ঢাকা ০২:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের মুখ দেখলেন দুই মেয়ে

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৫:২৩:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে এক হৃদয়ছোঁয়া ঘটনার সাক্ষী হলো দুই দেশের মানুষ। সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের শেষবারের মতো মুখ দেখার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশে বসবাসরত দুই মেয়ে। বিজিবি ও বিএসএফের সম্মিলিত মানবিক উদ্যোগে সম্ভব হয়েছে এই ব্যতিক্রমী দৃশ্যের অবতারণা। স্থানীয়রা একে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করছেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা গ্রামের বাসিন্দা লোজিনা বেগম (৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে গত ২ জুন রাত ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি চার ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। তার দুই মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়পুর গ্রামে স্বামী-সন্তানসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত দুই মেয়ে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) কাছে আবেদন করেন, যেন তারা সীমান্তে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পারেন। বিষয়টি জানার পর ৬ বিজিবির জগন্নাথপুর বিওপি ও ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোংরা ক্যাম্প যৌথভাবে মানবিক সহমর্মিতা দেখিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ৯টা ১০মিনিট থেকে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সীমান্তের মেইন পিলার ৯৬/৮-এস এর শূন্যরেখায় দুই দেশের স্বজনদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় মরদেহ দেখার কার্যক্রম। দুই মেয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এই মুহূর্তে দুই দেশের সীমান্তবাসী ও উপস্থিতরা মুগ্ধ হন বিজিবি-বিএসএফের এই মানবিক সহযোগিতায়।

চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, সীমান্তে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি মানবিক বিষয়েও বিজিবি সর্বদা আন্তরিক। এ ধরনের কার্যক্রম পারস্পরিক আস্থা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি বিজিবি মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্তে বসবাসরত জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন মানবিক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখা হবে। সীমান্ত অপরাধ রোধ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এটি এক মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের মুখ দেখলেন দুই মেয়ে

আপডেট সময় : ০৫:২৩:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে এক হৃদয়ছোঁয়া ঘটনার সাক্ষী হলো দুই দেশের মানুষ। সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের শেষবারের মতো মুখ দেখার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশে বসবাসরত দুই মেয়ে। বিজিবি ও বিএসএফের সম্মিলিত মানবিক উদ্যোগে সম্ভব হয়েছে এই ব্যতিক্রমী দৃশ্যের অবতারণা। স্থানীয়রা একে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করছেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা গ্রামের বাসিন্দা লোজিনা বেগম (৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে গত ২ জুন রাত ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি চার ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। তার দুই মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়পুর গ্রামে স্বামী-সন্তানসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত দুই মেয়ে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) কাছে আবেদন করেন, যেন তারা সীমান্তে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পারেন। বিষয়টি জানার পর ৬ বিজিবির জগন্নাথপুর বিওপি ও ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোংরা ক্যাম্প যৌথভাবে মানবিক সহমর্মিতা দেখিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ৯টা ১০মিনিট থেকে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সীমান্তের মেইন পিলার ৯৬/৮-এস এর শূন্যরেখায় দুই দেশের স্বজনদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় মরদেহ দেখার কার্যক্রম। দুই মেয়ে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এই মুহূর্তে দুই দেশের সীমান্তবাসী ও উপস্থিতরা মুগ্ধ হন বিজিবি-বিএসএফের এই মানবিক সহযোগিতায়।

চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, সীমান্তে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি মানবিক বিষয়েও বিজিবি সর্বদা আন্তরিক। এ ধরনের কার্যক্রম পারস্পরিক আস্থা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি বিজিবি মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্তে বসবাসরত জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন মানবিক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখা হবে। সীমান্ত অপরাধ রোধ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এটি এক মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেও আশা করা হচ্ছে।