গোদাগাড়ীতে ভিজিএফের ২.৬ টন চাল জব্দ, ২ জন আটক

- আপডেট সময় : ০৫:৫৯:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ ৪১ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুস্থ ও গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল পাচারের সময় ২ হাজার ৬৩২ কেজি (প্রায় ২.৬ টন) চাল জব্দ করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় পাচারকালে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে আরও বেশ কয়েকজনকে।
আটক কৃতরা হলেন, মাইনুল ইসলাম চয়ন (৩০) ও মোকতাদির (২৬)। আটক চয়ন গোদাগাড়ী উপজেলার উচড়াকান্দর এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে। মোকতাদির একই উপজেলার গোগ্রামহাট পাড়া এলাকার মৃত সেলিম রেজার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও বলেন, ‘বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল আটক অভিযান চলে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের কার্য সহকারী মোঃ আহসান হাবিব বাদী হয়ে আটক ওই দুই জনসহ অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামী করে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার দিবাগত রত্রী ১২ টা ৩০ মিনিটের সময় গোদাগাড়ী থানায় মামলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে গরিব ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যে গোগ্রাম ইউনিয়নের জন্য ২৪ টন চাল বরাদ্দ করা হয়। এই পরিমাণ চাল ২ হাজার ৩৮০ জন দুস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণের কথা ছিল। গতকাল কিছু বিতরণ করা হয় এবং আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিতরণ দেখানো হয়।
বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভ্যানে করে চাল পাচারের সময় এলাকাবাসী টের পেয়ে গোদাগাড়ীর ইউএনওকে ফোন করেন। তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২ হাজার ৬৩১ কেজি চাল জব্দ করেন।
ইউএনওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোগ্রাম ইউনিয়নের ধাতমা গ্রামের একটি সড়ক থেকে ২৯ বস্তা, ধাতমাখাড়ি ব্রিজের কাছ থেকে ১৭ বস্তা, গোগ্রাম হাটপাড়ার মোকতাদিরের বাড়ি থেকে ৮ বস্তা ও খাদ্য অধিদপ্তরের সিলমোহর মারা ৮৫টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। স্থানীয়রা জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান কারাগারে গেলে ইউপি সদস্য আসলাম আলীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ঈদ উপলক্ষে দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে বরাদ্দ করা বিশেষ ভিজিএফ চালের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। যাঁদের চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই সচ্ছল ও তার আস্থাভাজন স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। এই চক্রটি চাল তুলে পরিষদেই বিক্রি করে দিয়েছে। এদিকে চাল পাচারের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত ইউপির চেয়ারম্যান আসলাম আলীর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হলো না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এ কে এম মমিনুল হক বলেন, পাচার হওয়া চাল ক্রয়ের অভিযোগে দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা হয়েছে।