ঢাকা ০৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঋণের টাকা না পেয়ে নারীকে রাতে তালাবদ্ধ করে রাখল পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ায় নিখোঁজ অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ক্রিকেটে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ক্যাম্ফার পাকিস্তানে বাস থামিয়ে ৯ যাত্রীকে অপহরণের পর হত্যা উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক : প্রধান উপদেষ্টা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি রাষ্ট্রপতির ইসরাইলি বর্বরতায় একদিনে আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত গ্লোবাল সুপার লিগ : খালেদের ৪ উইকেটে জয়ে শুরু রংপুরের ২১ জেলায় পানির নিচে ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল টানা বৃষ্টির প্রভাব কাঁচাবাজারে, মরিচের কেজি প্রায় ৩০০ টাকা

পুঠিয়ায় আমের মণ ৫২ কেজিতে, ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা

মোঃ মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট সময় : ১২:৪০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ২৭ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীর বৃহত্তম আমের হাট বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে প্রতিদিন শত শত চাষি এবং ব্যবসায়ী এসব হাটে আম কেনাবেচা করে থাকে। তবে গত কয়েক বছরে এক কেজি, দুই কেজি করে বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি মণে প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি আম বেশি নিচ্ছেন আড়োত দাররা।

বানেশ্বর হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আড়ত দাররা মণ হিসাবে দর করলেও ওজন দেওয়ার সময় ৫০ থেকে ৫২ কেজিতে মণ নিচ্ছেন। শুধু তাই না, আমগুলো ওজন হয় প্লাস্টিক ক্যারেটে এর একটির ওজন ১ কেজি ৬০০ গ্রাম হলেও একটি ক্যারেট বাদ দেওয়া হয় ৩ কেজি আরও ২ কেজি কাটা বাদ দেওয়ায় হতাশ হয় কৃষক।

চাষিরা জানান, ৫ জুন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার আম চাষি, আড়তদার ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে ৪০ কেজিতে মণ বিক্রির নির্দেশনা জারি করেন। বিষয়টি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী মনিটর করছিল। এতে বিরক্ত হয়ে আড়োত দাররা কৌশলে আম কেনা বন্ধ করে দিলে বিপাকে পরে চাষিরা। পরে বাধ্য হয়ে আগের নিয়মেই শুরু হয় কেনা বেচা। এতে আমের বাজারে নামে ধস।

আম চাষী স্বাধীন বলেন এবার বাজার খুবই খারাপ। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। এবার আম বেচে কীটনাশক, সার ও শ্রমিকের দাম উঠবে না। অথচ আড়োত দাররা সিন্ডিকেট করে ৫২ কেজিতে মণ নিচ্ছেন। যেখানে গতবারও ছিল ৪৬ কেজিতে মণ ছিল।

আম চাষী ইউনুস বলেন, সেনাবাহিনীর কঠোর মনিটরিং থাকায় আড়তদাররা আম কেনা বন্ধ করেন। এতে আমের দাম অর্ধেকে নেমে আসে। এ সময় পাইকারও কম ছিল। ফলে বাজারের যে ধস নেমেছিল, তা আর ঠিক হচ্ছে না।
আড়তদাররা বলছেন, চাষিদের অনেক আম আকারে ছোট থাকে, ফাটা থাকে। অনেক আম পচে যায়। এ কারণে লোকসান ঠেকাতে কিছু আম বেশি নেন। এতে চাষিদের আপত্তি থাকে না।

আড়তদার আরিফুল ইসলাম বলেন, আম কাঁচামাল। অনেক আম ছোট, ফাটা, পচা থাকে। পাকলে কমে যায়। ৪০ কেজিতে মণ কিনলে আম ঢাকায় পৌঁছতে পৌঁছতে ৩৬ কেজিতে নেমে আসবে। এই লোকসান ঠেকাতে ঢোলন নেওয়া হয়। সেটা পাঁচ-ছয় কেজির বেশি নয়।

আরেক আড়োতদার বলেন, অনেক আম পচে যায়। ছোট আম বিক্রি হয় না। এসব কারণে ঢোলন নেওয়া হয়। শুধু আম না, সব কাঁচামালে ঢোলন চলে। এই ঢোলন বন্ধ করলে আড়তদারদের কেনাবেচা বন্ধ হয়ে যাবে।

মাঠ পর্যায়ে ঢলন চালু থাকলেও প্রশাসন দাবি করছে, এই প্রথা বাতিল হয়েছে। এখন কেজি দরে আম বিক্রি হচ্ছে। ঢলনে চাষিদের আম বেচতে বাধ্য করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নূর হোসেন নির্ঝর জানান, আমরা প্রাথমিক অবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি দুই দিন বিভাগীয় কমিশনার স্যারের নির্দেশে কেজি দরে বাজার চলেছে । বাজার চলেছে পরবর্তীতে তারা আড়তদার ও পাইকাড়রা এই নিয়ম মানতে নারাজ । এই নিয়ম চালু থাকলে তারা বাজারে আম কিনতে আসবে না বলে জানান । মাঝে সেনাবাহিনী আম বাজারে আসলে বেপারিরা আম ক্রয় থেকে বিরত থাকে এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পুঠিয়ায় আমের মণ ৫২ কেজিতে, ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা

