ঢাকা ১০:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তারা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কীভাবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১০১ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে-এমন দাবি করে তারা আবার কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের কথা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, আগুন নিয়ে খেলেছে। বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের বিরুদ্ধে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করে তখন তাদের কী হবে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ওদের অপকর্মের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে যেন কেউ আর কোনো দিন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে এই বাংলাদেশের রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ থেকে শুরু খাদ্য উৎপাদন, চিকিৎসাসেবা, মাতৃমৃত্যু হার কমানো, শিশুমৃত্যু হার কমানো, নারী ক্ষমতায়ন অর্থাৎ জাতিসংঘের সেই এসডিজি সেটা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এই করোনাভাইরাস সেটা আমরা মোকাবেলা করেছি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে। অনেক উন্নত দেশে লাশের পর লাশ পড়ে থেকেছে। আমরা আগাম সমস্ত ব্যবস্থা নিয়ে প্রত্যেকটা মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া এবং চিকিৎসা সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছি। যার ফলে আমরা কিন্তু এটা মোকাবেলা করতে পেরেছি। বিনা পয়সায় কোনো দেশ কিন্তু ভ্যাকসিন দেয়নি। বাংলাদেশ দিয়েছে। আমরা দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অত টাকা পয়সা নেই, কিন্তু আমাদের মনটা বড়। দেশের মানুষের ভালো-মন্দ আমরা চিন্তা করি। মানুষের জন্য আমরা ভাবি৷ একটার পর, একটার পর একটা ঝামেলায় এসেছে। মানুষ সৃষ্ট দুর্যোগ একটা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাস। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি নানা ধরনের সেগুলো যেমন আমরা মোকাবেলা করেছি, করোনাভাইরাস মোকাবেলা করেছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত করেছি। বাংলাদেশকে এখন আমরা উন্নত দেশে গড়ে তুলবো সেই পরিকল্পনা নেওয়া আছে। কিন্তু এজন্য দরকার জনগণের ভোটের অধিকার। আওয়ামী লীগই সে অধিকার নিশ্চিত করেছে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্মই হয়েছে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে। যে সংগঠনের জন্ম অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হাত থেকে যে ক্ষমতা দখল করেছিল, তার ক্ষমতা দখলকে উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হাতে যে সংগঠন গড়ে উঠেছে সেটাও তো অবৈধ। কাজেই দেশবাসী যেন সেটা জানে, তাদেরকে অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যান করে দেশবাসীর কাছে আমার সেটাই আবেদন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরা এদেশের মানুষের জন্য মঙ্গল চায় না। ওরা দেশটাকে ক্ষমতায় থাকতে খুবলে খুবলে খেয়ে গেছে। আমাদের সংবিধানকে তারা একনিষ্ঠ করেছে। আমাদের স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে। একটা জাতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার সব কিছু তারা করেছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে ১৪ বছরের আমরা সেখান থেকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে বাংলাদেশকে একটা বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে জাতি আছে অধিষ্ঠিত অর্থাৎ এইটুকু আমরা করতে পেরেছি। এখন আর বাংলাদেশকে কেউ ভিক্ষুকের জাতি মনে করে না, এখন বাংলাদেশকে কেউ কারো কাছে হাত পাতা জাতি মনে করে না। এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল মনে করে। এটা মাথায় রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমি বলব এই উন্নয়ন ধরে রেখেই আমাদের সামনে আমরা যে কাজগুলো করেছি এলাকাভিত্তিক বা দেশের জন্য শুধু সেই কথাগুলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে ভোটের আর কোনো সমস্যা আমাদের নেই। আর এই ক্ষমতা আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে যেভাবে আমরা উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছি, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ঠিক রেখে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ওদের হাতে ক্ষমতা গেলে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাও ওরা ধ্বংস করে দেবে। মানুষের কাছে আমাদের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।’

