ঢাকা ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের অনন্য অবদান রয়েছে : শরীফ উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে হঠাৎ করেই চালের বাজার অস্থির, কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৮ টাকা দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ এনবিআর চেয়ারম্যানের পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা সন্দেহে ভারতে ৪৪৪ জনকে আটক সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ বাস্তবায়নে ডিএমপির সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ ফখরুলের

পরকীয়া সর্ম্পকের জেরে শাহীনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, গ্রেফতার-২

নাটোর প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:০৮:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

পরকীয়া সর্ম্পকে অবনতি ঘটায় শাহীন শাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন প্রবাসী আইয়ুব আলীর স্ত্রী হোসনেআরা বেগম। পরে মৃতদেহটি গুম করতে নিজ বাড়ীর উঠোনের এক কোনে টিউবয়েলের পাশে ১০ ফিট গর্তে মরদেহটি পুতে রাখা হয়। আর এই দুঃসাহসিক কাজে তার ছেলে ইমন আলীর সহায়তা নেয় মা হোসনেআরা। শনিবার দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম তার নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার আরো জানান, নাটোর সদর উপজেলার দস্তানাবাদ এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে শাহিন শাহ গত ৭ আগস্ট মোবাইল ফোনে কথা বলার পর বাড়ী থেকে বের। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। দুই দিন বাড়ীতে ফিরে না আসলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে তাদের নিকট আত্মীয় সহ বন্ধু বান্ধবের বাড়ীতে খোঁজ খবর করে। কিন্তু কোথায় তার সন্ধান পায়না। এ সময় শাহীনের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

এতে পরিবারের সদস্যরা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। পরে গত ৯ আগস্ট নিখোজ শাহীনের চাচা আক্তার হোসেন শাহ নাটোর সদর থানায় হাজির হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে ডায়েরীর সুত্র ধরে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে র‌্যাব ও বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ বড়াইগ্রাম পৌর এলাকার জলন্দা মহল্লার ওমান প্রবাসী আইয়ুব আলীর বাড়ীতে তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ ব্যাবহারের তথ্য পায়।

এবং সেখানেই শাহীনের মোবাইল ফোনটি অফ করা হয়। এর পর আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ওমান প্রবাসী আইয়ুব আলীর বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে আইয়ুব আলীর স্ত্রী হোসনেআরা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে শাহীনের সাথে তার অবৈধ পরকিয়া সম্পর্কের কথা স্বীকার করে হোসনেআরা। এরই এক পর্যায়ে তাদের চলমান সম্পর্কের অবনতি হলে শাহীনকে হত্যার পরিকল্পনাও করে হোসনেআরা।

পরে গত ৭ আগস্ট রাতে শাহীন তার বাড়ীতে আসলে কথা বলার একসময়ে শাহীনের সাথে বাকবিতন্ডা বাধে হোসনেআরা বেগমের। বাকবিতন্ডা শেষে কৌশলে তাদের মধ্যে সমঝোতা করে নেয় প্রেমিকা হোসনেআরা। পরে তাদের মধ্যে আবারো প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক শুরু হয়। তাদের মধ্যে মিল হলে রাতের খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শাহীনকে খাওয়ায় হোসনেআরা।

সেই খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়লে শাহীনের কোমড়ের বেল্ট গলায় পেচিয়ে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। হত্যার পরের দিন ৮ আগষ্ট সকালে টিউবয়েল ম্যারামতের শ্রমিক ডেকে এনে তার বাড়ীর টিউবয়েলের পার্শে ১০ ফিট গর্ত করে নেয়। শ্রমিকরা কাজ শেষে চলে যাওয়ার পর রাতে শিশু ছেলে ইমনকে সাথে নিয়ে শাহীনের মরদেহটি সেই গর্তে ফেলে মাটি চাপা দেয়।

তার দেওয়া তথ্যমতে শুক্রবার বিকালে গর্তটি খুড়ে সেখান থেকে শাহীনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরিটি মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে হোসনেআরা বেগম ও তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে ইমনকে। হত্যাকান্ডটি নিয়ে আরো অধিক তদন্ত করা হবে এবং আরো কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়েও তদন্ত চলমান থাকবে বলে পুলিশ সুপার জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পরকীয়া সর্ম্পকের জেরে শাহীনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, গ্রেফতার-২

আপডেট সময় : ০৪:০৮:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩

পরকীয়া সর্ম্পকে অবনতি ঘটায় শাহীন শাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন প্রবাসী আইয়ুব আলীর স্ত্রী হোসনেআরা বেগম। পরে মৃতদেহটি গুম করতে নিজ বাড়ীর উঠোনের এক কোনে টিউবয়েলের পাশে ১০ ফিট গর্তে মরদেহটি পুতে রাখা হয়। আর এই দুঃসাহসিক কাজে তার ছেলে ইমন আলীর সহায়তা নেয় মা হোসনেআরা। শনিবার দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম তার নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার আরো জানান, নাটোর সদর উপজেলার দস্তানাবাদ এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে শাহিন শাহ গত ৭ আগস্ট মোবাইল ফোনে কথা বলার পর বাড়ী থেকে বের। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। দুই দিন বাড়ীতে ফিরে না আসলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে তাদের নিকট আত্মীয় সহ বন্ধু বান্ধবের বাড়ীতে খোঁজ খবর করে। কিন্তু কোথায় তার সন্ধান পায়না। এ সময় শাহীনের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

এতে পরিবারের সদস্যরা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। পরে গত ৯ আগস্ট নিখোজ শাহীনের চাচা আক্তার হোসেন শাহ নাটোর সদর থানায় হাজির হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে ডায়েরীর সুত্র ধরে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে র‌্যাব ও বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ বড়াইগ্রাম পৌর এলাকার জলন্দা মহল্লার ওমান প্রবাসী আইয়ুব আলীর বাড়ীতে তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ ব্যাবহারের তথ্য পায়।

এবং সেখানেই শাহীনের মোবাইল ফোনটি অফ করা হয়। এর পর আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ওমান প্রবাসী আইয়ুব আলীর বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে আইয়ুব আলীর স্ত্রী হোসনেআরা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে শাহীনের সাথে তার অবৈধ পরকিয়া সম্পর্কের কথা স্বীকার করে হোসনেআরা। এরই এক পর্যায়ে তাদের চলমান সম্পর্কের অবনতি হলে শাহীনকে হত্যার পরিকল্পনাও করে হোসনেআরা।

পরে গত ৭ আগস্ট রাতে শাহীন তার বাড়ীতে আসলে কথা বলার একসময়ে শাহীনের সাথে বাকবিতন্ডা বাধে হোসনেআরা বেগমের। বাকবিতন্ডা শেষে কৌশলে তাদের মধ্যে সমঝোতা করে নেয় প্রেমিকা হোসনেআরা। পরে তাদের মধ্যে আবারো প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক শুরু হয়। তাদের মধ্যে মিল হলে রাতের খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শাহীনকে খাওয়ায় হোসনেআরা।

সেই খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়লে শাহীনের কোমড়ের বেল্ট গলায় পেচিয়ে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। হত্যার পরের দিন ৮ আগষ্ট সকালে টিউবয়েল ম্যারামতের শ্রমিক ডেকে এনে তার বাড়ীর টিউবয়েলের পার্শে ১০ ফিট গর্ত করে নেয়। শ্রমিকরা কাজ শেষে চলে যাওয়ার পর রাতে শিশু ছেলে ইমনকে সাথে নিয়ে শাহীনের মরদেহটি সেই গর্তে ফেলে মাটি চাপা দেয়।

তার দেওয়া তথ্যমতে শুক্রবার বিকালে গর্তটি খুড়ে সেখান থেকে শাহীনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরিটি মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে হোসনেআরা বেগম ও তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে ইমনকে। হত্যাকান্ডটি নিয়ে আরো অধিক তদন্ত করা হবে এবং আরো কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়েও তদন্ত চলমান থাকবে বলে পুলিশ সুপার জানান।