ঢাকা ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:১২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪ ১৪২ বার পড়া হয়েছে

কুষ্টিয়ায় আবারও বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। মিল মালিকদের দাবি ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়াতে হয়েছে চালের দাম। আম খুচরা বিক্রেতারা বলছে মিল গেট থেকে বেশি দামে কেনা লাগছে তাই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

খোজ নিয়ে জানাযায়, গত এক সপ্তাহে দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের মিল‌গেট থে‌কে প্রায় সব রকম চালের দাম কে‌জি প্রতি বে‌ড়ে‌ছে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত। এর প্রভাব প‌ড়ে‌ছে খুচরা বাজা‌রে।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকাম থেকে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে তাদের, তাই বেশি দামে বিক্রি না করে কোন উপায় নেই । আর চালকল মালিকরা বলছেন,প্রতিদিন বাড়ছে ধানের দাম। সে কারণে বাড়াতে হচ্ছে চালের দাম। তাই মিলগেটে কমপ‌ক্ষে ৩থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত চালের দাম বেড়েছে তবে সব চাইতে বেশি দাম বেড়েছে বাশমতি এবং মিনিকেট নামে পরিচিত সরু চালের দাম। তারা ধানের দাম বৃদ্ধির উপরেও নজরদারির দাবি তুলেছেন।

কুষ্টিয়া পৌর বাজার ঘুরে দেখা যায়,৬৪ টাকার মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। বাসম‌তি চাল বি‌ক্রি হ‌চ্ছে ৯০ টাকা কেজি । কয়েকদিন আগেও ৫৯ টাকায় বিক্রি হওয়া কাজললতা চাল এখন ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। মোটাদাগে বলতে গেলে ৫০ টাকা কেজির নিচে বাজারে এখন আর কোন চাল পাওয়া যাচ্ছে না।

পৌর বাজারের চাল ব‌্যবসায়ী তাইজাল হো‌সেন জানান,‘বেশি দামে মোকাম থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। সব চেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট এবং বাসমতি চালের। প্রতি ২৫ কে‌জি বস্তার বর্তমান বাজার মূল্য ২২৫০ টাকা। সর্বশেষ যা বিক্রয় করা হ‌য়ে‌ছে ২১০০ টাকা।

মিনিকেট চাল বিক্রয় হ‌চ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা বস্তা, সপ্তাহ আগেও যার মূল্য ছিল ১ হাজার ৬০০ টাকা।

কুষ্টিয়ার পৌরবাজারের খুচরা ব্যাবসায়ী নিশান আলী বলেন, এই সময় চালের দাম বাড়ানোর কোন যুক্তি নেই। তারপরেও মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যেভাবে কিনি তার থেকে কেজিতে ২টাকা লাভে চাল বিক্রি করি। তাছাড়া খুচরা বাজারে কোন সিন্ডিকেট থাকে না।

গেল ছাত্র আন্দোলনের আগের থেকেই চালের দাম বাড়াতে থাকে মিলাররা। কারফিউ এর উছিলায় আরেক ধাপ বাড়িয়েছেন তারা।

কালাচাদ স্টোরের স্বত্তাধিকারী কালাচাদ বলেন, মিল গেটে চালের দাম বাড়াতে কোন কারন লাগে না। তবে তাদের একটাই যুক্তি থাকে ধানের দাম বেড়েছে। এগুলো আসলে তাদের অধিক মুনাফা করার একটা কৌশল মাত্র। সঠিক ভাবে খাজানগরের মোকামে প্রশাসনের অভিযান চালালে চালের দাম কমে যাবে বলে দাবি এই ব্যাবসায়ীর।

চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি ওমর ফারুক জানান, সরু চালের জন্য প্রসিদ্ধ কুষ্টিয়ার মোকামে ধানের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এখন কৃষক এবং মিলমালিক কারো কাছেই ধান নেই ধান আছে তৃতীয় কিছু মৌসুমী মজুদদারদের কাছে। তারা ইচ্ছে মতো ধানের দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে চালের সরবারাহ ঠিক রাখতে আমরা বাধ্য হচ্ছি বেশি দামে ধান কিনতে।

ওমর ফারুক আরো যোগ করেন, প্রায় সবরকম চালই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ডিসেম্বর মাস থেকে ধানের দাম প্রতিনিয়তই বাড়ছে। এ বছর ধা‌নের বাম্পার ফলন হ‌লে‌ও ধান কিন্তু কৃষ‌কের কাছেও নেই মিলা‌রের কা‌ছেও নেই। অবৈধ মজুতদাররা সি‌ন্ডি‌কেট ক‌রে ধান মজুত ক‌রে রে‌খে‌ছে। তা‌দের ইচ্ছেমত দা‌মে বাজা‌রে বি‌ক্রি কর‌ছে। ধা‌নের দাম বে‌শি হ‌লে চা‌লের দাম বাড়া‌বে এটাই স্বাভা‌বিক মন্তব‌্য ক‌রেন এই ব‌্যবসায়ী নেতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কুষ্টিয়ায় চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা

