পুঠিয়ায় ছত্রাকনাশক ব্যবহারে পেঁয়াজ পচে নষ্টের অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০২:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ ২৭ বার পড়া হয়েছে
ছত্রাকনাশক ব্যবহারে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর পুঠিয়ার ৪ কৃষকের কাছ থেকে।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের রঘুরামপুর এলাকার আবু সাঈদ, নজির ও জায়গীরপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান বাবু ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পর খেতের পেঁয়াজ ও রসুন গাছের কাণ্ড পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মোট ৪ বিঘা জমির পেঁয়াজ রসুন নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। পরে ক্ষতিগ্রস্ত জমি দেখতে শিবপুর হাট ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা দেখে তাদের করজিম পাউডার কোম্পানির অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় স্প্রে করলেও একই ফলাফল আসে। কিন্তু কোম্পানিটির পক্ষ থেকে কোন আশা না পেয়ে তারা ২৪ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ৪ বিঘা জমির পেঁয়াজ রসুনের ক্ষতিপূরণ দাবি করে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।
কৃষক আবু সাইদের অভিযোগ, তাদের পেঁয়াজ ও রসুনে করবেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির করজিম (কার্বেন্ডাজিম) ব্যবহার করে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা করবেল কোম্পানির ডিলার শিবপুর বাজারে মেসার্স কান্তা ট্রেডার্স নামের একটি কীটনাশক দোকান থেকে ঔ ‘করজিম’ নামক ছত্রাকনাশক পাউডার কিনে জমিতে স্প্রে করেছিলেন। তারপর থেকেই ফসল আস্তে আস্তে পচে বসে যেতে থাকে। এর পরেই ডিলার ও কোম্পানির অফিসারদের জানালে তারা ফসল দেখে এবং ঔ পাউডার অন্য জমিতে স্প্রে করলেও এমনই ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে শিকার করেন। কিন্তু অন্য কোন স্থানে ঔ ব্যাচের মালে কোন ক্ষতি হয় নি বলে ওই কীটনাশক কোম্পানি কালক্ষেপণ করেছে।
স্থানীয় কৃষক রবিউল, দুলাল জানান, এই ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পর গাছ মরতে শুরু করলে তারা এটির বিক্রেতা আল মাহমুদকে অবহিত করেন। ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কোম্পানির অফিসাররা তাদের জমি দেখেন। করবেল ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির রাজশাহীর এরিয়া ম্যানেজার রহিদুল ইসলাম তার কোম্পানির করজিমে কোন সমস্যা নেই বলে দাবি করছেন। তাই বাধ্য হয়ে তারা কৃষি অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন।
জায়গীরপাড়া গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বাবু জানান, তিনি তার ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর সময় মাঠিতে এবং তার কিছুদিন পরে পেঁয়াজের গাছে স্প্রে করি করবেল কোম্পানির করজিম ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেন। কয়েকদিন পর লক্ষ্য করেন, গাছের রঙ হলুদ হলুদ লাগছে। ধীরে ধীরে হলদে রঙ বাড়তে থাকলে দিন দিন পেঁয়াজ গাছ পচে মাটি বসে যায়। এমন ক্ষতিগ্রস্ত ৪ জন কৃষক বিক্রেতাকে বললে তিনি কোম্পানির অফিসারকে জানান । পরে তারা পরীক্ষামূলক এই ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। তাতে দেখা যায়, পেঁয়াজ পচে মরে গেছে। এরপর তারা ক্ষতিপূরণের জন্য চাপ দেন।
ডিলার আল মাহমুদ বলেন, করজিম দিয়ে পেঁয়াজ নষ্টের অভিযোগ আসলে আমিসহ কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার আল আমিন ও শিবপুর ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা গিয়ে। অভিযোগ কারি আবু সাঈদের কাছে থাকা করজিম পাউডার নিয়ে আমরা ভালো থাকা পেঁয়াজে স্প্রে দিই। স্প্রে দেওয়ার কয়েকদিন পরেই তাদের পেঁয়াজের মত এগুলোও পচে নষ্ট হয় যায়। কিন্তু অন্য কোন স্থানে এমন সমস্যা না হওয়ায় কোম্পানির অফিসাররা কোন ভাবেই তাদের পণ্যে এমন সমস্যা হয়েছে এটা মেনে নিচ্ছে না।
করবেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার রহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কোম্পানির করজিমে কোন সমস্যা নেই। তারা এক সাথে অনেক ওষুধ স্প্রে করে কি হয়েছে তারাই জানে। কারণ এই লটের করজিম পাউডার আরও অন্য সব স্থানে ব্যবহার হচ্ছে তাদের কোন সমস্যা নেই। আমরা এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আমাদের প্রোডাক্টে কোন সমস্যা নেই।
পুঠিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার বলেন, কৃষকরা আমার কাছে লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। আমার প্রতিনিধি সোহেল জানার পরে তাদেরকে নিয়ে আমার কাছে এমনিতে আসছিলো। আমাদের পেঁয়াজ প্রদর্শনের জমিতেও ক্ষতি হয়েছে। আমি কোম্পানিকে বলেছি যেহেতু আপনার মাল দিয়ে ক্ষতি হয়েছে তাই তাদের ক্ষতি পুরণ দিতে হবে তা না হলে আমি ব্যবস্থা নেব। যে লটের মাল দিয়ে এই সমস্যা হয়ছে সেই লটের ১০০ গ্রাম মাল ঢাকায় টেস্টের জন্য পাটিয়েছি। দেখি কি রেজাল্ট আসে।