ঢাকা ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন মাসে কোটিপতি হিসাবধারী বেড়েছে ৩৪২৬টি

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:১৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩ ১০৮ বার পড়া হয়েছে

দেশে ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত তিন মাসে কোটিপতি হিসাবধারী বেড়েছে সাড়ে তিন হাজারের মতো।

২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে তিন মাসে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টে যোগ হয়েছে আরও ৩ হাজার ৪২৬টি হিসাব। বিশ্ববাজারের ন্যায় দেশের বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক মুনাফা করায় কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে বলে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোয় জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। মোট ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৪টি হিসাবে এই আমানত জমা হয়েছে। এসব হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোটিপতিদের যে আমানত রয়েছে তা মোট ব্যাংকিং খাতের আমানতের ৪২.৬৩ শতাংশ। ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি হিসাবে। শুধু কোটি টাকার ওপরে এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ডিসেম্বর শেষে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯৯৪৬। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬৫২০। অর্থাৎ তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪২৬টি।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।

২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি। এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ১২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। আর কোটি টাকার ওপরে এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টি হিসাবে জমার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার বেশি আমানতের হিসাব ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। হিসাবগুলোতে জমার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।

২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ১৬৭টি। যেখানে জমার পরিমাণ এক লাখ ৮০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটির ১১ হাজার ৯৪৫টি হিসাবে জমার পরিমাণ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।

এছাড়া ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা রয়েছে তিন হাজার ৮৪৫টি, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১৮৩৩টি, ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটির মধ্যে এক হাজার ১৪৩টি, ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৮৮৭টি আমানতকারীর হিসাব।

আর ৩০ কোটি থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪৭২টি এবং ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৩১৫টি, ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৫৭৭টি। তাছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা এক হাজার ৭৬২টি। এসব হিসাবে দুই লাখ ২৯ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত এপ্রিল থেকে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম ব্যাপক বাড়ায় অনেক ব্যবসায়ীদের আগে থেকে ক্যাপিটাল মেশিনারিজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকৃত পণ্য মজুদ ছিল। যার কারণে বিশ্ববাজারের ন্যায় ওইসব পণ্যের দাম দেশের বাজারে অেনেক বেড়ে যায়। এর ফলে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ব্যাপক লাভ করেছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তিন মাসে কোটিপতি হিসাবধারী বেড়েছে ৩৪২৬টি

আপডেট সময় : ০৮:১৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

দেশে ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত তিন মাসে কোটিপতি হিসাবধারী বেড়েছে সাড়ে তিন হাজারের মতো।

২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে তিন মাসে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টে যোগ হয়েছে আরও ৩ হাজার ৪২৬টি হিসাব। বিশ্ববাজারের ন্যায় দেশের বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক মুনাফা করায় কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে বলে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোয় জমাকৃত আমানতের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। মোট ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৪টি হিসাবে এই আমানত জমা হয়েছে। এসব হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোটিপতিদের যে আমানত রয়েছে তা মোট ব্যাংকিং খাতের আমানতের ৪২.৬৩ শতাংশ। ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি হিসাবে। শুধু কোটি টাকার ওপরে এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ডিসেম্বর শেষে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯৯৪৬। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬৫২০। অর্থাৎ তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪২৬টি।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।

২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি। এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ১২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। আর কোটি টাকার ওপরে এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টি হিসাবে জমার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার বেশি আমানতের হিসাব ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। হিসাবগুলোতে জমার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।

২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ১৬৭টি। যেখানে জমার পরিমাণ এক লাখ ৮০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটির ১১ হাজার ৯৪৫টি হিসাবে জমার পরিমাণ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।

এছাড়া ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা রয়েছে তিন হাজার ৮৪৫টি, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১৮৩৩টি, ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটির মধ্যে এক হাজার ১৪৩টি, ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৮৮৭টি আমানতকারীর হিসাব।

আর ৩০ কোটি থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪৭২টি এবং ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৩১৫টি, ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৫৭৭টি। তাছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা এক হাজার ৭৬২টি। এসব হিসাবে দুই লাখ ২৯ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত এপ্রিল থেকে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম ব্যাপক বাড়ায় অনেক ব্যবসায়ীদের আগে থেকে ক্যাপিটাল মেশিনারিজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকৃত পণ্য মজুদ ছিল। যার কারণে বিশ্ববাজারের ন্যায় ওইসব পণ্যের দাম দেশের বাজারে অেনেক বেড়ে যায়। এর ফলে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ব্যাপক লাভ করেছে।’