আপডেট সময় : ১২:৪০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

রাজশাহীর বৃহত্তম আমের হাট বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে প্রতিদিন শত শত চাষি এবং ব্যবসায়ী এসব হাটে আম কেনাবেচা করে থাকে। তবে গত কয়েক বছরে এক কেজি, দুই কেজি করে বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি মণে প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি আম বেশি নিচ্ছেন আড়োত দাররা।

বানেশ্বর হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আড়ত দাররা মণ হিসাবে দর করলেও ওজন দেওয়ার সময় ৫০ থেকে ৫২ কেজিতে মণ নিচ্ছেন। শুধু তাই না, আমগুলো ওজন হয় প্লাস্টিক ক্যারেটে এর একটির ওজন ১ কেজি ৬০০ গ্রাম হলেও একটি ক্যারেট বাদ দেওয়া হয় ৩ কেজি আরও ২ কেজি কাটা বাদ দেওয়ায় হতাশ হয় কৃষক।

চাষিরা জানান, ৫ জুন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার আম চাষি, আড়তদার ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে ৪০ কেজিতে মণ বিক্রির নির্দেশনা জারি করেন। বিষয়টি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী মনিটর করছিল। এতে বিরক্ত হয়ে আড়োত দাররা কৌশলে আম কেনা বন্ধ করে দিলে বিপাকে পরে চাষিরা। পরে বাধ্য হয়ে আগের নিয়মেই শুরু হয় কেনা বেচা। এতে আমের বাজারে নামে ধস।

আম চাষী স্বাধীন বলেন এবার বাজার খুবই খারাপ। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। এবার আম বেচে কীটনাশক, সার ও শ্রমিকের দাম উঠবে না। অথচ আড়োত দাররা সিন্ডিকেট করে ৫২ কেজিতে মণ নিচ্ছেন। যেখানে গতবারও ছিল ৪৬ কেজিতে মণ ছিল।

আম চাষী ইউনুস বলেন, সেনাবাহিনীর কঠোর মনিটরিং থাকায় আড়তদাররা আম কেনা বন্ধ করেন। এতে আমের দাম অর্ধেকে নেমে আসে। এ সময় পাইকারও কম ছিল। ফলে বাজারের যে ধস নেমেছিল, তা আর ঠিক হচ্ছে না।
আড়তদাররা বলছেন, চাষিদের অনেক আম আকারে ছোট থাকে, ফাটা থাকে। অনেক আম পচে যায়। এ কারণে লোকসান ঠেকাতে কিছু আম বেশি নেন। এতে চাষিদের আপত্তি থাকে না।

আড়তদার আরিফুল ইসলাম বলেন, আম কাঁচামাল। অনেক আম ছোট, ফাটা, পচা থাকে। পাকলে কমে যায়। ৪০ কেজিতে মণ কিনলে আম ঢাকায় পৌঁছতে পৌঁছতে ৩৬ কেজিতে নেমে আসবে। এই লোকসান ঠেকাতে ঢোলন নেওয়া হয়। সেটা পাঁচ-ছয় কেজির বেশি নয়।

আরেক আড়োতদার বলেন, অনেক আম পচে যায়। ছোট আম বিক্রি হয় না। এসব কারণে ঢোলন নেওয়া হয়। শুধু আম না, সব কাঁচামালে ঢোলন চলে। এই ঢোলন বন্ধ করলে আড়তদারদের কেনাবেচা বন্ধ হয়ে যাবে।

মাঠ পর্যায়ে ঢলন চালু থাকলেও প্রশাসন দাবি করছে, এই প্রথা বাতিল হয়েছে। এখন কেজি দরে আম বিক্রি হচ্ছে। ঢলনে চাষিদের আম বেচতে বাধ্য করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নূর হোসেন নির্ঝর জানান, আমরা প্রাথমিক অবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি দুই দিন বিভাগীয় কমিশনার স্যারের নির্দেশে কেজি দরে বাজার চলেছে । বাজার চলেছে পরবর্তীতে তারা আড়তদার ও পাইকাড়রা এই নিয়ম মানতে নারাজ । এই নিয়ম চালু থাকলে তারা বাজারে আম কিনতে আসবে না বলে জানান । মাঝে সেনাবাহিনী আম বাজারে আসলে বেপারিরা আম ক্রয় থেকে বিরত থাকে এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।