ঢাকা ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ নিহত মোহনপুরে সড়ক-দুর্ঘটনা কমাতে সদর সার্কেল হেলেনার অভিযান মোহনপুরে জেলা প্রশাসকের সাথে সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের মতবিনিময় সভা নারায়ণগঞ্জে পলিথিনের ব্যাগে মিলল যুবকের ৭ টুকরো লাশ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করুন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জলবিদ্যুৎ ভাগাভাগিতে দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড তৈরির প্রস্তাব ড. ইউনূসের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব সংস্কারের ১৫১ সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি ঘোষণা চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাগান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় অলংকার বোঝাই ট্রাক জব্দ, চালক আটক

দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী মারা গেছেন

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩ ৬৭ বার পড়া হয়েছে

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জামান ঢাকা মেইলকে সাঈদীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান।

প্রফেসর ডা. মোস্তফা জামান ঢাকা মেইলকে জানান, সারাদিন তিনি ভালোই ছিলেন। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়। আমরা তার সর্বোত্তম চিকিৎসা চালিয়ে যেতে থাকি। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে সাঈদী সাহেবের অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে ৭টা ১০ মিনিটে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ৮টা ৪০ মিনিটে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ সময় উনার ছেলেরা পাশেই ছিলেন।

এর আগে, রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে কাশিমপুর কারাগারের একটি অ্যাম্বুলেন্সে বিএসএমএমইউতে আনা হয়। কারাগারে বুকে ব্যথা অনুভব করলে প্রথমে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়।

কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় করাগার পার্ট-১ বন্দি আছেন। সেখানে রোববার বিকেল ৫টার দিকে তিনি বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের ইন্দুরকানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন তার বাবার প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় একটি মাদরাসায়। তিনি ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন ও পরে খুলনা আলিয়া মাদরাসায় স্থানান্তরিত হন। বাংলা, উর্দু, আরবি ও পাঞ্জাবি ভাষায় দক্ষ এবং ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়ও তার দক্ষতা রয়েছে।

১৯৮০’র দশকের প্রথমদিকে সাঈদী দেশব্যাপী ইসলামী ওয়াজ-মাহফিল ও তাফসির করা শুরু করেন এবং তার সুন্দর বক্তব্যদানের জন্য দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এ সময়ই তিনি রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম নেতা নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নির্বাচনী জোট গঠন করে এবং তিনি এই নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী মারা গেছেন

আপডেট সময় : ০৫:৩৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জামান ঢাকা মেইলকে সাঈদীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত রাত ৮ টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান।

প্রফেসর ডা. মোস্তফা জামান ঢাকা মেইলকে জানান, সারাদিন তিনি ভালোই ছিলেন। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়। আমরা তার সর্বোত্তম চিকিৎসা চালিয়ে যেতে থাকি। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে সাঈদী সাহেবের অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে ৭টা ১০ মিনিটে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ৮টা ৪০ মিনিটে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ সময় উনার ছেলেরা পাশেই ছিলেন।

এর আগে, রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে কাশিমপুর কারাগারের একটি অ্যাম্বুলেন্সে বিএসএমএমইউতে আনা হয়। কারাগারে বুকে ব্যথা অনুভব করলে প্রথমে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়।

কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় করাগার পার্ট-১ বন্দি আছেন। সেখানে রোববার বিকেল ৫টার দিকে তিনি বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের ইন্দুরকানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন তার বাবার প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় একটি মাদরাসায়। তিনি ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন ও পরে খুলনা আলিয়া মাদরাসায় স্থানান্তরিত হন। বাংলা, উর্দু, আরবি ও পাঞ্জাবি ভাষায় দক্ষ এবং ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়ও তার দক্ষতা রয়েছে।

১৯৮০’র দশকের প্রথমদিকে সাঈদী দেশব্যাপী ইসলামী ওয়াজ-মাহফিল ও তাফসির করা শুরু করেন এবং তার সুন্দর বক্তব্যদানের জন্য দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এ সময়ই তিনি রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম নেতা নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নির্বাচনী জোট গঠন করে এবং তিনি এই নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।