ঢাকা ১১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ট্রেন বন্ধে দেশজুড়ে স্টেশনগুলোতে যাত্রী ভোগান্তি চরমে

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৩:০৫:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ফলে বন্ধ রয়েছে সারাদেশের ট্রেন চলাচল। এতে কমলাপুরসহ সারাদেশের ট্রেন স্টেশনগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন শত শত যাত্রী। স্টেশনে যাত্রী বিক্ষোভের পাশাপাশি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও রেলওয়ের পক্ষ থেকে টিকিটকাটা যাত্রীদের জন্য বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। তবে এটি ট্রেনযাত্রার মতো স্বস্তিদায়ক নয় বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা।

ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকেই ভোগান্তি সয়ে সড়কপথে গন্তব্যে ছুটছেন। এছাড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে রেলস্টেশনে যাত্রীদের এমন ভোগান্তি দেখা গেছে। স্টেশনগুলোতে অসংখ্য যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তারা জানান, তারা কেউই ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়ে জানতেন না। শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে কাউন্টারে এসে পড়েছেন ভোগান্তিতে।
যাত্রী ভোগান্তি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে নির্ঘুম রাত কাটালেন যাত্রীরা

সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন। এর মধ্যে যে সব যাত্রী কর্মবিরতির খবর না জেনে স্টেশনে এসেছেন তারা পড়েন দুর্ভোগে। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন রেল স্টেশনেই। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এবং পুরাতন স্টেশন থাকা যাত্রীরা এই দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন।

রেলওয়ের তথ্যমতে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসসহ একাধিক আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন নির্ধারিত শিডিউল ছিলো। কিন্তু রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন।

চট্টগ্রাম নতুন রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের কোনো যাত্রীকে খুব একটা দেখা যায়নি। হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী এসেছেন, যারা এই কর্মবিরতির খবর আগে থেকে জানতেন না।

স্টেশনে আসা জাকির হোসেন নিরব নামে এক যাত্রী জানান, তিনি আগে থেকে এই ধর্মঘটের খবর জানতেন না, ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার জন্য রাতে স্টেশনে এসেছেন। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় মহাদুর্ভোগে পড়েছেন। স্টেশনেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন তিনি।

পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে বেশকয়েকজন লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের দেখা গেছে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে। চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর যেতে সকাল ৬টায় পুরাতন স্টেশনে এসেছিলেন আবু জাফর নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, স্টেশনে এসে জানলাম ট্রেন চলাচল বন্ধ। আগে থেকে এই কর্মবিরতির খবর জানা ছিলো না। তাই স্টেশনে অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে টয়লেট ও মুখ ধোয়া নিয়ে চরম কষ্টে আছি।

মোবারক হোসেন নামে আরেক যাত্রী এ সময় বলেন, চাঁদপুর যাওয়ার জন্য ভোরে স্টেশনে এসেছি। কিন্তু শীতের সকালে কষ্ট করে স্টেশনে এসে জানতে পারলাম কোনো ট্রেন চলাচল করছে না। ফলে স্টেশনেই সময় কাটাচ্ছি। শীত ও প্রাকৃতিক ডাকে চরম দুর্ভোগে আছি।

সাদিয়া জাহান নামের এক নারী যাত্রী বলেন, কক্সবাজার যাওয়ার জন্য আমরা ট্রেনের টিকিট নিয়েছি। অগ্রীম হোটেল বুকিং দেয়া আছে। এখন ট্রেন না চলায় ঝামেলায় পড়েছি। রেল কর্তৃপক্ষ টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বললেও হোটেল বুকিংসহ আনুষাঙ্গিক খরচের টাকা কি ফেরত পাব?

এদিকে রেলের সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেমে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশের ঘোষণা করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার আহ্বানও জানাচ্ছেন স্টেশনের দায়িত্বশীলরা।

খুলনা

হঠাৎ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় খুলনার যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে। নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে না পেরে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।

সকাল সাড়ে ৯টায় খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য যাত্রী টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করেছেন। কেউ কেউ ট্রেন কখন চালু হবে তা জানতে চাইছেন। আবার অনেকে ট্রেন না চলায় টিকিটের টাকা ফেরত নিচ্ছেন।

যাত্রীরা জানান, সকালে রেলস্টেশনে এসে তারা জানতে পারেন যে ট্রেন চলবে না। টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্ধারিত গন্তব্যে তারা যেতে পারছেন না। এর ফলে তাদেরকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এখন বাসে তাদেরকে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে হবে।

