করা হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে প্রধান আসামি করে ১১৪ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

একইদিনে বিএনপি’র পদযাত্রায় যোগদিতে আসা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাহারপুকুর বাজার এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শাহ ফতেহ আলী পরিবহনসহ দুইটি গাড়ি ভাঙচুর ভাংচুর করে। এ অভিযোগে দুপচাঁচিয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে রুজু করা হয়েছে ।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, মঙ্গলবার বগুড়া শহরে বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে দূরপাল্লার দুইটি বাস ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর হওয়া শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের চালক মোহাম্মদ ফেরদৌস ওই ঘটনায় বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

আদমদীঘি থানা বিএনপি সভাপতি আব্দুল মুহিত তালুকদারসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের হয়েছে। ওই মামলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন, আদমদীঘি থানা যুবদলের সদস্য রাজু আহম্মেদ, ছতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য তামিম হোসেন ও বিএনপি কর্মী আবু বক্কর। তবে গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, জেলা বিএনপির গ্রেফতার দুই নেতাকে বুধবার(১৯ জুলাই) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের ঘটনায় চার মামলায় ২১১ জন আসামি

আপডেট সময় : ০৪:০৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩

বগুড়ায় বিএনপি পদযাত্রা কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি’র সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পৃথক চার মামলায় ২১১ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দিনগত রাত ১২টার পর বগুড়া সদর থানায় তিনটি ও দুপচাঁচিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দিনগত রাত ৩টার পর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল এবং দুপচাচিয়া থানা পুলিশ ৩জনকে গ্রেফতার করে। এমনই বিষয়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

তবে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইনসহ অন্যান্য ধারায় চারটি মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানিয়েছে।

বগুড়া সদর থানা সূত্রে জানায়, মঙ্গলবার(১৮ জুলাই) পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী বগুড়ার বনানী থেকে জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে পদযাত্রা শহরের দিকে আসে। পদযাত্রাটি শহরের ইয়াকুবিয়ার মোড় থেকে জলেশ্বরিতলা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তারা ইয়াকুবিয়া মোড় থেকে সাতমাথার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, রবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে শহরের মাটিডালী মোড় থেকে বিএনপির আরেকটি পদযাত্রা নিয়ে শহরের থানামোড় হয়ে নবাববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয় আসে। সেখান থেকে কিছু নেতাকর্মী বিএনপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে আবারও ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ শুরু করে। সেখানে কয়েকটি টিয়ার সেল নিক্ষেপ ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

এখানে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ১০ রাউন্ড টিআরশেল ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় নারুলি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক তরিকুল ইসলামসহ আট পুলিশ সদস্য আহত হন।

এ ঘটনায় বগুড়া বনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছেন। এতে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজহর তালুকদার হেনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়।

সদর থানা পুলিশ সূত্র আরও জানায়, বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ও ভাংচুর করেন। এ ঘটনাতেও পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপি নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনাকে প্রধান আসামি করে ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

শহরের নবাববাড়ি সড়কে পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগে সদর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল মালেক বাদী হয়ে পৃথক মামলা করা হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে প্রধান আসামি করে ১১৪ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

একইদিনে বিএনপি’র পদযাত্রায় যোগদিতে আসা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে দুপচাঁচিয়া উপজেলার সাহারপুকুর বাজার এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শাহ ফতেহ আলী পরিবহনসহ দুইটি গাড়ি ভাঙচুর ভাংচুর করে। এ অভিযোগে দুপচাঁচিয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে রুজু করা হয়েছে ।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, মঙ্গলবার বগুড়া শহরে বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে দূরপাল্লার দুইটি বাস ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর হওয়া শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের চালক মোহাম্মদ ফেরদৌস ওই ঘটনায় বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

আদমদীঘি থানা বিএনপি সভাপতি আব্দুল মুহিত তালুকদারসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের হয়েছে। ওই মামলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন, আদমদীঘি থানা যুবদলের সদস্য রাজু আহম্মেদ, ছতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য তামিম হোসেন ও বিএনপি কর্মী আবু বক্কর। তবে গ্রেফতারকৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, জেলা বিএনপির গ্রেফতার দুই নেতাকে বুধবার(১৯ জুলাই) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।