ঢাকা ০২:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পানি বিপদসীমার নিচে নামলেও আতঙ্কে তিস্তা পাড়ের মানুষ

দেশের আওয়াজ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৫:০৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে

গভীর রাতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে হুমকিতে পড়ে ব্যারাজ সংলগ্ন ফ্লাড বাইপাস সড়ক। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটান তিস্তাপাড়ের মানুষ। তবে সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। পানি কমলেও আতঙ্কে দিন পাড় করছেন স্থানীয়রা।

দুপুর ১২টার দিকে পানি আরও কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে সোমবার রাত ১টার দিকে একই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাটির চার উপজেলার নদীতীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলে রাতের বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উজানে থাকা ফ্লাড বাইপাস, ঘরবাড়ি ও স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। গভীর রাতে পাউবো (বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদীতীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করে সতর্ক করে।

স্থানীয়রা জানান, রাতের পানি বৃদ্ধিতে অনেকের ঘরে হঠাৎ করে পানি ঢুকে পড়ে। এতে ছোট-বড় গৃহপালিত পশু সরাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে উঁচু বাঁধ ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় এখন রোপা আমন, চিনা বাদাম ও বিভিন্ন শাকসবজির চাষ হচ্ছে। পানিতে এসব ফসল ডুবে যাওয়ায় কৃষকরাও শঙ্কায় আছেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন বলেন, “যদি পানি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। তবে এক-দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আমরা মাঠপর্যায়ে নজর রাখছি যেন ক্ষতি কম হয়।”

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি হঠাৎ বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে। তীরবর্তী এলাকাবাসীকে আগাম সতর্ক করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দেশের ভেতরে এবং উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আবারও বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পানি বিপদসীমার নিচে নামলেও আতঙ্কে তিস্তা পাড়ের মানুষ

আপডেট সময় : ০৫:০৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

গভীর রাতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে হুমকিতে পড়ে ব্যারাজ সংলগ্ন ফ্লাড বাইপাস সড়ক। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটান তিস্তাপাড়ের মানুষ। তবে সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। পানি কমলেও আতঙ্কে দিন পাড় করছেন স্থানীয়রা।

দুপুর ১২টার দিকে পানি আরও কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে সোমবার রাত ১টার দিকে একই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাটির চার উপজেলার নদীতীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলে রাতের বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উজানে থাকা ফ্লাড বাইপাস, ঘরবাড়ি ও স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। গভীর রাতে পাউবো (বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদীতীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করে সতর্ক করে।

স্থানীয়রা জানান, রাতের পানি বৃদ্ধিতে অনেকের ঘরে হঠাৎ করে পানি ঢুকে পড়ে। এতে ছোট-বড় গৃহপালিত পশু সরাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে উঁচু বাঁধ ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় এখন রোপা আমন, চিনা বাদাম ও বিভিন্ন শাকসবজির চাষ হচ্ছে। পানিতে এসব ফসল ডুবে যাওয়ায় কৃষকরাও শঙ্কায় আছেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন বলেন, “যদি পানি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। তবে এক-দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আমরা মাঠপর্যায়ে নজর রাখছি যেন ক্ষতি কম হয়।”

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি হঠাৎ বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে। তীরবর্তী এলাকাবাসীকে আগাম সতর্ক করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দেশের ভেতরে এবং উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আবারও বিপদসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।