ত্রিশালে দলিল লিখক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৪:২০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪ ৫ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহের ত্রিশালে সাবরেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লিখক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের হয়রানি ও ষড়যন্ত্র করছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম সরকার । শরিফুল ইসলাম সরকার অভিযোগ করে বলেন,আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিবেশী ও প্রতিপক্ষের কয়েকজন ব্যক্তি আমার নামে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম অভিযোগ করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে । যাহা হান্ড্রেড পার্সেন্ট মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি জানান- আমি সবসময় ত্রিশাল সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের দলিল লিখকদের কল্যাণে তাদের পাশে থাকি,আর এজন্যই তারা আমাকে বারবার ভোট দিয়ে সমিতির সভাপতি পদে নির্বাচিত করে। আরেকটি প্রতিপক্ষ দলিল লিখকদের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা না থাকার ফলে দলিল লিখকরা তাদের বয়কট করে। যার ফলে আমার জনপ্রিয়তার কাছে তারা বার-বার পরাজিত হওয়ায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।
তিনি আরও বলেন, এই কুচক্রী মহল আমাকে কর্মক্ষেত্রে ও সামাজিকভাবে হেয় করতেই এমনটা করেছে তারা। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষ অভিযোগ কারীদের বিচার দাবি করছি।
এর আগেও তার নামে বিভিন্ন ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সমিতির কার্যকরি সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছিলো,পরে তারা সমিতির সাধারণ সভায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতার প্রমান করতে না পেয়ে দুঃখ প্রকাশ করে অভিযোগ উড্ড করার মাধ্যমে উভয় পক্ষের মাঝে সমাধান হয়েছিলো বলেও জানা গেছে।
সুত্র মতে জানা গেছে-ত্রিশালে ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইন উপেক্ষা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতো একটি চক্র,পৌর সভার ক্ষেত্রে নেওয়া হচ্ছে ১৮ থেকে ২০% টাকা। দলিল লেখক সমিতির নামে সিন্ডিকেট করে রাখা হতো। এর মাধ্যমে মাত্রা অতিরিক্ত কমিশন আদায় করা হতো ভূমি ক্রেতাদের কাছ থেকে।
অপরদিকে হেবা বা দানপত্র ভূমি রেজিস্ট্রেশনের যাবতীয় খরচ ২ হাজার টাকার স্থলে ১০ হাজার টাকা অবধি আদায় করে ত্রিশাল দলিল লিখক সমিতির সুনাম নষ্ট করতো একটি পক্ষ।তবে শরিফুল ইসলাম সরকার দলিল লিখক সমিতির সভাপতি হওয়ার পর এসব অনিয়ম ও সিন্ডিকেট ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটি পক্ষের মাথায় হাত পড়েছে। যে কারণে তারা শরিফুল ইসলাম সরকারকে দলিল লিখক সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরাতে কৌশলগতভাবে তার বিরুদ্ধে সমিতির অর্থ আত্মসাৎ এর ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমোলক অভিযোগ করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবী করেন দলিল লিখক সমিতির সিংহভাগ সদস্যরা।
ত্রিশাল সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কয়েকজন দলিল লিখক জানান- শরিফুল ইসলাম সরকার একজন পরোপকারী নীতিবান ব্যক্তিত্ব।যিনি দলিল লিখক সমিতির সভাপতি হওয়ার পর সমিতির সদস্যদের জন্য মৃত্যুকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। শরিফুল ইসলাম সরকার নিজেও দুর্ণীতি করেন না-আর দুর্ণীতি ও অনিয়মকে প্রশ্রয় দেন না,তিনি যদি দুর্ণীতি করতেন তাহলে বিভিন্ন ব্যাংকে
তার নামে একাউন্ট থাকতো,গাড়ী-বাড়ী থাকতো, তার যে ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে সেটি তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহার হলেও ব্যাংকে কোন টাকা পয়সা নেই।,গাড়ী- বাড়ীও নেই। তাদের দাবী সমিতির আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র তিনি যেন প্রার্থী হতে না পারে সেজন্যই তার নামে এমন বদনাম ছড়াচ্ছে প্রতিপক্ষ। শরিফুল ইসলাম সরকারকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসাবে প্রতিপক্ষ দাবী করলেও সদস্যদের দাবী তিনি আওয়ামী লীগের কোন সদস্যই না,কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেও দেখা যায়নি তাকে বরং তিনি গত ২০০১ সালে তার নিজ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। অবশ্য দলের এই পদে থাকলেও রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় না থেকে অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে সব দলের নেতাকর্মীদের মিলেমিশে রয়েছেন তিনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তিনি যেন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠতে না পারেন এজন্যই মুলত তার বিরুদ্ধে এসব চক্রান্ত করা হচ্ছে এমনটাও দাবী উঠেছে বিভিন্ন মহলে। মুলতঃ যেখানে সমিতির অর্থ কোন খাতে ব্যয় করলে তাহা অনুমোদনে প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ার ভাউচারে স্বাক্ষর করার পর সর্বশেষ সভাপতির সাক্ষর করে তাহা অনুমোদন দেয়, সেখানে সভাপতি অর্থ আত্মসাৎ করার সুযোগ পাবে কথায় এটাই এখন সর্ব মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমানে ত্রিশাল দলিল লিখক সমিতির কোন নির্বাচিত কমিটি নেই, আছে নির্বাচন প্রস্তুতিকালীন কমিটি। এই কমিটি শরিফুল ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর কোন প্রমাণ না পেলেও প্রতিপক্ষ রফিকুল ইসলামের অভিযোগে সংবাদপত্রে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করায় প্রশ্ন উঠেছে রফিকুল ইসলাম কোথায় জানলেন শরিফুল ইসলাম সরকার অর্থ আত্মসাৎ করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে? এই প্রশ্নটাও দলিল লিখকদের মাঝে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
দলিল লিখকদের কেউ-কেউ জানান- রফিকুল ইসলাম আসন্ন দলিল লিখক সমিতির নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী , তাই শরিফুল ইসলাম সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তিনি এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করেছেন। অথচ- বিগত সময়ে শরিফুল ইসলাম সরকার ৩বার দলিল লিখক সমিতির সভাপতি ছিলেন। পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ত্রিশাল উপজেলা শাখার দায়িত্বে ছিলেন,তার দায়িত্ব পালনকালে কোন শ্রমিক তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলো না, তার কাছে কেউ হয়রানির শিকার হয়নি,তার সাথে কারো কোন ধরনের কথা কাটাকাটি, ভূল বুঝাবুঝি বা ঝগড়াঝাটিও হয়নি এমনটিই দাবী করেছেন সমিতির সদস্যরা।
সুত্র মতে- গত ২০২১ সালেও শরিফুল ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করা হলে সেটিও সমিতির সাধারণ সভায় মিথ্যা ও বানোয়াট বলে প্রমাণিত হয়।