টাকা ফেরত নেওয়ার পর সিরাজুল আলম নামে এক যাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবারের তিন সদস্যকে নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু ট্রেন না চলায় ফিরে যাচ্ছি। এখন সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে যাব বলে চিন্তা করছি।

সিলেট

রানিং স্টাফদের আন্দোলনের কারণে সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও আটকা পড়েছেন ট্রেন যাত্রীরা। রাত ১২টার পর সিলেট থেকে কোনো ট্রেন না থাকলেও ভোরবেলা কালনি ট্রেন থাকায় প্ল্যাটফর্মে এসে বিপাকে পড়েছেন ওই ট্রেনের যাত্রীরা। রেলওয়ে নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে করা টিকিট অনলাইনে রিফান্ড হবে এবং কাউন্টার থেকে করা টিকিট রিফান্ড করা হবে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার সজীব বলেন, আজ সিলেট থেকে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ ছিলো।

সিরাজগঞ্জ

সকাল ১০ টার দিকে সিরাজগঞ্জ বাজার রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজার রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেলের স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন যাত্রীরা। আবার কেউ কেউ বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

রেলস্টেশনে থাকা যাত্রীদের অভিযোগ, আজ ট্রেন বন্ধ থাকবে, তবুও অনলাইনে টিকিট বিক্রি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যদি ট্রেন বন্ধ থাকে তাহলে কেন টিকেট বিক্রি করা হলো। হঠাৎ করে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ায় অধিকাংশ যাত্রী জানতেন না সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।

স্টেশনে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, একদিন আগে সিরাজগঞ্জ রেল স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটেছিলাম। আজ ভোরে এসে শুনি ট্রেন ছাড়বে না। পরে টাকা ফেরত দিলো তারা। হঠাৎ করে এভাবে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছি আমরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক যাত্রী ট্রেনে গন্তব্যে যাওয়ার আশা নিয়ে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছেন। অনেকেই আবার বাতিল হওয়া ট্রেনের টিকিটের টাকা ফেরত নিচ্ছেন কাউন্টার থেকে। তবে স্টাফদের কর্মবিরতির বিষয়টি সম্পর্কে রেলওয়ে বিভাগ আগে থেকে জানায়নি, যা নিয়ে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া রেলে পণ্যপরিবহন বন্ধ থাকায় অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা।

এদিকে, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অবস্থান নিয়েছেন রানিং স্টাফরা। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

যাত্রী দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী মাস্টার সাকির জাহান জানান, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাজশাহী রেলস্টেশনে যাত্রীদের বিক্ষোভ-ভাঙচুর

সকালে নগরীর শিরোইল এলাকায় রেলস্টেশনে যাত্রীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এদিন সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত স্টেশনে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন গন্তব্যে গমনেচ্ছু যাত্রীরা। এরপর তারা টিকিটের টাকা ফেরত চেয়ে ভাঙচুর চালান। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা ট্রেনে টিকিট পরীক্ষকদের (টিটিই) একটি কক্ষের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। অন্য কক্ষগুলোর দরজা তালাবদ্ধ ছিল। যাত্রীরা স্টেশনে পেতে রাখা কিছু চেয়ারও ভাঙচুর করেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। সেনাসদস্যদের হস্তক্ষেপে টিকিটের টাকা ফেরত নিয়ে ফিরে যান যাত্রীরা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টহল দেন সেনাসদস্যরা।

এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার ময়েন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা টাকা ফেরত দিয়েছি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।

রেলওয়ে জিআরপি থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মেইলকে বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা আসেন এবং তারা টহল দেন। পরে তারা চলে গেছেন। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।

এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় টিকিট কাটা যাত্রীদের জন্য বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং এসব স্থান হতে ঢাকাতে এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতে পারবেন।

তবে এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন যাত্রীরা। যারা বেশি টাকা দিয়ে ট্রেনের এসে টিকিট কেটেছিলেন তাদের এখন যেতে হচ্ছে নন এসি বাসে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রী বাসে যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনেকে অভিযোগ করে বলছেন, টিকিট রিফান্ড চাইতে গেলে ৭৫ শতাংশ কেটে রাখার কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে।

ঢাকা মেইলের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. ইলিয়াস সরেজমিনে কমলাপুর রেলস্টেশন গিয়ে জানান, রুটভিত্তিক ট্রেন টিকিটের যাত্রীদের মাইক দিয়ে ডেকে বাসে তোলা হচ্ছে। বাস ভর্তি হলেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। একটি বাস ছেড়ে গেলে অন্য আরেকটি বাস যাত্রী নেওয়ার জন্য প্রবেশ করছে।

