ঢাকা ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:১০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের পদত্যাগের দাবি জোরাল হতে থাকা এবং দেশে নেতৃত্ব সংকট গভীর হওয়ার মধ্যে তার ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে। সোমবার বিচার বিভাগের এক কর্মকর্তা এ ঘোষণার কথা জানিয়েছেন।

ইউন দেশে সামরিক আইন জারি এবং চাপের মুখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করার পর অভিশংসনের মুখে পড়েন। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আনা অভিশংসন প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেছে।

এরপরও পদত্যাগের জন্য চাপসহ আরও নানামুখী চাপে আছেন প্রেসিডেন্ট ইউন। এসব চাপের মধ্যেই তার বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ হল।

সামরিক আইন জারির জন্য ইউন জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার রাজনৈতিক ও আইনি ভাগ্য তিনি নিজের ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) কাছে ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে ইউন পদত্যাগ করেননি।

সোমবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউন এখনও আইনত কমান্ডার ইন চিফ, কিন্তু তার বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধিতা তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

পার্লামেন্টের শুনানিতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত কার্যালয়ের প্রধান ওহ ডং-উন বলেন, তিনি ইউনের বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছেন।

বিচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বে সাং-আপ পার্লামেন্ট কমিটিকে বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আদেশ কার্যকর করা হয়েছে।

এর আগে, ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন ইউন। তার এ ঘোষণায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়।

কিন্তু পার্লামেন্ট তার জারি করা ডিক্রির বিরুদ্ধে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দেওয়ার জন্য সামরিক বাহিনী ও পুলিশের বেষ্টনি উপেক্ষা করার পর আদেশ বাতিল করেন তিনি, তার মধ্যেই প্রায় ছয় ঘণ্টা পার হয়ে যায়।

কিন্তু তার এই পদক্ষেপে এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র দেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।গণতান্ত্রিক সাফল্যের গাথা রচনাকারী দক্ষিণ কোরিয়ার অর্জিত সুনাম নষ্ট হওয়ার হুমকি তৈরি হয়।

রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার জন্য পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার সমর্থন দরকার ছিল। এটি নিশ্চিত করতে বিরোধীদের ইউনের দল রক্ষণশীল পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) অন্তত আটজন সদস্যের সমর্থন দরকার ছিল।

কিন্তু পিপিপির আইনপ্রণেতারা অন্য একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর অধিবেশন ছেড়ে চলে যায়, এ সময় পার্লামেন্টের কিছু সদস্য চিৎকার করে তাদের অভিসম্পাত করেন। ইউনের দলের মাত্র তিনজন ভোট দেন।

এর আগে শনিবার সকালেই জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রেসিডেন্ট, কিন্তু অভিশংসন ভোটের আগে তিনি পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আপডেট সময় : ১১:১০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের পদত্যাগের দাবি জোরাল হতে থাকা এবং দেশে নেতৃত্ব সংকট গভীর হওয়ার মধ্যে তার ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে। সোমবার বিচার বিভাগের এক কর্মকর্তা এ ঘোষণার কথা জানিয়েছেন।

ইউন দেশে সামরিক আইন জারি এবং চাপের মুখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করার পর অভিশংসনের মুখে পড়েন। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আনা অভিশংসন প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেছে।

এরপরও পদত্যাগের জন্য চাপসহ আরও নানামুখী চাপে আছেন প্রেসিডেন্ট ইউন। এসব চাপের মধ্যেই তার বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ হল।

সামরিক আইন জারির জন্য ইউন জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার রাজনৈতিক ও আইনি ভাগ্য তিনি নিজের ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) কাছে ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে ইউন পদত্যাগ করেননি।

সোমবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউন এখনও আইনত কমান্ডার ইন চিফ, কিন্তু তার বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধিতা তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

পার্লামেন্টের শুনানিতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত কার্যালয়ের প্রধান ওহ ডং-উন বলেন, তিনি ইউনের বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছেন।

বিচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বে সাং-আপ পার্লামেন্ট কমিটিকে বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আদেশ কার্যকর করা হয়েছে।

এর আগে, ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন ইউন। তার এ ঘোষণায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়।

কিন্তু পার্লামেন্ট তার জারি করা ডিক্রির বিরুদ্ধে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দেওয়ার জন্য সামরিক বাহিনী ও পুলিশের বেষ্টনি উপেক্ষা করার পর আদেশ বাতিল করেন তিনি, তার মধ্যেই প্রায় ছয় ঘণ্টা পার হয়ে যায়।

কিন্তু তার এই পদক্ষেপে এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র দেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।গণতান্ত্রিক সাফল্যের গাথা রচনাকারী দক্ষিণ কোরিয়ার অর্জিত সুনাম নষ্ট হওয়ার হুমকি তৈরি হয়।

রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার জন্য পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার সমর্থন দরকার ছিল। এটি নিশ্চিত করতে বিরোধীদের ইউনের দল রক্ষণশীল পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) অন্তত আটজন সদস্যের সমর্থন দরকার ছিল।

কিন্তু পিপিপির আইনপ্রণেতারা অন্য একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর অধিবেশন ছেড়ে চলে যায়, এ সময় পার্লামেন্টের কিছু সদস্য চিৎকার করে তাদের অভিসম্পাত করেন। ইউনের দলের মাত্র তিনজন ভোট দেন।

এর আগে শনিবার সকালেই জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রেসিডেন্ট, কিন্তু অভিশংসন ভোটের আগে তিনি পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।