আপডেট সময় : ০৪:১২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

কুষ্টিয়ায় আবারও বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। মিল মালিকদের দাবি ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়াতে হয়েছে চালের দাম। আম খুচরা বিক্রেতারা বলছে মিল গেট থেকে বেশি দামে কেনা লাগছে তাই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

খোজ নিয়ে জানাযায়, গত এক সপ্তাহে দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের মিল‌গেট থে‌কে প্রায় সব রকম চালের দাম কে‌জি প্রতি বে‌ড়ে‌ছে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত। এর প্রভাব প‌ড়ে‌ছে খুচরা বাজা‌রে।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকাম থেকে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে তাদের, তাই বেশি দামে বিক্রি না করে কোন উপায় নেই । আর চালকল মালিকরা বলছেন,প্রতিদিন বাড়ছে ধানের দাম। সে কারণে বাড়াতে হচ্ছে চালের দাম। তাই মিলগেটে কমপ‌ক্ষে ৩থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত চালের দাম বেড়েছে তবে সব চাইতে বেশি দাম বেড়েছে বাশমতি এবং মিনিকেট নামে পরিচিত সরু চালের দাম। তারা ধানের দাম বৃদ্ধির উপরেও নজরদারির দাবি তুলেছেন।

কুষ্টিয়া পৌর বাজার ঘুরে দেখা যায়,৬৪ টাকার মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। বাসম‌তি চাল বি‌ক্রি হ‌চ্ছে ৯০ টাকা কেজি । কয়েকদিন আগেও ৫৯ টাকায় বিক্রি হওয়া কাজললতা চাল এখন ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে। মোটাদাগে বলতে গেলে ৫০ টাকা কেজির নিচে বাজারে এখন আর কোন চাল পাওয়া যাচ্ছে না।

পৌর বাজারের চাল ব‌্যবসায়ী তাইজাল হো‌সেন জানান,‘বেশি দামে মোকাম থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। সব চেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট এবং বাসমতি চালের। প্রতি ২৫ কে‌জি বস্তার বর্তমান বাজার মূল্য ২২৫০ টাকা। সর্বশেষ যা বিক্রয় করা হ‌য়ে‌ছে ২১০০ টাকা।

মিনিকেট চাল বিক্রয় হ‌চ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা বস্তা, সপ্তাহ আগেও যার মূল্য ছিল ১ হাজার ৬০০ টাকা।

কুষ্টিয়ার পৌরবাজারের খুচরা ব্যাবসায়ী নিশান আলী বলেন, এই সময় চালের দাম বাড়ানোর কোন যুক্তি নেই। তারপরেও মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যেভাবে কিনি তার থেকে কেজিতে ২টাকা লাভে চাল বিক্রি করি। তাছাড়া খুচরা বাজারে কোন সিন্ডিকেট থাকে না।

গেল ছাত্র আন্দোলনের আগের থেকেই চালের দাম বাড়াতে থাকে মিলাররা। কারফিউ এর উছিলায় আরেক ধাপ বাড়িয়েছেন তারা।

কালাচাদ স্টোরের স্বত্তাধিকারী কালাচাদ বলেন, মিল গেটে চালের দাম বাড়াতে কোন কারন লাগে না। তবে তাদের একটাই যুক্তি থাকে ধানের দাম বেড়েছে। এগুলো আসলে তাদের অধিক মুনাফা করার একটা কৌশল মাত্র। সঠিক ভাবে খাজানগরের মোকামে প্রশাসনের অভিযান চালালে চালের দাম কমে যাবে বলে দাবি এই ব্যাবসায়ীর।

চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি ওমর ফারুক জানান, সরু চালের জন্য প্রসিদ্ধ কুষ্টিয়ার মোকামে ধানের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এখন কৃষক এবং মিলমালিক কারো কাছেই ধান নেই ধান আছে তৃতীয় কিছু মৌসুমী মজুদদারদের কাছে। তারা ইচ্ছে মতো ধানের দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে চালের সরবারাহ ঠিক রাখতে আমরা বাধ্য হচ্ছি বেশি দামে ধান কিনতে।

ওমর ফারুক আরো যোগ করেন, প্রায় সবরকম চালই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ডিসেম্বর মাস থেকে ধানের দাম প্রতিনিয়তই বাড়ছে। এ বছর ধা‌নের বাম্পার ফলন হ‌লে‌ও ধান কিন্তু কৃষ‌কের কাছেও নেই মিলা‌রের কা‌ছেও নেই। অবৈধ মজুতদাররা সি‌ন্ডি‌কেট ক‌রে ধান মজুত ক‌রে রে‌খে‌ছে। তা‌দের ইচ্ছেমত দা‌মে বাজা‌রে বি‌ক্রি কর‌ছে। ধা‌নের দাম বে‌শি হ‌লে চা‌লের দাম বাড়া‌বে এটাই স্বাভা‌বিক মন্তব‌্য ক‌রেন এই ব‌্যবসায়ী নেতা।