এ সময় দেখা যায়, ট্রেনের কর্মকর্তারা যে সব রুটে বাস ছেড়ে যাচ্ছে সেই বাসের নাম্বার এবং রুটের নাম লিখে রাখছেন।

বাসে জামালপুরে যাওয়ার জন্য রেল স্টেশনে এসেছেন শাহনাজ। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা সবসময় ট্রেনে যাতায়াত করি। বাড়িতে জরুরি কাজে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম। কমলাপুর আসার পর জানতে পারি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। পরে জানতে পেরেছি আমাদের যাতায়াতের জন্য বিকল্প হিসেবে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু কখন বাস ছাড়বে সেটা এখন জানতে পারি নাই। জরুরি কাজ থাকলেও সময়মতো যেতে পারব বলে মনে হচ্ছে না।

সিলেটে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন জয়দিপ রায় ও সুমা রায় দম্পতি। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা মেইলকে বলেন, কমলাপুর এসে দেখি ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ট্রেনের এসি টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। আমরা সবসময় ট্রেনেই যাতায়াত করে। এখানে আসার পর জানতে পারছি যে আমাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিলেটে যাওয়ার জন্য ৭২০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছি। এদিকে বাস ভাড়া পাঁচ শত টাকার মতো। এখন যাওয়া দিয়ে বিষয়। এখন এসি নন এসি কোনো বিষয় নয়। তারা বাসের ব্যবস্থা করে আমাদের প্রতি দয়া করেছে।

রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছেন মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। এই যাত্রী বলেন, এখানে এসে জানতে পেরেছি ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই রিফান্ডের জন্য গিয়েছিলাম। ওখান থেকে বলা হচ্ছে ৭৫ শতাংশ টাকা কেটে রাখা হবে। ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে এর দায় আমরা যাত্রীরা কেন নেব। তারা যাত্রীদের সার্ভিস দিতে পারছে না এর দায় তাদেরই নিতে হবে। এভাবে যাত্রীদের হারানি করার কোনো মানেই হয় না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ট্রেন বন্ধে দেশজুড়ে স্টেশনগুলোতে যাত্রী ভোগান্তি চরমে

আপডেট সময় : ০৩:০৫:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ফলে বন্ধ রয়েছে সারাদেশের ট্রেন চলাচল। এতে কমলাপুরসহ সারাদেশের ট্রেন স্টেশনগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন শত শত যাত্রী। স্টেশনে যাত্রী বিক্ষোভের পাশাপাশি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও রেলওয়ের পক্ষ থেকে টিকিটকাটা যাত্রীদের জন্য বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। তবে এটি ট্রেনযাত্রার মতো স্বস্তিদায়ক নয় বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা।

ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকেই ভোগান্তি সয়ে সড়কপথে গন্তব্যে ছুটছেন। এছাড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে রেলস্টেশনে যাত্রীদের এমন ভোগান্তি দেখা গেছে। স্টেশনগুলোতে অসংখ্য যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তারা জানান, তারা কেউই ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়ে জানতেন না। শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে কাউন্টারে এসে পড়েছেন ভোগান্তিতে।
যাত্রী ভোগান্তি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে নির্ঘুম রাত কাটালেন যাত্রীরা

সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন। এর মধ্যে যে সব যাত্রী কর্মবিরতির খবর না জেনে স্টেশনে এসেছেন তারা পড়েন দুর্ভোগে। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন রেল স্টেশনেই। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এবং পুরাতন স্টেশন থাকা যাত্রীরা এই দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন।

রেলওয়ের তথ্যমতে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসসহ একাধিক আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন নির্ধারিত শিডিউল ছিলো। কিন্তু রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন।

চট্টগ্রাম নতুন রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের কোনো যাত্রীকে খুব একটা দেখা যায়নি। হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী এসেছেন, যারা এই কর্মবিরতির খবর আগে থেকে জানতেন না।

স্টেশনে আসা জাকির হোসেন নিরব নামে এক যাত্রী জানান, তিনি আগে থেকে এই ধর্মঘটের খবর জানতেন না, ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার জন্য রাতে স্টেশনে এসেছেন। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় মহাদুর্ভোগে পড়েছেন। স্টেশনেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন তিনি।

পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে বেশকয়েকজন লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের দেখা গেছে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে। চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর যেতে সকাল ৬টায় পুরাতন স্টেশনে এসেছিলেন আবু জাফর নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, স্টেশনে এসে জানলাম ট্রেন চলাচল বন্ধ। আগে থেকে এই কর্মবিরতির খবর জানা ছিলো না। তাই স্টেশনে অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে টয়লেট ও মুখ ধোয়া নিয়ে চরম কষ্টে আছি।

মোবারক হোসেন নামে আরেক যাত্রী এ সময় বলেন, চাঁদপুর যাওয়ার জন্য ভোরে স্টেশনে এসেছি। কিন্তু শীতের সকালে কষ্ট করে স্টেশনে এসে জানতে পারলাম কোনো ট্রেন চলাচল করছে না। ফলে স্টেশনেই সময় কাটাচ্ছি। শীত ও প্রাকৃতিক ডাকে চরম দুর্ভোগে আছি।

সাদিয়া জাহান নামের এক নারী যাত্রী বলেন, কক্সবাজার যাওয়ার জন্য আমরা ট্রেনের টিকিট নিয়েছি। অগ্রীম হোটেল বুকিং দেয়া আছে। এখন ট্রেন না চলায় ঝামেলায় পড়েছি। রেল কর্তৃপক্ষ টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বললেও হোটেল বুকিংসহ আনুষাঙ্গিক খরচের টাকা কি ফেরত পাব?

এদিকে রেলের সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেমে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশের ঘোষণা করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার আহ্বানও জানাচ্ছেন স্টেশনের দায়িত্বশীলরা।

খুলনা

হঠাৎ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় খুলনার যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে। নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে না পেরে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।

সকাল সাড়ে ৯টায় খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য যাত্রী টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করেছেন। কেউ কেউ ট্রেন কখন চালু হবে তা জানতে চাইছেন। আবার অনেকে ট্রেন না চলায় টিকিটের টাকা ফেরত নিচ্ছেন।

যাত্রীরা জানান, সকালে রেলস্টেশনে এসে তারা জানতে পারেন যে ট্রেন চলবে না। টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্ধারিত গন্তব্যে তারা যেতে পারছেন না। এর ফলে তাদেরকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এখন বাসে তাদেরকে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে হবে।

টাকা ফেরত নেওয়ার পর সিরাজুল আলম নামে এক যাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবারের তিন সদস্যকে নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু ট্রেন না চলায় ফিরে যাচ্ছি। এখন সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে যাব বলে চিন্তা করছি।

সিলেট

রানিং স্টাফদের আন্দোলনের কারণে সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও আটকা পড়েছেন ট্রেন যাত্রীরা। রাত ১২টার পর সিলেট থেকে কোনো ট্রেন না থাকলেও ভোরবেলা কালনি ট্রেন থাকায় প্ল্যাটফর্মে এসে বিপাকে পড়েছেন ওই ট্রেনের যাত্রীরা। রেলওয়ে নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে করা টিকিট অনলাইনে রিফান্ড হবে এবং কাউন্টার থেকে করা টিকিট রিফান্ড করা হবে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার সজীব বলেন, আজ সিলেট থেকে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ ছিলো।

সিরাজগঞ্জ

সকাল ১০ টার দিকে সিরাজগঞ্জ বাজার রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজার রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেলের স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন যাত্রীরা। আবার কেউ কেউ বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

রেলস্টেশনে থাকা যাত্রীদের অভিযোগ, আজ ট্রেন বন্ধ থাকবে, তবুও অনলাইনে টিকিট বিক্রি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যদি ট্রেন বন্ধ থাকে তাহলে কেন টিকেট বিক্রি করা হলো। হঠাৎ করে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ায় অধিকাংশ যাত্রী জানতেন না সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।

স্টেশনে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, একদিন আগে সিরাজগঞ্জ রেল স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটেছিলাম। আজ ভোরে এসে শুনি ট্রেন ছাড়বে না। পরে টাকা ফেরত দিলো তারা। হঠাৎ করে এভাবে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছি আমরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক যাত্রী ট্রেনে গন্তব্যে যাওয়ার আশা নিয়ে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছেন। অনেকেই আবার বাতিল হওয়া ট্রেনের টিকিটের টাকা ফেরত নিচ্ছেন কাউন্টার থেকে। তবে স্টাফদের কর্মবিরতির বিষয়টি সম্পর্কে রেলওয়ে বিভাগ আগে থেকে জানায়নি, যা নিয়ে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া রেলে পণ্যপরিবহন বন্ধ থাকায় অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা।

