একুশে ফেব্রুয়ারিতে জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই, থাকবে ৩ স্তরের নিরাপত্তা
- আপডেট সময় : ১০:৩৯:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ৮৫ বার পড়া হয়েছে
একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার কোনো সুনির্দিষ্ট থ্রেট নেই, তারপরও ডিএমপির পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিন ভাগে ভাগ করে শহীদ মিনার কেন্দ্রীক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুরো এলাকাকে সিটি টিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) খন্দকার গোলাম ফারুক।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারী) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশে ফেব্রুয়ারিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানের জন্য গ্রহণ করা নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে যারা পালিয়ে গেছে তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারলেও পালিয়ে যাওয়ায় সহযোগীতা করা জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমাদের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা যথেষ্ট ভালো আছে। তবে জঙ্গি হামলার কোনো সম্ভাবনা ও সুনির্দিষ্ট থ্রেট নেই।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বসানো হবে চেকপোস্ট। চালানো হবে তল্লাশি। এছাড়াও পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করবেন। যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে কমিশনার বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সুদৃঢ়, নিশ্ছিদ্র ও সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শহীদ মিনার ও তার আশপাশে স্থাপন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে। সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। শহীদ মিনার এলাকায় প্রবেশের পূর্বে প্রত্যেক দর্শনার্থীকে একাধিক আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা, এরপর থেকে সন্ধ্যা ৬টা ও সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ধাপে মোট তিন ধাপে এ এলাকায় পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। প্রবেশপথ ও বেরিয়ে যাওয়ার পথ ছাড়া সবগুলো সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হবে।
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১২টার পর পরই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রথমে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুই ভাগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। প্রথম ভাগে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও বিদেশি কূটনৈতিকরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিদায় নেওয়ার পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এই দুই ভাগে শহীদ মিনারের নিরাপত্তাসহ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ভিভিআইপি শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে বের হয়ে গেলে উল্টো পথে শহীদ মিনারে না আসার জন্য সকলকে অনুরোধ করছি। আসার পথে পর্যাপ্ত ব্যরিকেড থাকবে। ব্যরিকেডের ভেতরে কোনো প্রকার হকার বা ভ্রাম্যমান দোকান বসতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, পলাশী প্রান্তর থেকে দোয়েল চত্বর ও বইমেলার পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শহীদ মিনারের প্রত্যেকটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো থাকবে। যারাই আসবেন আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে তল্লাশির মাধ্যমে প্রবেশ করতে হবে। সঙ্গে ব্যাগ জাতীয় কোনো জিনিস নিয়ে আসবেন না।
অন্যবারের মতো এবারও একইভাবে প্রবেশ করানো হবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ভিভিআইপিরা দোয়েল চত্বর হয়ে প্রবেশ করবেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা জিমনেশিয়াম মাঠে গাড়ি রেখে বাকি পথ হেঁটে আসবেন। আর সাধারণরা পলাশী মোড় হয়ে জগন্নাথ হল হয়ে প্রবেশ করবেন ও দোয়েল চত্বর-চানখাঁরপুল হয়ে বের হয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, করোনার পরে পুরোপুরি উন্মুক্ত পরিবেশে প্রথমবারের মতো একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আসবেন, ঢাকার নাগরিকরা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আসবেন। নিরাপত্তা পরিকল্পনায় ঢাবির সহযোগিতায় সার্বিক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছে।