পুঠিয়া বারনই নদীতে বাঁধ, পানি সংকটে চাষিরা

- আপডেট সময় : ০৯:১৭:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাঁধ নির্মাণ করায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা এলাকায় বারই নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করে নদী খনন কাজ করছে। এ কারণে শুকিয়ে গেছে উপজেলা এলাকার প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে নদীর পানি। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ভাসমান সেচপাম্প। যার ফলে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান ও বিভিন্ন ফসলের সেচ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নদীতে থাকা সব চেয়ে বড় অভয়াশ্রমের মাছ লুটপাট চলছে।
বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পুঠিয়া জোনের সহকারী প্রকৌশলী আল মামুনুর রশীদ বলেন, বারনই নদীতে বাঁধ দেয়ায় পুঠিয়া উপজেলা অংশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে পানি শুকিয়ে গেছে।
এ কারণে শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন এলাকায় বারনই নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্যাম, সেচের জন্য বিএমডিএর ২৪টি বিদ্যুৎচালিত এলএলপি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ১৫০টি ডিজেল চালিত সেচযন্ত্রেরর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এতে ওই এলাকার অন্তত দুই হাজার হেক্টর বোরো ধান খেত ও বিভিন্ন ফসলের সেচ বন্ধ হয়ে গেছে।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, বারনই নদীর বাগমারা উপজেলা অংশে খনন কাজ শুরু করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। সে কারণে পুঠিয়া উপজেলা অংশের ফকিন্নী নদীর উজানে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। যার কারণে রাবার ড্যাম ও আশেপাশের এলাকার নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে চাষিদের সেচপাম্প বন্ধ হওয়ায় চরম ক্ষতি সম্মুখে পড়েছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর গুলোতে অবহিত করা হয়েছে।
চাষি মমিনুল হক বলেন, এই এলাকার বেশীর ভাগ চাষিদের পানির যোগান হয় বারনই নদী থেকে। এ বছর নদীতে পানির অভাবে সেচ যন্ত্র বন্ধ হয়ে গেছে। আর পানির অভাবে বেশীর ভাগ ধানের জমি শুকিয়ে গেছে। এখন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চাষিরা নতুন করে নলকুপ স্থাপন করতে চাচ্ছেন না।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বেনজির আহম্মদ বলেন, উপজেলার মধ্যে মাছের সব চেয়ে বড় অভয়াশ্রম বারই নদী। কিন্তু নদীর খননকাজ চলায় এখন পানির প্রবাহ নেই। রাবারড্যামের আশেপাশে যা সামান্য ছিল ও চাষিরা তুলে নিচ্ছেন। যার কারণে মাছের অভয়াশ্রম প্রায় শুকিয়ে গেছে। আর এ কারণে গোপনে হয়তো কেও মাছ ধরার চেস্টা করে। তিনি বলেন, সেখানে মাছ রক্ষায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও এলাকার কিছু লোকজন নিয়মিত দেখভাল করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুসনা ইয়াসমিন বলেন, পানি সংকটে সেচ কাজ প্রায় বন্ধ। এতে চাষিরা বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, বাঁধ কেটে নদীতে পানি সরবরাহে কাজ চলছে।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রিফাত করিম বলেন, নদীর পানি প্রবাহ বিষয়ে কাজ চলছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আকতার জাহান বলেন, নদীতে বাঁধ দিয়ে খনন কাজ চলছে। সে কারণে ওই এলাকায় নদীতে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়টি মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলোচনা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব নিরসন করা হবে। আর পানির অভাবে কৃষকের যেনো কোনো ক্ষতি না হয় সে জন্য সু-ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।