এদিকে, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অবস্থান নিয়েছেন রানিং স্টাফরা। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

যাত্রী দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী মাস্টার সাকির জাহান জানান, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাজশাহী রেলস্টেশনে যাত্রীদের বিক্ষোভ-ভাঙচুর

সকালে নগরীর শিরোইল এলাকায় রেলস্টেশনে যাত্রীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এদিন সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত স্টেশনে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন গন্তব্যে গমনেচ্ছু যাত্রীরা। এরপর তারা টিকিটের টাকা ফেরত চেয়ে ভাঙচুর চালান। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা ট্রেনে টিকিট পরীক্ষকদের (টিটিই) একটি কক্ষের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। অন্য কক্ষগুলোর দরজা তালাবদ্ধ ছিল। যাত্রীরা স্টেশনে পেতে রাখা কিছু চেয়ারও ভাঙচুর করেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। সেনাসদস্যদের হস্তক্ষেপে টিকিটের টাকা ফেরত নিয়ে ফিরে যান যাত্রীরা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টহল দেন সেনাসদস্যরা।

এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার ময়েন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা টাকা ফেরত দিয়েছি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।

রেলওয়ে জিআরপি থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মেইলকে বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা আসেন এবং তারা টহল দেন। পরে তারা চলে গেছেন। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।

এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় টিকিট কাটা যাত্রীদের জন্য বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং এসব স্থান হতে ঢাকাতে এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতে পারবেন।

তবে এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন যাত্রীরা। যারা বেশি টাকা দিয়ে ট্রেনের এসে টিকিট কেটেছিলেন তাদের এখন যেতে হচ্ছে নন এসি বাসে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রী বাসে যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনেকে অভিযোগ করে বলছেন, টিকিট রিফান্ড চাইতে গেলে ৭৫ শতাংশ কেটে রাখার কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে।

ঢাকা মেইলের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. ইলিয়াস সরেজমিনে কমলাপুর রেলস্টেশন গিয়ে জানান, রুটভিত্তিক ট্রেন টিকিটের যাত্রীদের মাইক দিয়ে ডেকে বাসে তোলা হচ্ছে। বাস ভর্তি হলেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। একটি বাস ছেড়ে গেলে অন্য আরেকটি বাস যাত্রী নেওয়ার জন্য প্রবেশ করছে।

এ সময় দেখা যায়, ট্রেনের কর্মকর্তারা যে সব রুটে বাস ছেড়ে যাচ্ছে সেই বাসের নাম্বার এবং রুটের নাম লিখে রাখছেন।

বাসে জামালপুরে যাওয়ার জন্য রেল স্টেশনে এসেছেন শাহনাজ। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা সবসময় ট্রেনে যাতায়াত করি। বাড়িতে জরুরি কাজে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম। কমলাপুর আসার পর জানতে পারি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। পরে জানতে পেরেছি আমাদের যাতায়াতের জন্য বিকল্প হিসেবে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু কখন বাস ছাড়বে সেটা এখন জানতে পারি নাই। জরুরি কাজ থাকলেও সময়মতো যেতে পারব বলে মনে হচ্ছে না।

সিলেটে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন জয়দিপ রায় ও সুমা রায় দম্পতি। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা মেইলকে বলেন, কমলাপুর এসে দেখি ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ট্রেনের এসি টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। আমরা সবসময় ট্রেনেই যাতায়াত করে। এখানে আসার পর জানতে পারছি যে আমাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিলেটে যাওয়ার জন্য ৭২০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছি। এদিকে বাস ভাড়া পাঁচ শত টাকার মতো। এখন যাওয়া দিয়ে বিষয়। এখন এসি নন এসি কোনো বিষয় নয়। তারা বাসের ব্যবস্থা করে আমাদের প্রতি দয়া করেছে।

রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছেন মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। এই যাত্রী বলেন, এখানে এসে জানতে পেরেছি ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই রিফান্ডের জন্য গিয়েছিলাম। ওখান থেকে বলা হচ্ছে ৭৫ শতাংশ টাকা কেটে রাখা হবে। ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে এর দায় আমরা যাত্রীরা কেন নেব। তারা যাত্রীদের সার্ভিস দিতে পারছে না এর দায় তাদেরই নিতে হবে। এভাবে যাত্রীদের হারানি করার কোনো মানেই হয় না।