‘নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে, বেতন তো বাড়ে না’
- আপডেট সময় : ১২:১৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ৯৭ বার পড়া হয়েছে
”দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অনেকেই সংসারের খরচের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় এখন আর বেতনের টাকায় সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বেতনের প্রায় সব টাকা বাজারেই শেষ হয়ে যায়।” কালিবাড়ি বাজারে আজ সকালে কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী দারাজুল ইসলাম দুলাল।
তিনি আরো বলেন, ”প্রয়োজনের চেয়ে কিছু সবজি কিনলাম, তাতেই ৩০০টাকা গুণতে হয়েছে। এত হিসাব করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মাছ-মাংস তো অনেক আগেই খাওয়া বাদ দিয়েছি।”
দোকানের পাশে থাকা আরও কয়েকজন বলে উঠলেন, ”প্রায় প্রতিদিন সবকিছুর দাম বাড়লেও বেতন তো বাড়ে না। তাই তাঁরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। কারণে-অকারণে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো হয়” অভিযোগ করে নয়ন বলেন, ”কখন কোন জিসিনের দাম বাড়ে তা আগে থেকে আমাদের জানা সম্ভব হয় না। বাজারে গেলেই দেখি এটা-সেটার দাম বেড়ে গেছে। তবে হুটহাট করে নিত্যপণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই” বলে মনে করছেন তিনি।
বাজার করতে আসা রায়হান ইসলাম বলেন, ”পরিবারে স্কুলপড়ুয়া সন্তান রয়েছে তিনজন। সঙ্গে আছেন মা-বাবা ও ছোট বোন। সব মিলিয়ে আটজনের সংসার। তাই বাধ্য হয়ে তিনি সঞ্চয় ভেঙ্গে প্রতি মাসে খরচ চালাচ্ছেন। এভাবে চললে সেই টাকাও একসময় শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। সোনালী নামে এক এনজিও কর্মী বলেন, “সবকিছুতে দাম বাড়তি। প্রয়োজনের অনেক কিছুই এখন কেনা সম্ভব না। এখন দেখছি সবজির বাজারও হাত পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। সারা মাস চাকরি করে যে বেতন পাই, ব্যাগ ভরে যদি এক দিন বাজার করি, তাতেই বেতনের অর্ধেক টাকা শেষ হয়ে যায়।”
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও শহরের পাইকারি বাজার আড়ত, কালিবাড়ি বাজার, রোড বাজার, গোধূলি বাজার ও সেনুয়া কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে বাজারে বেশকয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। দোকানে দোকানে দাম নিয়ে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাগবিতণ্ডা। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিমের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা কষ্টে পড়ে গেছেন। বেশকিছু ক্রেতাকে দাম শুনে খালি হাতে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে বিক্রেতারাও মুরগি ও ডিমের দাম দফায় দফায় বাড়ার কোনো সঠিক কারণ বলতে পারছেন না। কালিবাড়ি বাজারে মুরগি বিক্রেতা আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, সরবরাহ কম তাই দাম বেশি শুধু এটুকুই জানি। আমরা বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম এভাবে বাড়ুক আমরা সেটা চাই না। কারণ দাম বাড়ায় বিক্রি কম হচ্ছে।
অন্যদিকে বাজারে সবজির দামও কিন্তু খুব বেশি স্বস্তিদায়ক নয়। নতুন সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কমে আসায় শীতের সবজির দামও বাড়ছে। প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। তবে সবজির এমন দামকে বেশি বলে মানতে নারাজ বিক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, বাজারে আগের তুলনায় সবজি দাম কিছুটা কমেছে।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার ঠাকুরগাঁও জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ শেখ সাদী সোনালীনিউজকে বলেন, ”প্রতিদিনই আমরা বাজার তদারক করছি। অনিয়ম পেলে শাস্তিও দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।”