ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে রাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট

নাজিম হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক //
  • আপডেট সময় : ০৫:২৯:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি মেনে না নিলে (বুধবার ৮ জানুয়ারি) পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে লিচুতলা চত্বরে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সহায়ক, সাধারণ ও পরিবহন কর্মচারীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সহায়ক, সাধারণ ও পরিবহন কর্মচারীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা আমাদের অধিকার চাই। যারা বলছেন কোটার কবর দিতে হবে, কোটামুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হবে, আমরাও তাদের সঙ্গে একমত। কিন্তু আমরা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার চাই। বাংলদেশের স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে যদি প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার থাকে তবে আমরা কেন বঞ্চিত হবো। কেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা তার প্রতিবাদে, আমাদের সন্তানদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাব। যতদিন না আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাব। তিনি আরো বলেন, গত ২ জানুয়ারি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নামে, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে গুটি কয়েক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়েছে। প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে তারা বাহিরে অশ্লীল, অশ্রাব্য গান-নৃত্য করেছে। আমরা এই প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই, যারা এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যেন তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়। কৃষি প্রকল্পের সহকারী রেজিস্ট্রার মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। সে সময় কোটা বাতিলের দাবি ছিল না, সংস্কারের দাবি ছিল। আমরা সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করলে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। সেই জায়গায় আমাদের সন্তানরা কেন বঞ্চিত হবে। বৈষম্যের আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। তাই আমাদের একটাই দাবি আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আমাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ, অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। উল্লখ্যে,১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তার সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করে শুধুমাত্র সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এক শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে উপ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় ১২ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে রাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট

আপডেট সময় : ০৫:২৯:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি মেনে না নিলে (বুধবার ৮ জানুয়ারি) পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে লিচুতলা চত্বরে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সহায়ক, সাধারণ ও পরিবহন কর্মচারীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, সহায়ক, সাধারণ ও পরিবহন কর্মচারীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা আমাদের অধিকার চাই। যারা বলছেন কোটার কবর দিতে হবে, কোটামুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হবে, আমরাও তাদের সঙ্গে একমত। কিন্তু আমরা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার চাই। বাংলদেশের স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে যদি প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার থাকে তবে আমরা কেন বঞ্চিত হবো। কেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা তার প্রতিবাদে, আমাদের সন্তানদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাব। যতদিন না আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাব। তিনি আরো বলেন, গত ২ জানুয়ারি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নামে, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে গুটি কয়েক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে প্রশাসন ভবনে তালা দিয়েছে। প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে তারা বাহিরে অশ্লীল, অশ্রাব্য গান-নৃত্য করেছে। আমরা এই প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই, যারা এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যেন তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়। কৃষি প্রকল্পের সহকারী রেজিস্ট্রার মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। সে সময় কোটা বাতিলের দাবি ছিল না, সংস্কারের দাবি ছিল। আমরা সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করলে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। সেই জায়গায় আমাদের সন্তানরা কেন বঞ্চিত হবে। বৈষম্যের আন্দোলন করতে গিয়ে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। তাই আমাদের একটাই দাবি আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আমাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ, অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। উল্লখ্যে,১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তার সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করে শুধুমাত্র সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এক শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে উপ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় ১২ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব।