ঢাকা ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০২:১৮:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস ধরে নানা সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও, নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি আসেনি। দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী, যা প্রতিদিন ভোক্তাদের জন্য চাপ তৈরি করছে। বিশেষ করে কিছু অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। এজন্য অবশ্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিন্ডিকেটকে দায়ী করে বলছে— পতিত সরকারের একটি পক্ষ এখনও মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে ভোক্তার হতাশা নতুন কিছু নয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের উদ্যোগে সাধারণ মানুষ কিছুটা আশাও দেখেছিল। কিন্তু তিন মাসেও বাজারে দাম কমেনি। অনেকের মতে, সরকারের পদক্ষেপ আরও কার্যকরী হতে হবে, আবার কেউ বলছেন, বাজার স্থিতিশীল করতে সরকারের আরও সময় দেওয়া উচিত।

এক ক্রেতা, হাকিম হোসেন বলেন, “সরকারের প্রথম তিন মাসে কিছু কাজ হতে পারে, কিন্তু এখন তো আসল পরিবর্তন দরকার। বাজারের অসহনীয় দামে এখনই নজর দিতে হবে।”

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, গত তিন মাসে চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগি, আলুসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। অক্টোবরের শুরুতে সবজির দামও বেড়ে যায়। তবে নভেম্বরে কিছু পণ্যের দাম, যেমন কাঁচামরিচ, কমেছে।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেঁধে দেওয়া হলেও, বাজারে তার তেমন প্রভাব পড়েনি। এরপর সরকারি সংস্থাগুলো ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে।

এদিকে, কৃষিপণ্যের খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা জানায় কৃষি বিপণন অধিদফতর। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রেজা আহমেদ খান বলেন, “ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও খুলনাতেও ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী এর পরিসর আরও বাড়ানো হবে।”

ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, “বাজারে এখনও সিন্ডিকেটের প্রভাব রয়েছে। পতিত সরকারের কেউ কেউ বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অর্থনীতিবিদরা সরকারের উদ্যোগে তেমন নতুনত্ব দেখছেন না। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “বড় ব্যবসায়ীদের প্রভাব রয়েছে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায়। এটি ভাঙতে হবে। শুধু শুল্ক ছাড় দিয়ে বাজারে তেমন প্রভাব আসবে না। সরবরাহ ব্যবস্থা বাড়ানোই আসল সমাধান।” তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে আগ্রহ না থাকায় সরকারকেই পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

এভাবে, নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই

আপডেট সময় : ০২:১৮:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

আন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস ধরে নানা সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও, নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি আসেনি। দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী, যা প্রতিদিন ভোক্তাদের জন্য চাপ তৈরি করছে। বিশেষ করে কিছু অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। এজন্য অবশ্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিন্ডিকেটকে দায়ী করে বলছে— পতিত সরকারের একটি পক্ষ এখনও মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে ভোক্তার হতাশা নতুন কিছু নয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের উদ্যোগে সাধারণ মানুষ কিছুটা আশাও দেখেছিল। কিন্তু তিন মাসেও বাজারে দাম কমেনি। অনেকের মতে, সরকারের পদক্ষেপ আরও কার্যকরী হতে হবে, আবার কেউ বলছেন, বাজার স্থিতিশীল করতে সরকারের আরও সময় দেওয়া উচিত।

এক ক্রেতা, হাকিম হোসেন বলেন, “সরকারের প্রথম তিন মাসে কিছু কাজ হতে পারে, কিন্তু এখন তো আসল পরিবর্তন দরকার। বাজারের অসহনীয় দামে এখনই নজর দিতে হবে।”

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, গত তিন মাসে চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগি, আলুসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। অক্টোবরের শুরুতে সবজির দামও বেড়ে যায়। তবে নভেম্বরে কিছু পণ্যের দাম, যেমন কাঁচামরিচ, কমেছে।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেঁধে দেওয়া হলেও, বাজারে তার তেমন প্রভাব পড়েনি। এরপর সরকারি সংস্থাগুলো ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে।

এদিকে, কৃষিপণ্যের খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা জানায় কৃষি বিপণন অধিদফতর। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রেজা আহমেদ খান বলেন, “ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও খুলনাতেও ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী এর পরিসর আরও বাড়ানো হবে।”

ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, “বাজারে এখনও সিন্ডিকেটের প্রভাব রয়েছে। পতিত সরকারের কেউ কেউ বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অর্থনীতিবিদরা সরকারের উদ্যোগে তেমন নতুনত্ব দেখছেন না। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “বড় ব্যবসায়ীদের প্রভাব রয়েছে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায়। এটি ভাঙতে হবে। শুধু শুল্ক ছাড় দিয়ে বাজারে তেমন প্রভাব আসবে না। সরবরাহ ব্যবস্থা বাড়ানোই আসল সমাধান।” তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে আগ্রহ না থাকায় সরকারকেই পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

এভাবে, নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।