ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট সময় : ১১:০৪:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৬ বার পড়া হয়েছে

ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের প্রায় সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনের পর এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ও আলাতুলী ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে অকাল বন্যা।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০হাজার মানুষ। গবাদি পশু নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় দেড় হাজার একর কলাইয়ের খেতসহ শত শত একর সবজি খেত। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার মহানন্দা ও পূণর্ভবা নদীতেও বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় পদ্মা তীরবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচে থাকলেও নিম্নাঞ্চল হওয়ায় ডুবে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও আলাতুলী ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকার শত শত বাড়িঘর। মানুষ বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার বাড়িঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন নিরাপদ জায়গায়।

এছাড়াও জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের নিম্নাঅঞ্চলেও দেখা দিয়েছে বন্যা। স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন তারা।

গবাদি পশু নিয়ে তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। বন্যায় বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি, আমবাগান ও বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তারা সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন ও ওয়ার্ড সদস্য বেনজির আহমেদ জানান, বর্তমানে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে দেড় হাজার একর কলাইয়ের খেত।

এ এলাকায় ফসল বলতে কলাই এবং ইরি ধান। কলাইয়ের খেত ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ ছাড়া এক মাস আগে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা অন্যত্র বাড়িঘর সরিয়ে নিলেও এখন তারা বন্যার কবলে পড়ে অসহায় দিনযাপন করছেন। দ্রুত উপদ্রুত এলাকার মানুষজনকে সহায়তা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার মানুষজন।

নারায়ণপুর ইউনিয়নের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্লাস বন্ধ থাকা নারায়ণপুর দারুল হোদা আলিম মাদাসার সুপারিনটেনডেন্ট শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে মাদরাসার ক্লাসরুমগুলোয় পানি ঢুকেছে। সেজন্য রোববার থেকে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, বন্যার্তদের ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিধিদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বন্যা উপদ্রুত এলাকায় দ্রুত সরকারি ত্রাণসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ

আপডেট সময় : ১১:০৪:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের প্রায় সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনের পর এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ও আলাতুলী ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে অকাল বন্যা।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০হাজার মানুষ। গবাদি পশু নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় দেড় হাজার একর কলাইয়ের খেতসহ শত শত একর সবজি খেত। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার মহানন্দা ও পূণর্ভবা নদীতেও বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় পদ্মা তীরবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচে থাকলেও নিম্নাঞ্চল হওয়ায় ডুবে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও আলাতুলী ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকার শত শত বাড়িঘর। মানুষ বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার বাড়িঘর ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন নিরাপদ জায়গায়।

এছাড়াও জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের নিম্নাঅঞ্চলেও দেখা দিয়েছে বন্যা। স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন তারা।

গবাদি পশু নিয়ে তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। বন্যায় বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি, আমবাগান ও বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তারা সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন ও ওয়ার্ড সদস্য বেনজির আহমেদ জানান, বর্তমানে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে দেড় হাজার একর কলাইয়ের খেত।

এ এলাকায় ফসল বলতে কলাই এবং ইরি ধান। কলাইয়ের খেত ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ ছাড়া এক মাস আগে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা অন্যত্র বাড়িঘর সরিয়ে নিলেও এখন তারা বন্যার কবলে পড়ে অসহায় দিনযাপন করছেন। দ্রুত উপদ্রুত এলাকার মানুষজনকে সহায়তা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার মানুষজন।

নারায়ণপুর ইউনিয়নের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্লাস বন্ধ থাকা নারায়ণপুর দারুল হোদা আলিম মাদাসার সুপারিনটেনডেন্ট শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে মাদরাসার ক্লাসরুমগুলোয় পানি ঢুকেছে। সেজন্য রোববার থেকে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, বন্যার্তদের ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিধিদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বন্যা উপদ্রুত এলাকায় দ্রুত সরকারি ত্রাণসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।