‘গণতন্ত্রের পোশাক পরে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার’: ফখরুল
- আপডেট সময় : ১০:৩০:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩ ৯৬ বার পড়া হয়েছে
গণতন্ত্রের পোশাক পরে সরকার ভেতরে ভেতরে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার একটি অবৈধ সরকারই নয়, তারা দখলদারি সরকারের ভূমিকা পালন করছে। এরা রাজতন্ত্র কায়েম করতে চায়।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক কাঠামো’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয়। মূলত তারা একটি অবৈধ সরকার। দুর্ভাগ্য হচ্ছে এরা অবৈধ দখলদার হিসেবে পুরো ভূমিকা রাখছে। তারা দেশকে যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে তার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। যে জাতি গণতন্ত্রকে ভালোবাসে সে জাতিকে একটি সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং ভিন্ন পথে পরিচালিত করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পিতভাবে শুধু নিজেদের ক্ষমতায় থাকার জন্য একদলীয় বাকশাল অতীতে যে লক্ষ্য ছিল সেটায় ব্যর্থ হয়ে নতুন আঙ্গিকে ছদ্মবেশ ধারণ করে গণতন্ত্রের পোশাক পরে ভেতরে ভেতরে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করেছে। এটা হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ধরনের আইন দিয়ে তারা ক্ষমতাকে আবার নিরঙ্কুশ করতে চায়। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ যেন রুখে দাঁড়াতে না পারে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে না পারে এবং নির্বাচনে তাদের কেউ যেন বাধা দিতে না পারে সেজন্য এই আইনগুলো করেছে। একইসঙ্গে অন্যান্য আইনগুলোকে দিয়ে নির্বাচনে তাদের প্রতিপক্ষকে দূরে রেখে পার হয়ে যেতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তার ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আজকে অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখতে হবে। এসব কালাকানুন আইন বাতিল করতে হবে। সবার আগে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন একটাই মত, এ সরকারকে সরাতে হবে। কারণ একে সরানোর কোনো বিকল্প নেই। বিচার বিভাগের বিচার পাওয়া এখন একটা ভাগ্যের ব্যাপার। অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈষম্য কমিয়ে সাম্যের একটি দেশ গড়তে একসঙ্গে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। কারণ এই দানব সরকার আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। একে ঘাড় থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে। এজন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় ও সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদের পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, শাজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিজন কান্তি সরকার, অ্যাডভোকেট সুকমল বড়ুয়া, ক্যাপ্টেন সৈয়দ সুজা উদ্দিন প্রমুখ।
আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, সদস্য সচিব নুরুল হক নুর প্রমুখ।