ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনের কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বহীন বললেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৮:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩ ৯৫ বার পড়া হয়েছে

স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের তিনদিনের সামরিক মহড়ার নিন্দা করেছেন দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। তিনি বেইজিংয়ের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেন।
চীন মূলত এই মহড়া চালিয়েছে সাইয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে সাই ইং-ওয়েনের সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়ায়। তবে সোমবার গভীর রাতে দেয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাই বলেন, তাইওয়ান ও এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য চীন এই ইস্যুটিকে ব্যবহার করে সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এই অঞ্চলের একটি প্রধান দেশ হিসেবে এটি চীনের দায়িত্বশীল কোনো মনোভাবের প্রকাশ নয়।

চীনের পিপলস রিপাবলিক আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড একইদিনে সোমবার তাইওয়ান ভূখণ্ডে হামলার অনুকরণে চালানো মহড়াটির সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। পিএলএর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং তারা যেকোনো সময় যুদ্ধ করতে পারবে। তাইওয়ানের বিষয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ চূর্ণ করে দিতে সক্ষম তাদের সেনারা।

তবে চীনের পক্ষ থেকে মহড়া সমাপ্তির কথা বলা হলেও তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনের নৌবাহিনীর প্রায় ৮টি জাহাজ মঙ্গলবারও তাইওয়ানের জলসীমার কাছে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। চীনের পক্ষ থেকে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া এ তথ্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

এদিকে ‘জয়েন্ট সোর্ড’ শিরোনামের চীনের তিন দিনের ওই মহড়ার উদ্দেশ্য তাইওয়ানকে ঘেরাও করার অনুশীলন আয়ত্ত করা। রবিবার চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি জানিয়েছে, অনুশীলনগুলো তাইওয়ান দ্বীপ এবং আশপাশের জলসীমার মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিচালিত হয়েছে। সোমবারের মহড়ায় চীনের ফুজিয়ান প্রদেশ থেকে গোলাবর্ষণের অনুশীলনও অন্তর্ভুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রদেশটি তাইওয়ানের মাতসু দ্বীপের দক্ষিণে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

চীন সাইয়ের জাতীয়তাবাদী ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি এবং এর নেতাদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ১৯২৭-৪৯ সাল পর্যন্ত চীনা গৃহযুদ্ধের পর থেকে তাইওয়ান চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে পৃথকভাবে শাসিত হচ্ছে। তাই বেইজিং দ্বীপটিকে তার এলাকা বলে দাবি করে। এ পর্যন্ত তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়া দেশের সংখ্যা মাত্র ১৩।

যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে তারা কয়েক দশক ধরে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে দ্বীপের প্রতিরক্ষাকে সমর্থন করে যাচ্ছে।দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল জানিয়েছে, তাইওয়ান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। তারা সাইয়ের সফরকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয় বলে বেইজিংকে সতর্ক করেছে। সূত্র : আল জাজিরা

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চীনের কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বহীন বললেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় : ০৯:৪৮:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের তিনদিনের সামরিক মহড়ার নিন্দা করেছেন দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। তিনি বেইজিংয়ের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেন।
চীন মূলত এই মহড়া চালিয়েছে সাইয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে সাই ইং-ওয়েনের সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়ায়। তবে সোমবার গভীর রাতে দেয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাই বলেন, তাইওয়ান ও এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য চীন এই ইস্যুটিকে ব্যবহার করে সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এই অঞ্চলের একটি প্রধান দেশ হিসেবে এটি চীনের দায়িত্বশীল কোনো মনোভাবের প্রকাশ নয়।

চীনের পিপলস রিপাবলিক আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড একইদিনে সোমবার তাইওয়ান ভূখণ্ডে হামলার অনুকরণে চালানো মহড়াটির সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। পিএলএর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং তারা যেকোনো সময় যুদ্ধ করতে পারবে। তাইওয়ানের বিষয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ চূর্ণ করে দিতে সক্ষম তাদের সেনারা।

তবে চীনের পক্ষ থেকে মহড়া সমাপ্তির কথা বলা হলেও তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনের নৌবাহিনীর প্রায় ৮টি জাহাজ মঙ্গলবারও তাইওয়ানের জলসীমার কাছে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। চীনের পক্ষ থেকে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া এ তথ্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

এদিকে ‘জয়েন্ট সোর্ড’ শিরোনামের চীনের তিন দিনের ওই মহড়ার উদ্দেশ্য তাইওয়ানকে ঘেরাও করার অনুশীলন আয়ত্ত করা। রবিবার চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি জানিয়েছে, অনুশীলনগুলো তাইওয়ান দ্বীপ এবং আশপাশের জলসীমার মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিচালিত হয়েছে। সোমবারের মহড়ায় চীনের ফুজিয়ান প্রদেশ থেকে গোলাবর্ষণের অনুশীলনও অন্তর্ভুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রদেশটি তাইওয়ানের মাতসু দ্বীপের দক্ষিণে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

চীন সাইয়ের জাতীয়তাবাদী ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি এবং এর নেতাদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ১৯২৭-৪৯ সাল পর্যন্ত চীনা গৃহযুদ্ধের পর থেকে তাইওয়ান চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে পৃথকভাবে শাসিত হচ্ছে। তাই বেইজিং দ্বীপটিকে তার এলাকা বলে দাবি করে। এ পর্যন্ত তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়া দেশের সংখ্যা মাত্র ১৩।

যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে তারা কয়েক দশক ধরে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে দ্বীপের প্রতিরক্ষাকে সমর্থন করে যাচ্ছে।দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল জানিয়েছে, তাইওয়ান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। তারা সাইয়ের সফরকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয় বলে বেইজিংকে সতর্ক করেছে। সূত্র : আল জাজিরা