ঢাকা ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দ. কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে নিহত ২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় দাবানলের কারণে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হাজার হাজার দমকলকর্মী এবং সেনা সদস্যরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছেন।

সপ্তাহান্তে এক ডজনেরও বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে প্রায় ২৭ হাজার মানুষকে জরুরিভিত্তিতে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খবর আল-জাজিরা ও রয়টার্সের।

দক্ষিণ কোরিয়ার বনবিভাগ জানিয়েছে, বুধবার (২৬ মার্চ) পর্যন্ত দেশব্যাপী কমপক্ষে পাঁচটি সক্রিয় দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছেন দমকলকর্মীরা।

কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ এ নিয়ন্ত্রণে না আসায় হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।

দেশটির স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, দাবানলে ২৪ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া এতে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দেশজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত দুটি স্থান দাবানলে পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

গত কয়েক দিনে দেশটির এক ডজনেরও বেশি স্থানে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে ২৭ হাজারের বেশি মানুষকে জরুরি-ভিত্তিতে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। দাবানলের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, দাবানলে যারা মারা গেছেন, তারা স্থানীয় বাসিন্দা। তবে নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে তিনজন দমকল কর্মী রয়েছেন। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণের সময় একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে একজন পাইলটও নিহত হয়েছেন।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দাবানলে ইতোমধ্যে দেশের ১৭ হাজার ৩৯৮ হেক্টর জমি পুড়ে গেছে। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ পুড়েছে কেবল ইউসিয়ং কাউন্টিতে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের হিসেবে এবারের এই দাবানলকে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে ‘‘দ্বিতীয় ভয়াবহ’’ ঘটনা বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে, ২০০০ সালের এপ্রিলে দেশটিতে ভয়াবহ আরেক দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় দেশটির পূর্ব উপকূলজুড়ে ২৩ হাজার ৯১৩ হেক্টর জমি পুড়ে যায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার দেশজুড়ে দাবানলের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। দাবানল কবলিত এলাকার কারাবন্দিদের অন্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হ্যান ডাক-সু বলেছেন, ‘টানা পঞ্চম দিনের মতো দাবানল জ্বলছে…। এতে নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

দেশটির জাতীয় জরুরি নিরাপত্তা ও দুর্যোগ সভায় হ্যান ডাক-সু বলেছেন, দাবানল বিদ্যমান পূর্বাভাসের সব মডেল এবং পূর্ববর্তী ধারণা উভয়কেই ভুল প্রমাণ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দ. কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে নিহত ২৪

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় দাবানলের কারণে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হাজার হাজার দমকলকর্মী এবং সেনা সদস্যরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছেন।

সপ্তাহান্তে এক ডজনেরও বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে প্রায় ২৭ হাজার মানুষকে জরুরিভিত্তিতে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খবর আল-জাজিরা ও রয়টার্সের।

দক্ষিণ কোরিয়ার বনবিভাগ জানিয়েছে, বুধবার (২৬ মার্চ) পর্যন্ত দেশব্যাপী কমপক্ষে পাঁচটি সক্রিয় দাবানল নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছেন দমকলকর্মীরা।

কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ এ নিয়ন্ত্রণে না আসায় হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।

দেশটির স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, দাবানলে ২৪ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া এতে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দেশজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত দুটি স্থান দাবানলে পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

গত কয়েক দিনে দেশটির এক ডজনেরও বেশি স্থানে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে ২৭ হাজারের বেশি মানুষকে জরুরি-ভিত্তিতে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। দাবানলের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, দাবানলে যারা মারা গেছেন, তারা স্থানীয় বাসিন্দা। তবে নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে তিনজন দমকল কর্মী রয়েছেন। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণের সময় একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে একজন পাইলটও নিহত হয়েছেন।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দাবানলে ইতোমধ্যে দেশের ১৭ হাজার ৩৯৮ হেক্টর জমি পুড়ে গেছে। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ পুড়েছে কেবল ইউসিয়ং কাউন্টিতে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের হিসেবে এবারের এই দাবানলকে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে ‘‘দ্বিতীয় ভয়াবহ’’ ঘটনা বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে, ২০০০ সালের এপ্রিলে দেশটিতে ভয়াবহ আরেক দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় দেশটির পূর্ব উপকূলজুড়ে ২৩ হাজার ৯১৩ হেক্টর জমি পুড়ে যায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার দেশজুড়ে দাবানলের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। দাবানল কবলিত এলাকার কারাবন্দিদের অন্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হ্যান ডাক-সু বলেছেন, ‘টানা পঞ্চম দিনের মতো দাবানল জ্বলছে…। এতে নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

দেশটির জাতীয় জরুরি নিরাপত্তা ও দুর্যোগ সভায় হ্যান ডাক-সু বলেছেন, দাবানল বিদ্যমান পূর্বাভাসের সব মডেল এবং পূর্ববর্তী ধারণা উভয়কেই ভুল প্রমাণ করেছে।