ঢাকা ০৩:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঋণের টাকা না পেয়ে নারীকে রাতে তালাবদ্ধ করে রাখল পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ায় নিখোঁজ অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ক্রিকেটে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ক্যাম্ফার পাকিস্তানে বাস থামিয়ে ৯ যাত্রীকে অপহরণের পর হত্যা উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক : প্রধান উপদেষ্টা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি রাষ্ট্রপতির ইসরাইলি বর্বরতায় একদিনে আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত গ্লোবাল সুপার লিগ : খালেদের ৪ উইকেটে জয়ে শুরু রংপুরের ২১ জেলায় পানির নিচে ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল টানা বৃষ্টির প্রভাব কাঁচাবাজারে, মরিচের কেজি প্রায় ৩০০ টাকা

তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া, বিশ্বে প্রথম উদাহরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০২:১০:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। এর মাধ্যমে তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে মস্কো। খবর আল-জাজিরার।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কাবুলে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠকে রুশ রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনোভ এ স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। এ সময় মুত্তাকি বলেন, ‘রাশিয়ার এই সাহসী সিদ্ধান্ত পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ইতিবাচক সম্পর্ক এবং গঠনমূলক সহযোগিতার একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করল।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। বিশেষত জ্বালানি, পরিবহন, কৃষি এবং অবকাঠামো খাতে অংশীদারিত্বের পাশাপাশি সন্ত্রাস ও মাদক পাচার রোধে কাবুলকে সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানানো হয়।

২০১৮ সাল থেকেই তালেবান নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত মস্কোতে আলোচনা করে আসছে রাশিয়া। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পরও রাশিয়া কাবুলে দূতাবাস চালু রেখেছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী মিত্র’ বলে অভিহিত করেন। এমনকি চলতি বছর রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে।

২০২২ সালে আফগানিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করে রাশিয়া, যার আওতায় তেল, গ্যাস ও গম সরবরাহে সম্মত হয় তারা।

তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা আগের মতোই তীব্র। বিশেষ করে নারী শিক্ষা, স্বাধীনতা খর্ব এবং কঠোর শরিয়া আইন প্রয়োগের অভিযোগে মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার জব্দ করে রেখেছে।

চীন, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উজবেকিস্তান কাবুলে দূতাবাস চালু রাখলেও তারা এখনো তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। ভারতও শুধু সীমিত কূটনৈতিক সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে, তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়ে রাশিয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া, বিশ্বে প্রথম উদাহরণ

আপডেট সময় : ০২:১০:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। এর মাধ্যমে তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে মস্কো। খবর আল-জাজিরার।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কাবুলে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠকে রুশ রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনোভ এ স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। এ সময় মুত্তাকি বলেন, ‘রাশিয়ার এই সাহসী সিদ্ধান্ত পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ইতিবাচক সম্পর্ক এবং গঠনমূলক সহযোগিতার একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করল।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। বিশেষত জ্বালানি, পরিবহন, কৃষি এবং অবকাঠামো খাতে অংশীদারিত্বের পাশাপাশি সন্ত্রাস ও মাদক পাচার রোধে কাবুলকে সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানানো হয়।

২০১৮ সাল থেকেই তালেবান নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত মস্কোতে আলোচনা করে আসছে রাশিয়া। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পরও রাশিয়া কাবুলে দূতাবাস চালু রেখেছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী মিত্র’ বলে অভিহিত করেন। এমনকি চলতি বছর রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে।

২০২২ সালে আফগানিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করে রাশিয়া, যার আওতায় তেল, গ্যাস ও গম সরবরাহে সম্মত হয় তারা।

তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা আগের মতোই তীব্র। বিশেষ করে নারী শিক্ষা, স্বাধীনতা খর্ব এবং কঠোর শরিয়া আইন প্রয়োগের অভিযোগে মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার জব্দ করে রেখেছে।

চীন, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উজবেকিস্তান কাবুলে দূতাবাস চালু রাখলেও তারা এখনো তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। ভারতও শুধু সীমিত কূটনৈতিক সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে, তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়ে রাশিয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।