মাতৃভাষা আন্দোলনে জাতির জনকের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তার কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী না প্রকাশ হলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছেই ফেলা হতো।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগই প্রথম ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস পালনের ঘোষণা দেয়। ভাষার জন্য যারা রক্ত দিয়েছে তাদের আত্মদান বৃথা যেতে দেয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্য ভাষা শিখতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে মাতৃভাষায় গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের মায়ের ভাষা বলতে লজ্জা কোথায়-প্রশ্ন সরকারপ্রধানের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তারা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কীভাবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৪৯:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে-এমন দাবি করে তারা আবার কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের কথা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, আগুন নিয়ে খেলেছে। বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের বিরুদ্ধে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করে তখন তাদের কী হবে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ওদের অপকর্মের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে যেন কেউ আর কোনো দিন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে এই বাংলাদেশের রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ থেকে শুরু খাদ্য উৎপাদন, চিকিৎসাসেবা, মাতৃমৃত্যু হার কমানো, শিশুমৃত্যু হার কমানো, নারী ক্ষমতায়ন অর্থাৎ জাতিসংঘের সেই এসডিজি সেটা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এই করোনাভাইরাস সেটা আমরা মোকাবেলা করেছি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে। অনেক উন্নত দেশে লাশের পর লাশ পড়ে থেকেছে। আমরা আগাম সমস্ত ব্যবস্থা নিয়ে প্রত্যেকটা মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া এবং চিকিৎসা সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছি। যার ফলে আমরা কিন্তু এটা মোকাবেলা করতে পেরেছি। বিনা পয়সায় কোনো দেশ কিন্তু ভ্যাকসিন দেয়নি। বাংলাদেশ দিয়েছে। আমরা দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অত টাকা পয়সা নেই, কিন্তু আমাদের মনটা বড়। দেশের মানুষের ভালো-মন্দ আমরা চিন্তা করি। মানুষের জন্য আমরা ভাবি৷ একটার পর, একটার পর একটা ঝামেলায় এসেছে। মানুষ সৃষ্ট দুর্যোগ একটা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাস। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি নানা ধরনের সেগুলো যেমন আমরা মোকাবেলা করেছি, করোনাভাইরাস মোকাবেলা করেছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত করেছি। বাংলাদেশকে এখন আমরা উন্নত দেশে গড়ে তুলবো সেই পরিকল্পনা নেওয়া আছে। কিন্তু এজন্য দরকার জনগণের ভোটের অধিকার। আওয়ামী লীগই সে অধিকার নিশ্চিত করেছে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্মই হয়েছে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে। যে সংগঠনের জন্ম অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হাত থেকে যে ক্ষমতা দখল করেছিল, তার ক্ষমতা দখলকে উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হাতে যে সংগঠন গড়ে উঠেছে সেটাও তো অবৈধ। কাজেই দেশবাসী যেন সেটা জানে, তাদেরকে অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যান করে দেশবাসীর কাছে আমার সেটাই আবেদন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরা এদেশের মানুষের জন্য মঙ্গল চায় না। ওরা দেশটাকে ক্ষমতায় থাকতে খুবলে খুবলে খেয়ে গেছে। আমাদের সংবিধানকে তারা একনিষ্ঠ করেছে। আমাদের স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে। একটা জাতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার সব কিছু তারা করেছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে ১৪ বছরের আমরা সেখান থেকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে বাংলাদেশকে একটা বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে জাতি আছে অধিষ্ঠিত অর্থাৎ এইটুকু আমরা করতে পেরেছি। এখন আর বাংলাদেশকে কেউ ভিক্ষুকের জাতি মনে করে না, এখন বাংলাদেশকে কেউ কারো কাছে হাত পাতা জাতি মনে করে না। এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল মনে করে। এটা মাথায় রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমি বলব এই উন্নয়ন ধরে রেখেই আমাদের সামনে আমরা যে কাজগুলো করেছি এলাকাভিত্তিক বা দেশের জন্য শুধু সেই কথাগুলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে ভোটের আর কোনো সমস্যা আমাদের নেই। আর এই ক্ষমতা আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশকে যেভাবে আমরা উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছি, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ঠিক রেখে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ওদের হাতে ক্ষমতা গেলে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাও ওরা ধ্বংস করে দেবে। মানুষের কাছে আমাদের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।’

মাতৃভাষা আন্দোলনে জাতির জনকের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তার কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী না প্রকাশ হলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছেই ফেলা হতো।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগই প্রথম ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস পালনের ঘোষণা দেয়। ভাষার জন্য যারা রক্ত দিয়েছে তাদের আত্মদান বৃথা যেতে দেয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্য ভাষা শিখতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে মাতৃভাষায় গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের মায়ের ভাষা বলতে লজ্জা কোথায়-প্রশ্ন সরকারপ্রধানের।