তানোরে খাসপুকুর ভরাট ও গাছপালা কেটে সাবাড়! হুমকিতে পরিবেশ

- আপডেট সময় : ১১:৫৯:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাঁধাইড় ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামে নীতিমালা লঙ্ঘন ও উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে অবৈধভাবে প্রায় ১০ বিঘা আয়তনের সরকারি খাসপুকুর ভরাট করা হচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও পুকুর ভরাট করতে গিয়ে রাস্তার ধারের কয়েকটি তাজা আমগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা হয়েছে।
একদিকে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে কৃষি জমি নষ্ট, অন্যদিকে জলাশয় ভরাট করে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। আর এসব বেআইনি কাজ করা হচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালোকে ? অথচ প্রায় সপ্তাহব্যাপি অবৈধভাবে এই পুকুর ভরাট করা হলেও বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নেই। একই সঙ্গে তারা চারটি অপরাধ করছে, প্রথমত প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত ভেকুঁ মেশিন দিয়ে মাটি কাটা, দ্বিতীয়ত এসব মাটিতে সদ্য নির্মিত পাকা রাস্তা নস্ট, তৃতীয়ত জলাশয় ভরাট ও চতুর্থ তাজা পরিপক্ক গাছ নিধন করেছেন। স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও কথিত ডা, সেলিম উদ্দিনের নেপথ্যে মদদে তারা এসব করছেন।
এদিকে ভেকু মেশিন (মাটিকাটা যন্ত্র) ও অবৈধ ট্রাক্টরের বিকট শব্দে জনজীবন অতিষ্ঠ। অন্যদিকে ট্রাক্টরে মাটি বহনের সময় কাঁদা মাটি রাস্তায় পড়ে রাস্তা নষ্ট ও ধুলাবালিতে পরিবেশ দুষণে বাসা বাড়িতে থাকায় কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের এমন অবৈধ মাটি বাণিজ্যে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, নীতিমালা অনুযায়ী জমির শ্রেণি পরিবর্তন বন্ধ রয়েছে। কোথাও কোনো পুরাতন পুকুর খনন করতে চাইলে তা যথাযথ নিয়ম মেনে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে তারপর অনুমোদন নিতে হয়। সেখানেও বলা থাকে পুকুর খননের মাটি যেনো কোনো পাকা বা কাঁচা রাস্তায় না উঠে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের গুসনা বিলবর গ্রামের বেলাল উদ্দিনের পুত্র বদর আলী, নামো শঙ্করবাটি গ্রামের নাসির ও তানোরের খাড়িকুল্লা মৃত ইসমাইল আলীর পুত্র সেলিম উদ্দিন সিন্ডিকেট করে খাস পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে জমি বিক্রির সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, মৌজা হাপানিয়া জেএল নম্বর ৪১, দাগ নম্বর ১৬, শ্রেণি ভিটা-বাড়ি পরিমাণ ১ একর, উপজেলা তানোর, জেলা রাজশাহী।
সরেজমিনে গত বুধবার দেখা যায়, মুল রাস্তার দক্ষিণে রান্নার কাজ চলছে, ভরাটকৃত পুকুর পাড়ে মালিক বদর সহ ভাড়াটিয়া বিভিন্ন ভাবে অবস্থান নিয়ে বসে আছেন। সেখান থেকে আধা কিলোমিটার দূরে গ্রামবাসীরা অবস্থান করছিল। গ্রামবাসী ও বদরসহ ভাড়াটিয়া মুখোমুখি অবস্থান করলেও কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। পাকা রাস্তার উত্তর দিকে পুকুর। পুকুরের দক্ষিণ সাইড ভরাট করা হয়েছে। ভরাট কাজের জন্য বিএনপির কিছু নেতারা তদারকিসহ প্রশাসন ম্যানেজের দায়িত্ব নিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেন গ্রামের প্রবীন ব্যক্তিরা। তবে কাজ শুরু হলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে বলে সুত্র নিশ্চিত করেন।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলামকে গত বুধবার অবহিত করা হলে তিনি বলেন, জায়গার ও ভরাটের ভিডিও থাকলে হটসঅ্যাপে দেন। ইউএনওকে ভিডিও দেয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে বিষয়টি সম্পর্কে পুনরায় জানতে চাইলে তিনি জানান ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। মাপজোক করে খাস জায়গা ও পুকুর ভরাট এবং গাছপালা কাটার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।