ঢাকা ০১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের অনন্য অবদান রয়েছে : শরীফ উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে হঠাৎ করেই চালের বাজার অস্থির, কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৮ টাকা দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ এনবিআর চেয়ারম্যানের পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা সন্দেহে ভারতে ৪৪৪ জনকে আটক সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ বাস্তবায়নে ডিএমপির সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ ফখরুলের

ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়কে ঝরল ৩২৪ প্রাণ

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:১৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩ ১২৪ বার পড়া হয়েছে

ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৫ দিনে (২৩ জুন থেকে ৭ জুলাই) দেশে ৩০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৩১ জন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং এতে নিহত হয়েছেন ১০৬ জন। যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। তারা ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা ও ঈদ উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছে, কিন্তু যে সকল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেনি, শুধু আহত হয়েছে, সেসব দুর্ঘটনার অধিকাংশই গণমাধ্যমে আসেনি। ফলে দুর্ঘটনায় আহতের প্রকৃত চিত্র জানা যায়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৪৭ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।

সংগঠনটি জানায়, এসব দুর্ঘটনায় নিহতদের ১০৬ জন (৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ) মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী, বাসযাত্রী ১০ জন (৩ দশমিক ০৮ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ২৪ জন (৭ দশমিক ৪০ শতাংশ), প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২৫ জন (৭ দশমিক ৭১ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৭০ জন (২১ দশমিক ৬০ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র) ১১ জন (৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ৯ জন (২ দশমিক ৭৭ শতাংশ) নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া ঈদযাত্রার ১৫ দিনে ১৪টি নৌদুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত, ২৬ জন আহত এবং ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। আর এ সময় ২৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে জানানো হয়, এবারের ঈদুল আজহায় রাজধানী ঢাকা থেকে ৮৫ থেকে ৯০ লাখ মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছেন এবং প্রায় ৩ কোটি মানুষ আন্তঃজেলায় যাতায়াত করেছেন। পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ বঙ্গগামী ঈদযাত্রা স্বস্তির ছিল এবং পাটুরিয়া-দৌলদিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ ছিল না। বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৩৫ কিলোমিটার যানজট হয়েছে। উত্তরবঙ্গগামী সড়কের টাঙ্গাইল, গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় যানজট হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনেক পরিবহন মালিক যাত্রীদের নিকট হতে বেশি ভাড়া আদায় করেছেন। এই ভাড়া নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণে সরকার তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ট্রেনে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। একই সঙ্গে টিকিট নিয়ে অসন্তোষ ছিল। নৌপথে অনেকটা স্বস্তি থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ছিল। ঈদের পরে ছুটি কম থাকলেও মানুষ এক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে কর্মস্থলে ফিরেছে। ফিরতি যাত্রায় শেষ দিকে দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে এবং কয়েকটি জায়গায় যানজট হয়েছে। কারণ ফিরতি যাত্রায় তেমন তদারক ছিল না।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে এখন নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সড়ক পরিবহন খাতের স্বার্থবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য গৃহীত সরকারি উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অতীব জরুরি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়কে ঝরল ৩২৪ প্রাণ

আপডেট সময় : ০৪:১৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৫ দিনে (২৩ জুন থেকে ৭ জুলাই) দেশে ৩০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৩১ জন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং এতে নিহত হয়েছেন ১০৬ জন। যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। তারা ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা ও ঈদ উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছে, কিন্তু যে সকল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেনি, শুধু আহত হয়েছে, সেসব দুর্ঘটনার অধিকাংশই গণমাধ্যমে আসেনি। ফলে দুর্ঘটনায় আহতের প্রকৃত চিত্র জানা যায়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৪৭ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।

সংগঠনটি জানায়, এসব দুর্ঘটনায় নিহতদের ১০৬ জন (৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ) মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী, বাসযাত্রী ১০ জন (৩ দশমিক ০৮ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ২৪ জন (৭ দশমিক ৪০ শতাংশ), প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২৫ জন (৭ দশমিক ৭১ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৭০ জন (২১ দশমিক ৬০ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র) ১১ জন (৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ৯ জন (২ দশমিক ৭৭ শতাংশ) নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া ঈদযাত্রার ১৫ দিনে ১৪টি নৌদুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত, ২৬ জন আহত এবং ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। আর এ সময় ২৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে জানানো হয়, এবারের ঈদুল আজহায় রাজধানী ঢাকা থেকে ৮৫ থেকে ৯০ লাখ মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছেন এবং প্রায় ৩ কোটি মানুষ আন্তঃজেলায় যাতায়াত করেছেন। পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ বঙ্গগামী ঈদযাত্রা স্বস্তির ছিল এবং পাটুরিয়া-দৌলদিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ ছিল না। বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৩৫ কিলোমিটার যানজট হয়েছে। উত্তরবঙ্গগামী সড়কের টাঙ্গাইল, গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় যানজট হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনেক পরিবহন মালিক যাত্রীদের নিকট হতে বেশি ভাড়া আদায় করেছেন। এই ভাড়া নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণে সরকার তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ট্রেনে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। একই সঙ্গে টিকিট নিয়ে অসন্তোষ ছিল। নৌপথে অনেকটা স্বস্তি থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ছিল। ঈদের পরে ছুটি কম থাকলেও মানুষ এক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে কর্মস্থলে ফিরেছে। ফিরতি যাত্রায় শেষ দিকে দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে এবং কয়েকটি জায়গায় যানজট হয়েছে। কারণ ফিরতি যাত্রায় তেমন তদারক ছিল না।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে এখন নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সড়ক পরিবহন খাতের স্বার্থবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য গৃহীত সরকারি উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অতীব জরুরি।’