ঢাকা ০২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাড়ে ৫ মাসেও

তানোরে অপারেটরদের জামানতের টাকা ফেরৎ দেয়নি বিএমডিএ

ইমরান হোসাইন//
  • আপডেট সময় : ১০:৪৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ৫১ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীর তানোরে বাদ দেয়ার সাড়ে ৫ মাসেও অপারেটরদের জামানতের টাকা ফেরৎ দেয়নি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। এতে চরম দুুশ্চিন্তায় বেকায়দায় পড়েছেন বিএমডিএর বাদ পড়া ৫১৭টি গভীর নলকূপ অপারেটর। ফলে নিরুপাই হয়ে ১৮ মে রোববার সকালে বেশ কয়েকজন অপারেটর অফিসে গিয়ে জামানত ফেরৎ পাবার ব্যাপারে হৈচৈ করে। এসময় স্থানীয় বিএমডিএ অফিস জামানত ফেরৎ দেবার ব্যাপারে তাদের আশ্বস্ত করলে তারা ফিরে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গেলো বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তানোরে বিএমডিএর সব গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর নতুন অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসব নলকূপের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেতে ১ হাজার ৬৫০ জন আবেদন করে। মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার পর গত জানুয়ারী মাসে প্রায় ৫১৭ জনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর অসন্তোষ হয়ে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তানোর বিএমডিএর জোন কার্যালয় ঘেরাও, এমনকি কার্যালয়ে তালা দিয়ে অফিসের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে চাবি নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে বিএমডিএর কার্যালয় ঘেরাও এর প্রতিবাদে বিএনপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জামায়াত নেতৃবৃন্দ।

এর ফলে মনোনীত হওয়া অপারেটরের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়। পরে অবশ্য তাদের ওই নির্দেশ বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ প্রত্যাহার করে। ফলে নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত পুরুষ অপারেটররা বিধিমতে ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ হাজার করে টাকা জামানত দেন। আর নারী অপারেটরদের কাছে ১৫ হাজার টাকা জামানত নেয়া হয়। এভাবে শুধু তানোরে প্রায় কোটি টাকার ওপরে নতুন অপারেটরদের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন নিয়োগে কোটি টাকার ওপরে আদায় করা হলেও বাদ পড়া একই পরিমান অপারেটরদের জামানতের শুধু ৩০ লাখ টাকা ফেরৎ দিচ্ছে না বিএমডিএ।

এনিয়ে তানোর পৌর এলাকার জিওল মৌজার বাদ পড়া মাসুদ রানা ও আলী হোসেনসহ বেশ কয়েক’শ অপারেটর আক্ষেপ করে বলেন, তারা বিএমডিএর গভীর নলকূপ অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর সাড়ে ৭ হাজার করে টাকা জামানত দেন। আর নারীদের ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ হাজার করে টাকা জামানত আদায় করে বিএমডিএ। এই জামানতের টাকা বিএমডিএ অফিসে কমপক্ষে ১৪ বছর ধরে জমা আছে। সেই সময় তাদের মতো প্রত্যেক অপারেটর মিলে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা জামানত হিসেবে জমা দেন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এবারে তাদের নতুন করে আর নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে তাদের জামানতের টাকা পাবার জন্য আবেদন করে আজও ফেরৎ পাননি তারা।
এব্যাপারে তানোর বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বে) জামিলুর রহমান বলেন, বাদ পড়া অপারেটররা জামানত ফেরৎ নেয়ার বিষয়ে দরখাস্ত করেছেন। সেইমতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে হেড অফিসে পাঠানো হবে। অফিস নির্দেশ মতে জামানত দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাড়ে ৫ মাসেও

তানোরে অপারেটরদের জামানতের টাকা ফেরৎ দেয়নি বিএমডিএ

আপডেট সময় : ১০:৪৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে বাদ দেয়ার সাড়ে ৫ মাসেও অপারেটরদের জামানতের টাকা ফেরৎ দেয়নি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। এতে চরম দুুশ্চিন্তায় বেকায়দায় পড়েছেন বিএমডিএর বাদ পড়া ৫১৭টি গভীর নলকূপ অপারেটর। ফলে নিরুপাই হয়ে ১৮ মে রোববার সকালে বেশ কয়েকজন অপারেটর অফিসে গিয়ে জামানত ফেরৎ পাবার ব্যাপারে হৈচৈ করে। এসময় স্থানীয় বিএমডিএ অফিস জামানত ফেরৎ দেবার ব্যাপারে তাদের আশ্বস্ত করলে তারা ফিরে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গেলো বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তানোরে বিএমডিএর সব গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর নতুন অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসব নলকূপের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেতে ১ হাজার ৬৫০ জন আবেদন করে। মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার পর গত জানুয়ারী মাসে প্রায় ৫১৭ জনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর অসন্তোষ হয়ে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তানোর বিএমডিএর জোন কার্যালয় ঘেরাও, এমনকি কার্যালয়ে তালা দিয়ে অফিসের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে চাবি নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে বিএমডিএর কার্যালয় ঘেরাও এর প্রতিবাদে বিএনপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জামায়াত নেতৃবৃন্দ।

এর ফলে মনোনীত হওয়া অপারেটরের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়। পরে অবশ্য তাদের ওই নির্দেশ বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ প্রত্যাহার করে। ফলে নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত পুরুষ অপারেটররা বিধিমতে ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ হাজার করে টাকা জামানত দেন। আর নারী অপারেটরদের কাছে ১৫ হাজার টাকা জামানত নেয়া হয়। এভাবে শুধু তানোরে প্রায় কোটি টাকার ওপরে নতুন অপারেটরদের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন নিয়োগে কোটি টাকার ওপরে আদায় করা হলেও বাদ পড়া একই পরিমান অপারেটরদের জামানতের শুধু ৩০ লাখ টাকা ফেরৎ দিচ্ছে না বিএমডিএ।

এনিয়ে তানোর পৌর এলাকার জিওল মৌজার বাদ পড়া মাসুদ রানা ও আলী হোসেনসহ বেশ কয়েক’শ অপারেটর আক্ষেপ করে বলেন, তারা বিএমডিএর গভীর নলকূপ অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর সাড়ে ৭ হাজার করে টাকা জামানত দেন। আর নারীদের ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ হাজার করে টাকা জামানত আদায় করে বিএমডিএ। এই জামানতের টাকা বিএমডিএ অফিসে কমপক্ষে ১৪ বছর ধরে জমা আছে। সেই সময় তাদের মতো প্রত্যেক অপারেটর মিলে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা জামানত হিসেবে জমা দেন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এবারে তাদের নতুন করে আর নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে তাদের জামানতের টাকা পাবার জন্য আবেদন করে আজও ফেরৎ পাননি তারা।
এব্যাপারে তানোর বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বে) জামিলুর রহমান বলেন, বাদ পড়া অপারেটররা জামানত ফেরৎ নেয়ার বিষয়ে দরখাস্ত করেছেন। সেইমতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে হেড অফিসে পাঠানো হবে। অফিস নির্দেশ মতে জামানত দেয়া হবে বলে জানান তিনি।